দীর্ঘদিন ধরে মেয়াদোত্তীর্ণ পাসপোর্ট রি-ইস্যু করাতে জরিমানা নেওয়া হতো। বর্তমানে জরিমানা ছাড়াই রি-ইস্যু করা হচ্ছে পাসপোর্ট। মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি) ও ই-পাসপোর্ট উভয়ের ক্ষেত্রেই এই নির্দেশনা প্রযোজ্য।

আগে মেয়াদোত্তীর্ণ পাসপোর্ট রি-ইস্যু করতে নির্ধারিত পাসপোর্ট ফির পাশাপাশি মেয়াদোত্তীর্ণ প্রতি বছরের জন্য ৩৪৫ টাকা (১৫ শতাংশ ভ্যাটসহ) করে জরিমানা দিতে হতো। অর্থাৎ কারও পাসপোর্ট যদি ২০১৮ সালে মেয়াদোত্তীর্ণ হতো ২০২০ সালে তাকে পাসপোর্ট করতে ৬৯০ টাকা জরিমানা দিতে হতো। বর্তমানে এ ধরনের কোনো ফি প্রযোজ্য নয়।

সম্প্রতি বাংলাদেশ ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদফতরের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে এ তথ্য জানানো হয়। অধিদফতর সূত্রে আরও জানা গেছে, সম্প্রতি ১০ বছরের ই-পাসপোর্টের প্রবর্তন ঘটলেও শূন্য থেকে ১৭ বছর পর্যন্ত অপ্রাপ্তবয়স্ক ও ৬৫ বছরের বেশি বয়সী নাগরিকরা তা পাবেন না। তারা শুধুমাত্র পাঁচ বছর মেয়াদি ও ৪৮ পৃষ্ঠার পাসপোর্ট পাবেন।

মেয়াদোত্তীর্ণ পাসপোর্ট রি-ইস্যু করবেন যেভাবে
মেয়াদোত্তীর্ণ এমআরপি পাসপোর্ট জমা দিয়ে কেউ যদি ই-পাসপোর্ট নিতে চায়, তাকে স্বাভাবিক নিয়মে ই-পাসপোর্টের ওয়েবসাইটে গিয়ে আবেদন করতে হবে।

মেয়াদোত্তীর্ণ এমআরপি পাসপোর্ট জমা দিয়ে আবারো এমআরপি পাসপোর্ট রি-ইস্যু করাতে আবেদনকারীকে এক পৃষ্ঠার একটি ফরম পূরণ করতে হবে।

যদি নতুন পাসপোর্টে কোনো তথ্য পরিবর্তন করতে হয় তাহলে এই ফরমেই উল্লেখ করতে হবে। সেক্ষেত্রে ফরমে আগের তথ্য ও হালনাগাদ তথ্য (নতুন) দুটোই দিতে হবে। এ সময় তথ্য হালনাগাদের সপক্ষে সুনির্দিষ্ট প্রমাণপত্র জমা দিতে হবে। অধিদফতর এসব কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে পাসপোর্ট হালনাগাদ করবে।

পাসপোর্টে কারো বর্তমান ঠিকানা পরিবর্তন হলে স্থানীয় কাউন্সিলরের প্রত্যয়নপত্র অথবা ইউটিলিটি বিলের কপি, পেশা পরিবর্তন হলে অফিসের আইডি কার্ড বা ব্যবসায়িক ট্রেড লাইসেন্সের কপি জমা দিতে হবে। বৈবাহিক অবস্থা ‘বিবাহিত’ উল্লেখ করতে চাইলে নিকাহনামা জমা দিতে হবে। বৈবাহিক সম্পর্ক ছিন্ন হলে তালাকনামা কার্যকরের কপি, পুনরায় বিবাহিত হলে নিকাহনামার কপি জমা দিতে হবে।

