বাংলাদেশে মহামারি করোনাভাইরাস আক্রান্ত শনাক্ত হওয়ার এক বছর পূর্ণ হলো সোমবার (৮ মার্চ)। রোববার পর্যন্ত ভাইরাসটিতে বাংলাদেশে পাঁচ লাখ ৫০ হাজার ৩৩০ জন আক্রান্ত হয়েছেন। করোনায় মৃত্যু হয়েছে আট হাজার ৪৬২ জনের। পুরো বিশ্ব যখন করোনা মোকাবিলায় গলদঘর্ম, তখন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আক্রান্ত রোগীদের সেবা দিতে শুরু করেন চিকিৎসক-নার্সসহ স্বাস্থ্যকর্মীরা। মা-বাবা, স্ত্রী-সন্তান ছেড়ে দীর্ঘদিন হাসপাতালে থেকে তারা দিন-রাত করোনার রোগীদের সেবা দিতে শুরু করেন। সম্মুখসারির যোদ্ধা হিসেবে সেবা দিতে গিয়ে তাদের অনেকেই আক্রান্ত হয়েছেন, প্রাণও দিয়েছেন। 

সম্প্রতি বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) এক অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ঢাকা বিভাগের চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরা করোনায় বেশি আক্রান্ত হয়েছেন। রাজধানীতে সবচেয়ে বেশি ৮৩১ জন চিকিৎসক আক্রান্ত হয়েছেন। নার্স আক্রান্ত হয়েছেন ৭৯৩ জন এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মী ও স্টাফ আক্রান্ত হয়েছে ৪৬০ জন। গত ১২ ফেব্রুয়ারি বিএমএর পাঠানো তথ্যে জানানো হয়, করোনায় আক্রান্ত হয়ে সারাদেশে ১২৮ জন চিকিৎসক এবং তিনজন ডেন্টাল সার্জন মৃত্যুবরণ করেছেন।

করোনায় দেশে প্রথম চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছিল ১৫ এপ্রিল। ওই দিন মারা গিয়েছিলেন সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজের মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মঈন উদ্দীন আহমদ (৪৭)। ডা. মঈন উদ্দীন আহমেদ করোনায় আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা করতে গিয়েই সংক্রমিত হয়েছিলেন। ঢাকার একটি হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। তার মৃত্যুর খবরে চিকিৎসক সমাজসহ সব পেশাজীবী শ্রেণি ও সাধারণ মানুষের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে আসে।

চিকিৎসকদের মৃত্যুর তালিকায় যোগ হওয়া সবশেষ নামটি অধ্যাপক ডা. মাহমুদুর রহমান খন্দকার। গত ১২ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। ইমপালস হাসপাতালের অ্যানেসথেশিওলজি বিভাগের সিনিয়র কনসালট্যান্ট হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

অল্প সময়ের ব্যবধানে এভাবে এত চিকিৎসকের মৃত্যু দেশের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও ইউজিসির অধ্যাপক ডা. এ বি এম আবদুল্লাহ। তিনি বলেন, ‘করোনায় আমরা অনেক বিশেষজ্ঞ ও জ্যেষ্ঠ চিকিৎসককে হারিয়েছি। একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক তৈরি হতে অনেক সময় ও শ্রমের প্রয়োজন হয়। তারা দেশের সম্পদ। কষ্টের মধ্যেও গর্বের বিষয় হচ্ছে, জীবনের ঝুঁকি রয়েছে জেনেও সম্মুখসারির এই যোদ্ধারা পিছপা হননি, নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন।’

ক্ষতিপূরণ কত দূর?
করোনাবিরোধী লড়াইয়ে কেউ আক্রান্ত হলে বা মারা গেলে তাদের জন্য প্রণোদনা ও ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করেছে সরকার। কিন্তু এখন পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন হাতে গোনা মাত্র কয়েকজন। তবে ক্ষতিপূরণের বিষয়ে আশ্বাস দিয়ে যাচ্ছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, মহামারিকালে চিকিৎসাসেবা দিতে গিয়ে যেসব চিকিৎসক করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন, দ্রুত তাদের আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে। মারা যাওয়া সরকারি চিকিৎসকের তালিকা অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে, বিষয়টি চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। কিছুদিনের মধ্যে সরকার ঘোষিত অর্থ পেয়ে যাবেন তারা।

