একইসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষা চ্যালেঞ্জিং। তবে এই দুই দেশের সঙ্গেই বাংলাদেশ সুসম্পর্ক রাখতে চায় বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।

মঙ্গলবার (১০ জানুয়ারি) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস নিয়ে আলোচনা অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। 

সোমবার (৯ জানুয়ারি) রাতে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জে যাত্রাবিরতি করেন চীনের নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিন গ্যাং। প্রায় ঘণ্টা খানেক ঢাকায় অবস্থান করা চীনা মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। সেই বৈঠকের আলোচনা প্রসঙ্গে জানতে ড. মোমেনের কাছে একইসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র-চীনের সঙ্গে সম্পর্ক রাখার বিষয়ে প্রশ্ন রাখেন সাংবাদিকরা।

জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এটা অনেক চ্যালেঞ্জিং। আমরা অন্য কারও ধানে মই দেই না। তাদের সমস্যা থাকতে পারে। এটা তাদের হেডেক। আমরা তাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখতে চাই। কী কারণে তাদের অসুবিধা, সেটা আমাদের হেডেক না। এটা তাদের হেডেক। আমরা সুসম্পর্ক রাখতে চাই এবং আমরা সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়; এ নীতিতে বিশ্বাস করি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারসাম্য নীতির কারণে বাংলাদেশের দিকে বিদেশি রাষ্ট্রগুলোর নজর বাড়ছে বলে মনে করেন ড. মোমেন। তিনি বলেন, এখানে ব্যবসা-বাণিজ্যের অনেক সুযোগ-সুবিধা আছে। কেউ এগুলো হাতছাড়া করতে চান না। সেজন্য আসছেন। আর আমরাও চাই, অধিক যোগাযোগ।

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে তিনি বলেন, তাদের (যুক্তরাষ্ট্র) সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক ভালো। সেই সম্পর্ককে আমরা আরও দৃঢ় করতে চাই।

চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার প্রসঙ্গে ড. মোমেন বলেন, উন্নয়ন সহযোগী চীন বাংলাদেশের উন্নয়নের মহাসড়কে সম্পৃক্ত থাকতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। বাংলাদেশ যেভাবে চলছে, এর উন্নয়ন অভাবনীয়। চীন এসবের সহযোগী হিসেবে কাজ করতে চায়। চীনের মন্ত্রী জানিয়েছেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে যোগান ব্যাহত হচ্ছে, আর্থিক লেনদেনে সমস্যা হচ্ছে ও নতুন নতুন পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য আমাদের একসঙ্গে কাজ করতে হবে।

তিনি বলেন, চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী দায়িত্ব দায়িত্ব নেওয়ার ১০ দিনের মধ্যে ঢাকা সফর করলেন। এটি আমাদের জন্য ভালো খবর।

রোহিঙ্গা ইস্যুতে আলোচনার বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, মিয়ানমারে কিছু সমস্যা হচ্ছে, সে কারণে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন দীর্ঘায়িত হচ্ছে। আমরা বলেছি, এই সংকট দীর্ঘায়িত হলে এই অঞ্চলে অস্থিতিশীলতা তৈরি হবে।

মোমেন বলেন, বাংলাদেশকে ৯৮ শতাংশ পণ্য শুল্কমুক্ত সুবিধা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিল চীন। কিন্তু এটির এখনও গেজেট না হওয়ার কারণে আমাদের ব্যবসায়ীরা এর সুবিধা পাচ্ছে না। এ বিষয়ে আলোচনার পরে চীনের মন্ত্রী জানিয়েছেন, এটি তিনি করবেন।

জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, নির্বাচন নিয়ে আপনারা বেশি বেশি আলাপ করেন। নির্বাচন এক বছর পরে হবে। এখনো অনেক দিন বাকি। এগুলো নিয়ে খামোখা আপনারা বেশি বেশি হৈ চৈ করেন। এখন নির্বাচন অনেক সুষ্ঠু হয়।

এনআই/কেএ