৬২ রোহিঙ্গা দিয়ে পুনর্বাসন প্রক্রিয়া শুরু করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র
বাংলাদেশ থেকে প্রথম ধাপে ৬২ জন রোহিঙ্গা নেবে যুক্তরাষ্ট্র। ৮ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার) আনুষ্ঠানিকভাবে এ প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে। আর দেশটি বছরে ৩০০ থেকে ৮০০ রোহিঙ্গা নেবে বলেও জানিয়েছে।
মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের জনসংখ্যা, শরণার্থী ও অভিবাসন বিষয়ক সহকারী মন্ত্রী জুলিয়েটা ভ্যালস নয়েসের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
বিজ্ঞাপন
ড. মোমেন বলেন, আমি মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে জানতে চাইলাম, তোমরা কতসংখ্যক রোহিঙ্গা নেবে? জবাবে তিনি বললেন, ৬২ জনের তালিকা করা হয়েছে। প্রতিবছর ৩০০ থেকে ৮০০ রোহিঙ্গা নেওয়া হবে। তখন আমি বললাম, এই সংখ্যা কিছুই না। তখন তিনি বললেন, এটা শুরু।
যুক্তরাষ্ট্র রোহিঙ্গাদের নেওয়ার প্রক্রিয়া বিষয়ে মোমেন বলেন, দেশটি দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে রোহিঙ্গা নিচ্ছে। তারা নিজ দেশের মানুষকে দেখিয়ে বলবে, দেখো, আমরা বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে আশ্রয় দিয়েছি। কিন্তু কতসংখ্যক রোহিঙ্গা নিচ্ছে, সেটি তারা বলবে না। তারা নিজ দেশের জনগণকে বলবে, দেখো, আমরা রোহিঙ্গাদের মানবিক সাহায্য করেছি।
যুক্তরাষ্ট্র কিছু রোহিঙ্গাকে পুনর্বাসন করলেও মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবর্তন করাই একমাত্র সমাধান বলে মনে করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র এখন যাদের নিয়ে যাচ্ছে, তাতে উচ্ছ্বসিত হওয়ার কিছু নেই। ১২ লাখ রোহিঙ্গার মধ্যে মাত্র ৩০০ জন নেবে, এই সংখ্যা কিছুই নয়; বরং দুশ্চিন্তা আছে। কারণ, মিয়ানমার থেকে আরও ছয় লাখ রোহিঙ্গা আশার আশঙ্কা রয়েছে।
অন্য কোনো দেশ রোহিঙ্গা নেবে কি না জানতে চাইলে মোমেন বলেন, জাপান বলেছে তারা এটি নিয়ে কাজ করছে।
রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসনের বিষয়ে লিয়েটা বলেন, মিয়ানমার শাসকদের গণহত্যার কারণে পরিস্থিতি দীর্ঘায়িত হয়ে গেছে। সময় এসেছে অন্যান্য সমাধান এবং একটি সমন্বিত সমাধানের। রোহিঙ্গাদের জন্য একটি সমন্বিত সমাধানের বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপ করতে পেরে আমি আনন্দিত। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সমাধান হচ্ছে তারা যাতে নিজ দেশে ফেরত যেতে পারে, যেটা তারাও চায়।
তিনি বলেন, কিন্তু সেই যাওয়াটা হতে হবে নিরাপদে, স্বেচ্ছায় ও সম্মানজনকভাবে এবং তা হতে হবে টেকসই। এটা এমন সমাধান যা রোহিঙ্গা, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও যুক্তরাষ্ট্র সবাই চায়। যখন সেই সমাধান হচ্ছে না, তখন অন্য সমাধান প্রয়োজন। বিশেষ করে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ মানুষ, তাদের জন্য বাড়তি সমাধান দরকার।
যুক্তরাষ্ট্রের মন্ত্রী বলেন, সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ মানুষদের চিহ্নিত করার জন্য ইউএনএইচসিআরের সঙ্গে কাজ করতে পেরে এবং তাদের তৃতীয় দেশে স্থানান্তর চেষ্টা করতে পেরে আমরা আনন্দিত।
তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে শরণার্থীদের পুনর্বাসন বাড়ানো বাইডেন প্রশাসনের অগ্রাধিকার। অন্য সরকার ও অংশীদার রাষ্ট্র যাদের সঙ্গে আমরা আলোচনা করছি, এটা তাদেরও অগ্রাধিকার। দীর্ঘায়িত রোহিঙ্গা সংকটের সমন্বিত দৃষ্টিভঙ্গি উদ্বুদ্ধ করতে আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে কাজ করে যাব।
এনআই/এসএম