এ বিষয়ে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবু ইউসুফ ফকির ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘করোনার সময় চিকিৎসকরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চিকিৎসাসেবা দিয়েছেন। তাদের প্রতি অবশ্যই আমাদের সহানুভূতিশীল হওয়া উচিত। বিশেষ করে যেসব চিকিৎসক করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং প্রাণ হারিয়েছেন, তাদের অতিদ্রুতই প্রণোদনা ও ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।’ রাষ্ট্রের কাজে প্রাণ বিসর্জনে ক্ষতিপূরণ দুই কোটি টাকা হওয়া উচিত বলেও মন্তব্য করেন স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদফতরের অতিরিক্ত এ মহাপরিচালক।

জানতে চাইলে বিএমএ সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘এখানে ক্ষতিপূরণের কোনো বিষয় নয়, চিকিৎসকদের মৃত্যুর ক্ষতিপূরণ কোনোভাবেই দেওয়া সম্ভব নয়। আমরা সরকারি ও বেসরকারি চিকিৎসকদের প্রণোদনার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী ও স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। তারা এটা নিয়ে কাজ করছেন। আমাদেরও শহীদ চিকিৎসকদের নিয়ে চিন্তা-ভাবনা আছে। তাদের তো নামমাত্র কিছু দিলে হবে না। চিকিৎসকের সংখ্যা অনেক, তাই সরকার ও আমরা চেষ্টা করছি।’

প্রণোদনা প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘আমাদের প্রণোদনা কার্যক্রম চলছে। আমরা ইতোমধ্যেই অনেকটা প্রণোদনা দিয়েছি। তবে ক্ষতিপূরণ ও প্রণোদনা নিয়ে একটু জটিলতা তৈরি হয়েছে, তা হলো সবাই কিন্তু প্রণোদনা ও ক্ষতিপূরণ পাবে না। এক্ষেত্রে শুধুমাত্র সরকারি হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে কর্মরতরাই পাবেন। আর বেসরকারি হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসকদের আমরা দিচ্ছি না। এছাড়া সরকারি চাকরির যাদের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে, সেসব চিকিৎসক বা স্বাস্থ্যকর্মীকে প্রণোদনা ও ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে না। শুধুমাত্র করোনার সময়ে কর্মরত সরকারি চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরাই প্রণোদনা পাবেন। প্রণোদনা কার্যক্রম চলমান আছে, আমাদের পরিকল্পনা ও বিধিমালা অনুযায়ী সবাইকেই প্রণোদনা দেব।’

বিএমএ’র তথ্যমতে, দেশের বিভাগীয় শহরগুলোতেও চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরা করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। চট্টগ্রাম জেলা ও মহানগরীতে আক্রান্ত হয়েছেন ৪৯২ জন চিকিৎসক, নার্স আক্রান্ত হয়েছেন ৩১ জন। অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীসহ মোট ৯৮ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। সিলেট জেলা ও মহানগরীতে চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী আক্রান্তের সংখ্যা যথাক্রমে ৩৪৯, ৮৩ ও ১১৩ জন। রাজশাহী জেলা ও মহানগরীতে চিকিৎসক, নার্স ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মী আক্রান্ত হয়েছেন যথাক্রমে চার, দুই ও পাঁচজন। খুলনা জেলা ও মহানগরীতে চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী আক্রান্ত হয়েছেন যথাক্রমে ২৫, ৩৫ ও ৫২ জন। রংপুর জেলা ও মহানগরীতে চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী আক্রান্ত হয়েছেন যথাক্রমে ৩৫, ২৬ ও ২২ জন। ময়মনসিংহ শহরে ১২৩, ১৬৪ ও ১৪০ জন চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী করোনা আক্রান্ত হয়েছেন।

