দেশের বহুল প্রতীক্ষিত প্রথম এলিভেটেড মেট্রোরেল বাণিজ্যিকভাবে চলাচলের জন্য প্রস্তুত হয়েছে এবং ডিসেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহ নাগাদ এটি উত্তরা-আগারগাঁও অংশে চালু হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএএন সিদ্দিক জানান, ‘আমরা সব ধরনের নির্মাণ কাজ শেষ করেছি। এখন শেষ সময়ের প্রস্তুতি পুরোদমে চলছে। প্রধানমন্ত্রীর সুবিধাজনক সময় অনুযায়ী আমরা এই মাসের শেষ সপ্তাহের মধ্যে মেট্রোরেল পরিষেবা চালু করার আশা করছি।’

ম্যাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (এমআরটি) লাইন-৬ সম্পর্কে হালনাগাদ তথ্য সাংবাদিকদের অবহিত করতে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) এবং মেট্রোরেল প্রদর্শনী তথ্য কেন্দ্র (এমইআইসি) যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত প্রেস ট্যুর উপলক্ষে সোমবার (১২ ডিসেম্বর) এমইআইসি’তে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশে জাইকার প্রধান প্রতিনিধি ইচিগুচি তোমোহিদে। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে এমআরটি লাইন-৬ এর প্রকল্প পরিচালক মো. আফতাবউদ্দিন তালুকদার উপস্থিত ছিলেন।

সিদ্দিক বলেন, ট্রেনটি এখন পরীক্ষামূলকভাবে চলছে এবং বাণিজ্যিকভাবে চালু হওয়ার আগে আগামী ১৮ ডিসেম্বর থেকে এটি যাত্রীবিহীন চলাচল শুরু করবে।

তিনি আরো বলেন, ‘মোট ১২টি ট্রেন পরিচালনার জন্য প্রস্তুত আছে, তবে প্রাথমিকভাবে ছয় বগি সম্পন্ন ১০টি ট্রেন চলাচল করবে। বাকি দুটি ট্রেন নিরবচ্ছিন্ন মেট্রোরেল পরিষেবা নিশ্চিত করতে সার্বক্ষণিকভাবে প্রস্তুত থাকবে।

ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, প্রাথমিকভাবে ট্রেন সীমিত সংখ্যক যাত্রী নিয়ে একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য চলবে এবং দুটি ট্রেনের মধ্যে সময়ের ব্যবধান কিছুটা বেশি হবে, তবে মেট্রোরেল আগামী দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে পুরোপুরি আন্তর্জাতিকমান বজায় রেখে চলাচল শুরু করবে।

মতিঝিল পর্যন্ত ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে এবং ২০২৫ সালের জুনের মধ্যে কমলাপুর পর্যন্ত মেট্রো রেল পরিষেবা চালু করা হবে উল্লেখ করে সিদ্দিক বলেন, ট্রেন পূর্ণাঙ্গ গতিতে চলা শুরু করলে উত্তরা উত্তর স্টেশন থেকে একটি ট্রেন ২০ মিনিটের মধ্যে আগারগাঁও স্টেশনে পৌঁছবে এবং কমলাপুর স্টেশনে পৌঁছতে মাত্র ৪০ মিনিট সময় লাগবে।

অনুষ্ঠানে জাইকার ইচিগুচি তোমোহিদে বলেন, এ বছর উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত এমআরটি লাইন-৬ এর কার্যক্রম চালু করা বাংলাদেশ ও জাপানের সম্পর্কের সুবর্ণ জয়ন্তীর একটি বড় অর্জন।

তিনি আরও বলেন, মেট্রোরেল পরিষেবা রাজধানী শহরের বৃহত্তর পরিসরে যানজট ও পরিবেশ দূষণ কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে এবং পরিষেবাটি নারীদের জন্য নিরাপদ ভ্রমণ পরিবেশ দেবে।

পরে সাংবাদিকদের উত্তরা উত্তর স্টেশনে নিয়ে যাওয়া হয়। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা সেখানে মেট্রোরেলে চড়ার প্রক্রিয়া বাস্তবে দেখান এবং ব্রিফ করেন।

অনুষ্ঠানের শুরুতে মেট্রোরেল প্রকল্প, কীভাবে ট্রেনে চড়তে হয় এবং স্টেশন এলাকায় কীভাবে আচরণ করতে হয় তার উপর দুটি তথ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়।

জেডএস