ফাইল ছবি

বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি হওয়া মুড়ি এবং সুগন্ধি চালে মাত্রার চেয়ে বেশি কীটনাশক পেয়েছে ইউরোপের দেশ সুইডেন। এরপর এসব পণ্য রপ্তানি করতে নতুন শর্ত জুড়ে দিয়েছে ইউরোপ।

সরকার নির্ধারিত ল্যাবে করাতে হবে কার্বেনডাজিম এবং ট্রাইসাইক্লাজল নামে দুটি রাসায়নিক পরীক্ষা। পরীক্ষায় দুটি কীটনাশক ‘মানমাত্রার’ বেশি না থাকলে ইউরোপের দেশগুলোতে রপ্তানি করা যাবে মুড়ি ও সুগন্ধি চাল।

এদিকে, সারা বছরের পাশাপাশি রমজানকে সামনে রেখে বাংলাদেশ থেকে ইউরোপসহ বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হয় প্রচুর মুড়ি। ওইসব দেশগুলোতে অবস্থান করা বাংলাদেশিদের ইফতারে পছন্দের তালিকায় রয়েছে মুড়ি। তবে কয়েক মাস আগে নতুন শর্তারোপ করার পর ইউরোপের দেশে মুড়ি এবং সুগন্ধি চাল রপ্তানি একপ্রকার বন্ধ রয়েছে। যদিও অস্ট্রেলিয়া, আমেরিকা কিংবা মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে এখনও রপ্তানি অব্যাহত আছে। তবে এসব দেশগুলোতে একই শর্তারোপ করার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

সংশ্লিষ্টরা জানান, অতীতে বাংলাদেশ থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পাঠানো বিভিন্ন কৃষিজ পণ্যে মানমাত্রার চেয়ে বেশি নানা রাসায়নিক উপাদান পাওয়া গেছে। এরপর এসব পণ্য আমদানি থেকে দেশগুলো বিরত থাকে। সবশেষ মুড়ি এবং সুগন্ধি চালে পাওয়া কীটনাশক নিয়ে সবাইকে ভাবতে হবে। অল্প সময়ে এবং সুলভ মূল্যে ল্যাবরেটরি টেস্ট করানোর ব্যবস্থা করতে হবে। দ্রুত টেস্ট করার জন্য র‌্যাপিড ডিটেকশন কীট মেথড অনুসরণ করা যায় কি না তাও ভেবে দেখতে হবে। রপ্তানিতে আবশ্যক এসব টেস্ট সরকার স্বীকৃত ল্যাবগুলোতে একটি নির্ধারিত মূল্যতালিকা ও কত সময়ের মধ্যে রিপোর্ট প্রদান করা যায় তা নির্ধারণ করে দিতে হবে। না হয় আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনামসহ দেশগুলো বাজার দখল করে নিতে পারে।

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরের উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ কেন্দ্রের প্যাথলজিস্ট সৈয়দ মুনিরুল হক ঢাকা পোস্টকে বলেন, ধান উৎপাদনের সময় ব্যবহার করা এসব কীটনাশক চাল এবং পরবর্তী সময়ে মুড়িতে থেকে যায়। সুইডেনের একটি ল্যাবে বাংলাদেশের মুড়িতে নির্ধারিত মাত্রার চেয়ে বেশি কার্বেনডাজিম এবং ট্রাইসাইক্লাজল পাওয়া গেছে। এরপর ইউরোপ রাসায়নিক টেস্ট দুটি করানোর পর পণ্য পাঠাতে বলেছেন। সম্প্রতি বৈজ্ঞানিক ল্যাবে পরীক্ষার পর ইউরোপে পাঠাতে একটি চালান অপেক্ষমাণ রয়েছে। সপ্তাহখানেকের মধ্যে চালানটি রপ্তানি করা যাবে বলে আশা করা যাচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে এই দুটি পরীক্ষা রাজধানীর সায়েন্স ল্যাবে করানো হয়। ল্যাবটির বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. আবু হাসান ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘এই দুটি নমুনা আমাদের ল্যাবে পরীক্ষা করানো হয়। এতে খরচ পড়ে প্রায় ২৩ হাজার টাকা এবং সময় লাগে ৭ কর্মদিবস।’

মিজানুর রহমান/এসএম