স্বাস্থ্যকর্মীদের সংক্রমণের প্রধান তিন কারণ
বিএমএ মহাসচিব মো. ইহতেশামুল হক চৌধুরী মনে করেন, ‘স্বাস্থ্যকর্মীদের সংক্রমণের প্রধান কারণ তিনটি। প্রথমত কে কে সংক্রমণমুক্ত, কে সম্ভাব্য করোনা রোগী এবং কে প্রকৃত রোগী— এটা বাছাই করার কোনো ব্যবস্থা হাসপাতালে নেই। দ্বিতীয়ত, শুরু থেকেই পিপিইর মান নিয়ে প্রশ্ন ছিল। আবার সবাই পিপিই পাননি। যখন পেলেন, তখন তাদের ব্যবহারের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়নি। তৃতীয়ত, অনেক ব্যক্তি করোনার লক্ষণের বিষয় চেপে গিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও একই ধরনের কথা বলেছে। তারা বলছে, সেবার একটি পর্যায়ে গিয়ে স্বাস্থ্যকর্মীরা জানতে পেরেছেন, কে রোগী আর কে রোগী নন। তারা অধিকতর ঝুঁকিপূর্ণ বিভাগগুলোতে কাজ করেন। তাদের দীর্ঘ সময় কাজ করতে হয়, অনেক কর্মী সংক্রমণ প্রতিরোধে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেন না (যেমন সঠিকভাবে পিপিই ব্যবহার করেন না বা অনেকের হাত ধোয়ার মতো স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার অভ্যাস নেই)। এছাড়া অনেকের প্রশিক্ষণেরও ঘাটতি আছে।

পিপিই বা মাস্ক নিয়ে অনেক কথা হয়েছে। স্বাস্থ্যকর্মীরা বিশেষ করে চিকিৎসকরা অভিযোগ করেছেন, করোনাভাইরাস প্রতিরোধ করতে পারে এমন পিপিই অনেক ক্ষেত্রে দেওয়া হয়নি। জীবাণুপ্রতিরোধী মাস্কও অনেকে ব্যবহার করতে পারেননি। অন্যদিকে বিশ্বসেরা মাস্কের নামে নকল মাস্ক সরবরাহের অভিযোগ উঠেছে।

এ বিষয়ে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের জেমস পি গ্রান্ট স্কুল অব পাবলিক হেলথ ও নাগরিক সংগঠন হেলথ ওয়াচ একটি জরিপ করেছিল। ১৮ এপ্রিল প্রকাশ করা ওই জরিপের ফলাফলে দেখা যায়, ২৫ শতাংশ চিকিৎসক ও নার্স কোনো পিপিই পাননি। যারা পেয়েছিলেন, তারা পিপিইর মান নিয়ে সন্তুষ্ট ছিলেন না।

করোনায় সফলতার পাশাপাশি ব্যর্থতাও আছে
স্বাস্থ্য মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম বলেন, ‘করোনা মোকাবিলায় আমাদের অর্জনও আছে আবার কিছু ব্যর্থতাও আছে। তবে যতটুকু অর্জন বা সফলতা এসেছে তা স্বাস্থ্যকর্মী, প্রশাসন, গণমাধ্যমকর্মী সকলের সহযোগিতাতেই এসেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী সবাই কাজ করতে পেরেছি বলেই সহজে করোনা মোকাবিলা করতে পেরেছি। তিনি শুরু থেকেই আমাদের সকল কার্যক্রম তদারকি করছেন এবং পরামর্শ দিয়েছেন। তবে সব মিলিয়ে গত বছরটা আমাদের জন্য দুঃখের একটা বছর গেছে।’

আপনার দৃষ্টিতে করোনাকালীন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের ব্যর্থতাগুলো কী ছিলো— এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমাদের সবচেয়ে বড় ব্যর্থতা হলো করোনা আসার পর সেটাকে আমরা বুঝতে পারিনি। আমাদের চিকিৎসকরা তখন কোনো গাইডলাইন পাননি, তবে কীভাবে চিকিৎসা দিতে হবে এগুলো আমরা জানাতে পারিনি। এমনটা শুধু আমরাই না, সারা বিশ্বে হয়েছে। এছাড়া ওই সময়ে করোনাকে পুঁজি করে কিছু লোক অন্যায় করেছে এতে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু তারপরও যে আমরা ঘুরে দাঁড়াতে পেরেছি এটাই আমাদের বড় অর্জন।’