অধিদফতর জানায়, পুরনো পাসপোর্টের নাম, বাবার নাম, মায়ের নাম ও জন্ম তারিখ পরিবর্তনের কোনো সুযোগ নেই। তবে নামের বানানের দুয়েকটি বর্ণ ভুল হলে সেটি সংশোধন করা যাবে। কেউ যদি স্থায়ী ঠিকানা পরিবর্তন করতে চায়, সেক্ষেত্রে তার পুলিশ ভেরিফিকেশন প্রয়োজন হবে।

পাসপোর্টের ফি: ই-পাসপোর্ট
পাঁচ বছর মেয়াদের ৪৮ পাতার ই-পাসপোর্ট ‘রেগুলার ডেলিভারি’ ক্যাটাগরিতে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে পেতে চার হাজার ২৫ টাকা, ‘এক্সপ্রেস ডেলিভারি’ সাত কার্যদিবসে পেতে ছয় হাজার ৩২৫ টাকা ও ‘সুপার এক্সপ্রেস ডেলিভারি’ দুই কার্যদিবসের মধ্যে পেতে আট হাজার ৬২৫ টাকা জমা দিতে হবে।

১০ বছর মেয়াদের ৪৮ পাতার ই-পাসপোর্ট ‘রেগুলার ডেলিভারি’ ক্যাটাগরিতে ১৫ কার্যদিবসে পেতে পাঁচ হাজার ৭৫০ টাকা, ‘এক্সপ্রেস ডেলিভারি’ সাত কার্যদিবসে পেতে আট হাজার ৫০ টাকা ও ‘সুপার এক্সপ্রেস ডেলিভারি’ দুই কার্যদিবসের মধ্যে পেতে ১০ হাজার ৩৫০ টাকা জমা দিতে হবে। 

পাঁচ বছর মেয়াদের ৬৪ পাতার ই-পাসপোর্ট ‘রেগুলার ডেলিভারি’ ক্যাটাগরিতে ১৫ কার্যদিবসে পেতে ছয় হাজার ৩২৫ টাকা, ‘এক্সপ্রেস ডেলিভারি’ সাত কার্যদিবসে পেতে আট হাজার ৬২৫ টাকা ও ‘সুপার এক্সপ্রেস ডেলিভারি’ দুই কার্যদিবসের মধ্যে পেতে ১২ হাজার ৭৫ টাকা জমা দিতে হবে। 

১০ বছর মেয়াদের ৬৪ পাতার ই-পাসপোর্ট ‘রেগুলার ডেলিভারি’ ক্যাটাগরিতে ১৫ কার্যদিবসে পেতে আট হাজার ৫০ টাকা, ‘এক্সপ্রেস ডেলিভারি’ সাত কার্যদিবসে পেতে ১০ হাজার ৩৫০ টাকা ও ‘সুপার এক্সপ্রেস ডেলিভারি’ দুই কার্যদিবসের মধ্যে পেতে ১৩ হাজার ৮০০ টাকা জমা দিতে হবে। 

এছাড়া ৪৮ পৃষ্ঠার পাঁচ বছর মেয়াদের নতুন অথবা রি-ইস্যু এমআরপি সাত দিনে পেতে ছয় হাজার ৯০০ টাকা ও ২১ দিনে পেতে তিন হাজার ৪৫০ টাকা দিতে হবে। এমআরপি ও ই-পাসপোর্ট উভয় ফির সঙ্গে ভ্যাট যুক্ত রয়েছে। অন্যদিকে অবসরপ্রাপ্ত সরকারি চাকরিজীবীরা রেগুলার ডেলিভারির জন্য আবেদন করলেও স্বয়ংক্রিয়ভাবে তারা এক্সপ্রেস ডেলিভারির সুবিধা পাবেন।

এমআরপি ফি
২১ দিনে ৪৮ পৃষ্ঠার পাঁচ বছর মেয়াদে এমআরপি নিতে ভ্যাটসহ তিন হাজার ৪৫০ ও সাত দিনে ৪৮ পৃষ্ঠার পাঁচ বছর মেয়াদে এমআরপি নিতে ভ্যাটসহ ছয় হাজার ৯০০ টাকা লাগবে।

এআর/ওএফ/এমএমজে