খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসবের নাম ‘খ্রিষ্টমাস’, বাংলায় একে ‘বড়দিন’ও বলে। যিশুখ্রিষ্টের জন্মোৎসবকে কেন্দ্র করে পালিত হয় এই উৎসব। ইহলোকে শান্তি নামুক- এ প্রার্থনায় চলছে যিশুখ্রিষ্টের জন্মউৎস।

বিশ্বের অধিকাংশ দেশেই প্রতিবছর বড়দিন পালিত হয় ২৫ ডিসেম্বর। তবে রাশিয়া, জর্জিয়া, মিশর, আর্মেনিয়া, ইউক্রেন ও সার্বিয়ার মতো কয়েকটি ইস্টার্ন ন্যাশানাল চার্চ বড়দিন পালন করে থাকে ৭ জানুয়ারি।

বড়দিন উপলক্ষে তেজগাঁওয়ে পবিত্র জপমালা রাণীর গির্জায় সকাল ৯টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত ঘুরে দেখা গেছে, গির্জার গেট থেকে শুরু করে সর্বত্র লাল সবুজ এলইডি লাইটে সাজানো হয়েছে। মূল গেটে নেওয়া হয়েছে ব্যাপক নিরাপত্তা। গির্জার প্রবেশকারী সবাইকে আর্চওয়ে গেটের মধ্য দিয়ে প্রবেশ করতে হয়েছে। এছাড়া গির্জার সার্বিক নিরাপত্তায় গেটে পুলিশ এবং র‌্যাব সদস্যরা কাজ করছেন।

এদিকে বড়দিনের প্রথম প্রার্থনা শুরু হয় সকাল সাতটায় এবং দ্বিতীয় প্রার্থনা অর্থাৎ শেষ প্রার্থনা শুরু হয় সকাল ৯টায়। প্রার্থনায় যোগ দিতে যিশু ভক্তরা শীত উপেক্ষা করে সকাল থেকে গির্জায় ভিড় জমিয়েছেন। গির্জার ভেতর থেকে শুরু করে বাইরে সব জায়গায় পরিপূর্ণ করে যিশুর ভক্তরা প্রার্থনায় মগ্ন হয়েছেন।

যিশুখ্রিষ্টের জন্ম উৎসবের প্রার্থনায় যোগ দিতে কোলের শিশু থেকে শুরু করে বুড়ো প্রত্যেকের সরব উপস্থিতি। প্রত্যেকের পোশাকে নতুনত্বের ছোঁয়া। প্রাণে আনন্দের উচ্ছ্বাস।

যিশুভক্ত জিলিয়ান গুডা ঢাকা পোস্টকে বলেন, আজকে আমরা যিশুখ্রিষ্টের জন্মদিন পালন করছি। একটু আগে যিশুখ্রিষ্টের জন্মযজ্ঞ হয়ে গেল। আমি একজন খ্রিষ্ট ধর্মের অনুসারী হিসেবে আপনাদের বলতে চাই, আপনারা শান্তি বজায় রাখেন।

তেজগাঁও পবিত্র জপমালা রাণীর গির্জার প্রধান যাজক ফাদার সুব্রত বনিফাস গমেজ ঢাকা পোস্টকে বলেন, প্রতিনিয়ত যিশুকে ধারণের চেষ্টা থাকে আমাদের। বিশ্ববাসী প্রতি আমার আহ্বান শান্তি ও সম্প্রীতিময় এক পৃথিবী গড়ে তুলতে সবাই যেন এগিয়ে আসে।

বাংলাদেশে খ্রিষ্ট সম্প্রদায়ের বাংলাদেশ প্রধান আর্চবিশপ বিজয় ডি’ক্রুজ বলেন, আজকে আমরা দিনের খ্রিষ্ট প্রার্থনা করলাম সকাল ৯টার সময়। তখন আমরা বেধি মঞ্চে গিয়েছি। আমরা নবজাতক শিশু যিশুখ্রিস্টের প্রতিকৃতিতে ধূপআরতি দিয়েছি। তারপর আমরা প্রার্থনা প্রবেশ করেছি এবং হৃদয় মন পরিবর্তন করেছি। ঈশ্বরের বাণী শুনেছি। উপদেশ বাণী রাখা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, যিশু আমাদের মুক্তিদাতা, শান্তিদাতা। তিনি বিশ্বের শান্তি, মুক্তি ও আনন্দ আর মিলন ঘটাতে পৃথিবীতে এসেছেন। কিন্তু এখন আমরা দেখছি ইউক্রেনসহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে অশান্তি মারামারি, এতে আমরা দুঃখ প্রকাশ করি। আমরা ঈশ্বরের ওপর নির্ভর করি। ঈশ্বরের পক্ষে কোনও কিছুই অসম্ভব নয়। আমরা প্রার্থনা জানাচ্ছি ঈশ্বরপুত্র যিশুখ্রিষ্ট জন্মগ্রহণ করেছেন এই পৃথিবীতে, এর মধ্য দিয়ে শান্তি নেমে আসুক। মানুষে মানুষে মিলন ঘটুক। মানুষ মুক্তি, আনন্দ ও স্বাধীনতা লাভ করুক।

এমএইচএন/এসএম