স্বাস্থ্য মহাপরিচালক বলেন, ‘করোনার সময়ে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী থেকে শুরু করে বিভিন্ন পেশার অনেক লোক মারা গেছে। ২০২০ সালে করোনায় আমরা এতসব গুণী মানুষকে হারিয়েছি, যা কখনো ভুলবার নয়। আমাদের অসংখ্য ডাক্তার-নার্সসহ স্বাস্থ্যকর্মী মারা গেছেন। করোনায় অনেক বিশেষজ্ঞ ডাক্তার মারা গেছেন, যা আমাদের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি। আমরা অত্যন্ত শোকাহত।’

তিনি আরও বলেন, ‘মৃত্যু তো সবারই হবে। সবাইকেই কোনো না কোনো সময় চলে যেতে হবে। কিন্তু করোনার কারণে একসঙ্গে এতগুলো মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন, এটা অত্যন্ত বেদনাদায়ক।’

করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণকারী চিকিৎসক মঈন উদ্দিন

স্মরণীয় হয়ে থাকবেন যেসব চিকিৎসক
করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রথম চিকিৎসক হিসেবে গত ১৫ এপ্রিল মারা যান সিলেটের এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক ডা. মঈন উদ্দীন। এরপর একে একে মৃত্যুবরণ করেন আরও ১২৪ জন চিকিৎসক। তারা হলেন— অধ্যাপক কর্নেল (অব.) ডা. মো. মনিরুজ্জামান, ডা. আনিসুর রহমান, মেজর (অব.) ডা. আবুল মোকারিম মো. মোহসিন উদ্দিন, ডা. মো. আজিজুর রহমান রাজু, ডা. এম এ মতিন, ডা. কাজী দিলরুবা, ডা. এস এম জাফর হোসাইন, ডা. আমিনা খান, ডা. আবদুর রহমান।

ডা. মো. মোশাররফ হোসেন, ডা. এ এফ এম সাইদুল ইসলাম, ডা. ওয়াহিদুজ্জামান আকন্দ বাবলু, ডা. মনজুর রশিদ চৌধুরী, ডা. এ এস এম এহসানুল করিম, অধ্যাপক ডা. মো. মহিউদ্দিন, ডা. কে এম ওয়াহিদুল হক, অধ্যাপক ডা. হাবিবুর রহমান, ডা. মুহিদুল হাসান, অধ্যাপক ডা. এন আই খান, অধ্যাপক ডা. এস এম এ গোলাম কিবরিয়া, ডা. এহসানুল কবির চৌধুরী, ডা. আবুল কাশেম খান, ডা. মির্জা নাজিম উদ্দিন, ডা. রাজিয়া সুলতানা।

ডা. সাখাওয়াত হোসেন, ডা. আবু বকর সিদ্দিক, ডা. আনোয়ার হোসেন, অধ্যাপক ডা. জালিলুর রহমান, ডা. তানজিলা রহমান, অধ্যাপক ডা. গাজী জহিরুল হাসান, ডা. মাহমুদ মনোয়ার, ডা. এ কে এম ফজলুল হক, ডা. আরিফ হাসান, ডা. মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ডা. সাদেকুর রহমান, ডা. তৌফিকুন নেছা, ডা. আ ন ম আবদুল হাই, অধ্যাপক ডা. এ কে এম মুজিবুর রহমান, ডা. মো. আশারুজ্জামান।

ডা. মো. শাহ আবদুল আহাদ, ডা. মো. নুরুল হক, ডা. মো. রফিকুল হায়দার লিটন, ডা. মো. এমদাদুল্লাহ খান, ডা. মো. শফিক আহমেদ, ডা. মুজিবুর রহমান রিপন, ডা. মো. বজলুর রহমান, ডা. সুনীল কুমার সরকার, ডা. ললিত কুমার দত্ত, বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. মো. আলী আজগর, ডা. উপেন্দ্র নাথ পাল, ডা. মো. ইউনুস আলী খান, ডা. মো. সমিরুল ইসলাম বাবু, ডা. এস এম সাইফুল ইসলাম, ডা. ফিরোজ বানু মিনু।

