ছুটির দিনে শীতের প্রভাবে অন্যরকম এক রাজধানী
সকাল হয়েছে বেশ আগেই। আজও (শুক্রবার) সকাল থেকে কুয়াশার চাদরে আবৃত পুরো রাজধানী। দুই দিন পর গতকাল (বৃহস্পতিবার) কিছুটা রোদের দেখা মিলেছিল। আজ পৌষের ২২তম দিনেও রাজধানীতে শীত নামাচ্ছে কনকনে ঠান্ডা বাতাস। এমন কুয়াশা আর হাড় কাঁপানো শীতের দিনটি সাপ্তাহিক ছুটির হওয়ার অন্যরকম এক রাজধানীর দেখা মিলেছে।
রাজপথে অফিসগামী মানুষের ঢল নেই; গণপরিবহনের নেই যাত্রীর ভিড়। রাজধানীর সড়কগুলোতে সব ধরনের যানবাহনের পরিমাণ কমেছে। বাস-হেলপারদের হাঁকডাক নেই। শীতের সকালে রিকশা ও সিএনজি অটোরিকশার চালকরা যাত্রীর অপেক্ষায় মোড়ে মোড়ে দাঁড়ানো, কিন্তু কাঙ্ক্ষিত যাত্রীদের উপস্থিতি নেই। বেশিরভাগ দোকান এখনো খোলেনি। সব মিলিয়ে ছুটির দিনে কুয়াশার চাদর আর শীতের প্রভাবে অন্যরকম এক রাজধানী দেখা যাচ্ছে।
বিজ্ঞাপন
অনেকেই ধারণা, ঢাকায় তেমন শীত পড়ে না। এমন ধারণা উড়িয়ে এবার কুয়াশার চাদর মুড়ি দিয়ে ঢাকায় জেঁকে বসেছে তীব্র শীত।
সব মিলিয়ে জনজীবনে নেমে এসেছে স্থবিরতা। সকাল, সন্ধ্যা বা রাতে ঢাকাতেও শীতে জবুথবু মানুষজন। গরম কাপড়ে নিজেকে মুড়িয়ে তবেই বাইরে যেতে হচ্ছে সবাইকে। কিন্তু আজ ছুটির দিন হওয়ায় প্রয়োজন ছাড়া মানুষ বাইরে বের হয়নি।
শুক্রবার শীতের সকালে কথা হয় তেজগাঁওয়ের রিকশাচালক খলিলুর রহমানের সঙ্গে। তিনি বলেন, সকাল থেকে রাস্তায় তেমন মানুষ নেই, তাই ট্রিপও কম। ছুটির দিন হওয়ায় এখনো মানুষ যেমন বের হয়নি দোকানপাটও তেমন খোলেনি। কিন্তু আমরা বের হয়েছি পেটের তাগিদে। শীতের মধ্যে রিকশা চালাতে কষ্ট হয় অনেক। তবুও যাত্রীর আশায় বসে আছি। কিন্তু সকাল থেকেই সব ফাঁকা ফাঁকা।
সাভার থেকে গাবতলী, শ্যামলী, মহাখালী হয়ে নতুন বাজারের দিকে যাওয়া বৈশাখী পরিবহনের হেলপার রকি মিয়াও জানালেন একই কথা, ‘কুয়াশা আর অতিরিক্ত ঠান্ডার কারণে সকাল থেকে যাত্রী নেই। মানুষও দেখা যাচ্ছে না তেমন। ছুটির দিন হওয়ায় অফিসগামী যাত্রীর ভিড় নেই। ফলে অল্প যাত্রী নিয়েই গাড়ি চালাতে হচ্ছে।
ছুটির দিনেও শীত উপেক্ষা করে বের হওয়া হাবিবুর রহমান নামের একজন পথচারীর সঙ্গে কথা হয় মহাখালীর আমতলী মোড়ে। তিনি বলেন, ব্যক্তিগত কাজে যাব ঢাকার বাইরে, তাই গাবতলী যাওয়ার বাসের অপেক্ষা করছি। তীব্র শীত আর ছুটির দিন এক সঙ্গে হওয়ায় যাত্রী কম থাকায় সড়কে খুব বেশি গণপরিবহনও নামেনি। আসার পথে দেখলাম বেশিরভাগ দোকান এখনো বন্ধ।
আবহাওয়া অফিসের তথ্য মতে, আজকের পর কমে আসতে পারে কুয়াশা। তবে শীতের তীব্রতা আরও দুই এক দিন থাকতে পারে। গতকাল আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমান ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে জানিয়েছিলেন, উপমহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।
অন্যদিকে গতকাল মধ্যরাত থেকে আজ সকাল পর্যন্ত সারাদেশে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা থাকতে পারে এবং এটি দেশের কোথাও কোথাও দুপুর পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। পাশাপাশি রাজশাহী, পাবনা, দিনাজপুর, পঞ্চগড়, নীলফামারী, যশোর, চুয়াডাঙ্গা ও কুষ্টিয়া অঞ্চলগুলোর ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।
এছাড়া সারাদেশে রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে। দিন ও রাতের তাপমাত্রা পার্থক্য কমে যাওয়ার কারণে দেশের উত্তর, উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল এবং মধ্যাঞ্চলে মাঝারি থেকে তীব্র শীতের অনুভূতি থাকতে পারে।
এএসএস/ওএফ