তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডে মৃত ব্যক্তি, বিদেশে থাকা অথবা অবসরে যাওয়া কর্মীদের নামেও বেতন-ভাতা হয়। শুধু তাই নয় মৃত ও বিদেশে থাকা ব্যক্তিদের জায়গায় যারা কাজ করতেন, তাদের থেকেও ঘুষ নিয়েছে তিতাসের ‍দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

গত (২৯ নভেম্বর) দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে দুদকের সহকারী পরিচালক রনজিৎ কুমার কর্মকারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়। 

মৃত ব্যক্তি, বিদেশে থাকা, অবসরে যাওয়া তিতাসের কর্মীদের নামে নিরাপত্তাপ্রহরী হিসেবে চাকরি করেছেন, এমন ৩৭ জনকে চিহ্নিত করেছে দুদক। যারা ৯০ হাজার থেকে তিন লাখ টাকা পর্যন্ত ঘুষ দিয়ে তিতাস গ্যাস কোম্পানিতে নিরাপত্তাপ্রহরী হিসেবে চাকরি পেয়েছেন। লুটপাট করা তিতাসের সেই কর্মকর্তা-কর্মচারীদের খোঁজে অভিযানে গিয়েও অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ঘটনা জানাজানি হলে তিতাস কর্তৃপক্ষ প্রায় ৩৭ জন নিরাপত্তাপ্রহরীকে ছাঁটাই করে আউটসোর্সিং প্রতিষ্ঠান প্যান্থার সিকিউরিটির সাথে সব ধরনের চুক্তি বাতিল করেছে বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে দুদকের সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ) মোহাম্মদ শফিউল্লাহ ঢাকা পোস্টকে বলেন, তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগসাজশ করে তিতাসের সাবেক নিরাপত্তাপ্রহরী, যারা মৃত অথবা অবসরে গিয়েছেন তাদের নামে কর্মচারী নিয়োগ দিয়ে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করার অভিযোগে অভিযান পরিচালনা করে দুদক টিম। অভিযান পরিচালনাকালে টিম তিতাস গ্যাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, কোম্পানি সচিব এবং মহাব্যবস্থাপকের (প্রশাসন) সাথে আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে নিয়োগ, বেতনসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা ও উপাত্ত সংগ্রহ করেছেন।

দুদকের একটি সূত্রে জানা যায়, তিতাস কর্তৃপক্ষ দুদক টিমকে জানিয়েছে পূর্ববর্তী আউটসোর্সিং প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তি বাতিল এবং অভিযুক্ত নিরাপত্তাপ্রহরীদের চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। এছাড়া পূর্বে নিয়োগপ্রাপ্ত নিরাপত্তাপ্রহরীদের ৩০০ জনের এনআইডি যাচাই করে নতুন আউটসোর্সিং প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে পুনঃনিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এর বিরুদ্ধে কেন এতদিন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি, দুর্নীতির সাথে কারা জড়িত এবং তাদের বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এ সব প্রশ্নের যথাযথ জবাব দিতে পারেনি তিতাস কর্তৃপক্ষ। বরং বিতর্কিত অনেক প্রশ্নের জবাবে তারা চুপ ছিল বলে জানা গেছে।

সূত্র আরও জানায়, তিতাস কর্তৃপক্ষ দুদক টিমকে জানিয়েছে বর্তমানে কর্মরত নিরাপত্তাপ্রহরীদের যাবতীয় তথ্য, বেতন বিল, অভ্যন্তরীণ তদন্ত প্রতিবেদন, নিয়োগ বিধি এবং নতুন আউটসোর্সিং প্রতিষ্ঠানের টেন্ডার ফাইলের অনুলিপি দুদককে সরবরাহ করবে। তবে প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ওই নথিপত্র দুদকের কাছে সরবরাহ করা হয়নি।

আরএম/এফকে