ডা. মোহাম্মদ হোসেন, ডা. মো. আসাদুজ্জামান, অধ্যাপক ডা. গোলাপ শংকর দে, অধ্যাপক ডা. গোলাম সারোয়ার, ডা. মো. রুহুল আমিন, অধ্যাপক ডা. এম এ ওয়াহাব, অধ্যাপক ডা. কে এম মুনতাকিম চৌধুরী, অধ্যাপক ডা. এ কে এম নুরুল আনোয়ার, ডা. মো. সাজ্জাদ হোসেন, ডা. সুলতান লতিফা জামান আইরিন, ডা. এস এম নুর উদ্দিন আবু আর বাকী রুমি, ডা. আবদুল হামিদ, ডা. কোহেল করিম (কুহু), অধ্যাপক ডা. আবুল হোসাইন খান চৌধুরী, বিগ্রেডিয়ার জেনারেল ডা. মো. শহীদুল্লাহ।

ডা. বদিউজ্জামান হীরা, অধ্যাপক ডা. টি আই এম আবদুল্লাহ আল ফারুক, ডা. নারগিস মুর্শিদ বানু, ডা. মো. নজরুল ইসলাম চৌধুরী (তাসলিম), ডা. এফ বি এম আবদুল লতিফ, ডা. মো. গোলাম মোস্তাফা, ডা. রেজোয়ানুল বারী শামীম, অধ্যাপক ডা. মো. মোস্তাফা হোসেন আনসারী, অধ্যাপক ডা. মো. আসাদুল হক খান, ডা. আফতাম উদ্দিন আহমেদ, ডা. মোহা. আবদুর রহমান, ডা. সৈয়দ আখতার হোসেন, ডা. এ বি এম সিদ্দিকুল ইসলাম, ডা. আবদুল্লাহ আল মাহমুদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. মো. আবদুল মতিন পাটোয়ারী।

ডা. বি এম ফারুক, ডা. শামসুন নাহার বেলা, অধ্যাপক ডা. এ এফ এম সিদ্দিকুর রহমান, অধ্যাপক ডা. মো. হুমায়ুন কবীর, অধ্যাপক ডা. সুরাইয়া রওশন আরা বেগম, ডা. নির্মলেন্দু চৌধুরী, ডা. মো. ওবায়দুল রহমান, ডা. মো. হেদায়েতুল ইসলাম, ডা. মুহাম্মদ হোসেন, অধ্যাপক ডা. মির্জা আজহারুল ইসলাম, ডা. কাউসার আহমদ মজুমদার, ডা. রমেশ চন্দ্র নাথ, ডা. মো. খলিল উদ্দিন, ডা. এ কে এম মাসুদুর রহমান, বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. সেলিম আহমেদ।

অধ্যাপক ডা. এম এ জলিল, ডা. সৈয়দ সাজ্জাদ কামাল হিরু, ডা. নাসির উদ্দিন আহমেদ, অধ্যাপক ডা. এ বি এম আলী আকবর বিশ্বাস, ডা. এ বি এম মাকসুদুল সালেহীন, ডা. মো. রেজাউর রহমান প্রধান, ডা. নুরুল ইসলাম, ডা. আ জ ম শফিউল আলম শাহ, ডা. বশরা সারওয়ার, ডা. মুজিবুর রহমান খান হীরা, ডা. এ কে এম শামসুল হক, ডা. আইরিন পারভীন, ডা. সাইদুল ইসলাম, ডা. রাশেদ সারওয়ার আলম রনি, অধ্যাপক ডা. মো. আবদুল কাদির খান।

