স্বামীর অত্যাচার থেকে বাঁচতে বিয়ের তিন মাসের মাথায় তালাক দিয়েছিলেন শারমিন নিঝুম শিলা (২০) নামের এক গৃহবধূ। কিন্তু তালাক দিয়েও শেষ রক্ষা হলো না তার। তালাক দেওয়ার সাত দিন পর শিলাদের বাড়িতে ঢুকে তাকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করেন তার স্বামী সাগর। 

পরে ২১ দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে সোমবার (১৯ ডিসেম্বর) রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিলার মৃত্যু হয়।

নিহত শিলার ভাই রবিউল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, তিন মাস আগে সাগরের সঙ্গে সম্পর্ক করে আমার বোনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই আমার বোনকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে সাগর। গত নভেম্বর মাসের শেষ দিকে আমার বোন শারীরিক নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে সাগরকে তালাক দেয়। 

তিনি বলেন, এতে সাগর ক্ষিপ্ত হয়ে আমাদের বাড়িতে এসে গত ২৯ নভেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে এসে আমার বোনকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে অবস্থার অবনতি হলে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।

তিনি আরও বলেন, গত ৩০ নভেম্বর থেকে ঢাকা মেডিকেলে শিলা চিকিৎসাধীন ছিল। গতকাল রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আমার বোন ২০৬ নম্বর ওয়ার্ডের ১২ নাম্বার বেডে মারা যায়।

রবিউল ইসলামের অভিযোগ, আমার বোনকে যে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ছিল তাতে বিষাক্ত কিছু মাখানো ছিল। চিকিৎসক শিলার ক্ষত স্থানের মাংস কেটে ফেলে দিয়েছিলেন এবং বলেছিলেন ওই ধারালো অস্ত্রে কোনো বিষাক্ত পদার্থ মাখানো ছিল। এ ঘটনায় গত ২ ডিসেম্বর আমার বড় ভাই কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। ঘটনার পর থেকে সাগর পলাতক রয়েছে। 

তিনি বলেন, শিলা ওর স্বামীকে তালাক দিয়ে অত্যাচারের হাত থেকে বাঁচতে চেয়েছিল। কিন্তু আমার বোনকে সে দুনিয়া থেকে বিদায় করে দিল। আমার বোনের হত্যার বিচার চাই। আমাদের বাসা ফরিদপুর জেলার সদর থানার চাঁদপুর গ্রামে। আমার বাবার নাম সালাম মল্লিক।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার (উপ-পরিদর্শক) এসআই শংকর বালা ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা জানতে পেরেছি চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিলা মারা গেছেন। গত ২ ডিসেম্বর নিহতের ভাই বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা (মামলা নং-৯) দায়ের করেন। ঘটনার পর থেকে সাগর পলাতক রয়েছে। আমরা তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালাচ্ছি। শিলা চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়ায় মামলাটি হত্যা মামলা হিসেবে রূপান্তরিত হবে। 

এসএএ/কেএ