হত্যা পরিকল্পিত, আত্মহত্যার নাটক সাজাচ্ছে পুলিশ : ফারদিনের বাবা
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ফারদিন নূর পরশকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার পর আত্মহত্যার নাটক সাজানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন তার বাবা কাজী নূর উদ্দিন।
বৃহস্পতিবার (১৫ ডিসেম্বর) মিন্টো রোডে ঢাকা মহানগর পুলিশের মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ অভিযোগ করেন তিনি।
বিজ্ঞাপন
কাজী নূর উদ্দিন বলেন, ছোটবেলা থেকেই আমার ছেলেরা অভাব-অনটনের মধ্য দিয়ে বড় হয়েছে। সব ধরনের পরিস্থিতির সঙ্গে চলতে পারা আমার ছেলে আত্মহত্যা করতে পারে না। ঘটনার দিন বুয়েটের উদ্দেশে বের হওয়ার আগে সে চুল কেটেছিল এবং শেভও করেছিল। আত্মহত্যার আগে কি কেউ চুল কাটে বা শেভ করে? আমি ফারদিনের লাশ দেখেছি, তার মাথায় আঘাতের চিহ্ন ছিল। পরিকল্পিত এ হত্যাকাণ্ডকে ভিন্ন খাতে নেওয়ার জন্য শুরু থেকে নানা মিথ্যা তথ্য ছড়ানো হয়েছে। বিভ্রান্ত করা হয়েছে। পরিকল্পিতভাবে হত্যার পর আত্মহত্যার নাটক সাজানো হচ্ছে।
এ সময় তিনি সাংবাদিকদের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে বলেন, সাংবাদিক ভাইদের আমি অনুরোধ করে বলছি, আপনারা আমার সঙ্গে সুলতানা কামাল ব্রিজে চলেন, আমি ব্রিজ থেকে লাফ দেব, সেখান থেকে পড়লে কতটা আঘাত লাগে আপনারা দেখবেন।
বুয়েট প্রশাসনের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে ফারদিনের বাবা বলেন, বুয়েটের ভিসি এবং প্রশাসন কি জানতেন, ফারদিন আত্মহত্যা করেছে, যে কারণে তিনি আমার পরিবারকে সান্ত্বনা পর্যন্ত দেননি? প্রশাসনের পক্ষ থেকে কেউ আমাদের সঙ্গে দেখাও করেননি। আমার ছেলে বুয়েটে ভর্তি না হলে এমন পরিণতি হতো না।
ডিবির তদন্ত নিয়ে নারাজি দেবেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এরপরও কি আর নারাজি দিতে হবে?
উল্লেখ্য, গতকাল পৃথক সংবাদ সম্মেলনে ডিবি ও র্যাবের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, ফারদিনকে কেউ হত্যা করেনি। তিনি নদীতে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।
গত ৪ নভেম্বর রাত থেকে নিখোঁজ হন বুয়েট ছাত্র ফারদিন নূর পরশ। এর তিনদিন পর ৭ নভেম্বর বিকেলে নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদী থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে নৌ-পুলিশ। মরদেহ ময়নাতদন্তের পর চিকিৎসকরা জানান, তার শরীরে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে, তাকে হত্যা করা হয়েছে।
মরদেহ উদ্ধারের দুদিন পর ১০ নভেম্বর ফারদিনের বান্ধবী ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির ছাত্রী আমাতুল্লাহ বুশরাসহ অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামি করে রামপুরা থানায় মামলা করেন ফারদিনের বাবা নূর উদ্দিন রানা।
এ ঘটনা দেশব্যাপী আলোচিত হয়। ঘটনার বিষয়ে র্যাব ও পুলিশের পক্ষ থেকে ভিন্ন ভিন্ন বক্তব্য আসতে দেখা যায়। আলোচনায় আসে মাদক কারবারিদের সঙ্গে ফারদিনের সম্পর্ক আর নারায়ণগঞ্জের চনপাড়া এলাকা। তখন র্যাব দাবি করে, ফারদিনকে চনপাড়ায় খুন করেছে মাদক কারবারিরা। অন্যদিকে ডিবি পুলিশ সেসময় দাবি করে চনপাড়ায় যাননি ফারদিন।
এমএসি/এসকেডি