ডা. গাজী শফিকুল আলম চৌধুরী, অধ্যাপক ডা. আবদুল, মুকিত সরকার, ডা. মো. হাসান মুরাদ, ডা. মো. নিজাম উদ্দিন ভূঁইয়া, ডা. মো. আনোয়ারুল করিম বাবুল, ডা. শেখ সায়েম, অধ্যাপক ডা. এ কে এম শামসুল হক, অধ্যাপক ডা. লুৎফর কাদের লেনিন, ডা. জীবেশ কুমার প্রামাণিক, ডা. মো. আবদুর রশিদ, ডা. মো. আনোয়ার হোসেন, ডা. কাজী মোহাম্মদ নাসের আহমেদ ও অধ্যাপক ডা. মাহমুদুর রহমান খন্দকার।

এছাড়া গত বছরের ১৪ জুন ডেন্টাল সার্জন ডা. নজরুল ইসলাম এবং ২৯ জুন ডা. সৈয়দ তমিজুল আহসান রতন এবং এ বছরের ৫ জানুয়ারি বীর মুক্তিযোদ্ধা কর্নেল (অবসর) ডা. আবুল কাশেম করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান।

করোনার সর্বশেষ পরিস্থিতি
রোববার (৭ মার্চ) পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত হয়ে দেশে মারা গেছেন আট হাজার ৪৬২ জন। মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে পাঁচ লাখ ৫০ হাজার ৩৩০ জনে। স্বাস্থ্য অধিদফতর জানিয়েছে, ভাইরাসটি থেকে এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন  পাঁচ লাখ তিন হাজার তিন জন।

গত বছরের ৮ মার্চ দেশে প্রথম তিনজনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়। এর ঠিক ১০ দিন পর দেশে ভাইরাসটিতে প্রথম মৃত্যু হয়। প্রথম মৃত্যুর তিন দিন পর করোনায় দ্বিতীয় মৃত্যু হয় ২১ মার্চ। এরপর ২৩, ২৪ ও ২৫ মার্চ টানা তিন দিনে তিনজনের মৃত্যু হলেও মার্চ মাসে ভাইরাসটিতে আর কোনো প্রাণহানি ঘটেনি।

১ এপ্রিল মৃত্যু হয় আরেকজনের। মৃত্যুশূন্য থাকে ২ ও ৩ এপ্রিল। ৪ এপ্রিল প্রথমবারের মতো দেশে দুজনের মৃত্যু হয়। এরপর থেকে আর এমন কোনো দিন যায়নি, যেদিন করোনায় দেশে কারও মৃত্যু হয়নি। তবে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত ১০ জনের নিচে থাকলেও, ১৬ এপ্রিল প্রথমবারের মতো করোনায় দুই সংখ্যার মৃত্যু দেখে বাংলাদেশ। ১৭ এপ্রিল ছাড়িয়ে যায় মানুষের কল্পনাকেও, ওইদিন দেশে করোনায় ১৫ জনের প্রাণহানি হয়।

এরপর ১০ মে ১৪ জনের মৃত্যুর পর ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত, মাঝের সময়ে করোনায় সিঙ্গেল ডিজিটের কোনো মৃত্যু হয়নি। ভাইরাসটিতে প্রথম ২০-এর অধিক মৃত্যু হয় ১৮ মে, সেদিন দেশে ২১ জনের প্রাণহানি ঘটে। ৩১ মে প্রথমবারের মতো দেশে ৪০ জনের মৃত্যু হয় এ ভাইরাসে। ৫০ ছাড়ায় ১৬ মে, সেদিন মৃত্যু হয় ৫৩ জনের। ৩০ জুন দেশে করোনায় একদিনে সর্বোচ্চ প্রাণহানি ঘটে, সেদিন এ ভাইরাস প্রাণ কেড়ে নেয় ৬৪ জনের।

মূলত ২৯ মে থেকে ৮ অক্টোবর পর্যন্ত করোনায় মৃত্যু একদিনের জন্যও ২০ জনের নিচে নামেনি। প্রায় চার মাস ১০ দিন পর ৯ অক্টোবর করোনায় মৃত্যু ২০-এর নিচে নেমে আসে, সেদিন দেশে ১৭ জনের মৃত্যু হয়। 

টিআই/এইচকে/এমএমজে