প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি

করোনা মহামারি ও ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক যে মন্দা দেখা দিয়েছে তার ধকল থেকে বাঁচতে সবাইকে সাশ্রয়ী হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। 

তিনি বলেন, সবাইকে একটু সাশ্রয়ী হতে হবে; সতর্ক ও মিতব্যয়ী হতে হবে। নিজেদের সঞ্চয় বাড়াতে হবে। তেল, গ্যাস, পানি ও বিদ্যুৎ ব্যবহার সীমিত করতে হবে। যেখানে খালি জমি আছে, যত বেশি পারবেন খাদ্য উৎপাদন করবেন।

আজ (সোমবার) সকালে দেশের ২৫ জেলায় ১০০ সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়েছিলেন। 

তিনি বলেন, ফল, তরকারি, যেটাই পারেন, উৎপাদন করবেন। হাঁস-মুরগি, ছাগল-ভেড়া পালন করবেন। নিজেদের উপার্জন নিজেদের করার চেষ্টা করতে হবে। যাতে বিশ্বব্যাপী মন্দার ধাক্কা বাংলাদেশে বেশি ক্ষতি করতে না পারে। আন্তর্জাতিকভাবে খাদ্যের যে অভাব দেখা দিচ্ছে, সেই অভাব থেকে বাংলাদেশের মানুষ যেন মুক্ত থাকে।

সরকারপ্রধান বলেন, আমাদের নির্বাচনী ইশতেহারে বাংলাদেশটাকে উন্নয়নের জন্য আমরা ২০২১ রূপকল্প ঘোষণা দিয়েছিলাম। লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থাকে উন্নত করা। একই সাথে শত সেতু নির্মাণ করা এবং তার উদ্বোধন করা আশ্চর্যের বিষয়। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলার ঘোষণা দিয়েছিলাম বলেই আজ এটা সম্ভব হয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রামে যেখানে মোবাইল ফোন ছিল না, মোবাইল নেটওয়ার্কও ছিল না, আমরা সেটাও তৈরি করে দিয়েছি। আমরা আজ একই সাথে সমস্ত বাংলাদেশে ভার্চুয়াল যোগাযোগ স্থাপন করে এই ১০০ সেতু উদ্বোধন করার সুযোগ পেয়েছি।

তিনি আরও বলেন, আমরা সিলেট ও চট্টগ্রামে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নির্মাণ করে দিয়েছি। এখন কক্সবাজার বিমানবন্দরের কাজ চলছে। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং সমগ্র বাংলাদেশে শতভাগ বিদ্যুৎ দিতে সক্ষম হয়েছি। করোনা ভাইরাস, তারপর ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ ও নিষেধাজ্ঞার কারণে শুধু আমাদের নয়, বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিয়েছে। এর মাঝেও সেতুগুলো নির্মাণ করে কাজ যে সম্পন্ন করেছে, সেজন্য যোগাযোগ ও সেতু মন্ত্রণালয় এবং সেতুর কাজের সাথে যারা সম্পৃক্ত ছিল তাদের ধন্যবাদ জানাই।  

আরও পড়ুন : চাকরির পেছনে না ছুটে খাদ্য উৎপাদনে যুক্ত হওয়ার আহ্বান

উদ্বোধন করা শত সেতুর একটি সেতু। এটির অবস্থান খাগড়াছড়িতে।  

ডেঙ্গুর বিষয়ে সতর্ক থাকার নিদের্শ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নিশ্চয়ই নিজেদের সতর্ক থাকতে হবে। মশারি টানিয়ে শোয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। কোথাও যেন পানি জমে না থাকে। মশার প্রজনন জায়গাগুলো ধ্বংস করে দেওয়া, নিজেদের সুরক্ষা নিজেদেরই করতে হবে। সরকারের পক্ষ থেকে যা করার আমরা তা করব। আপনাদের পাশে আমরা আছি। সারা বাংলাদেশের উন্নয়নটাই আমাদের লক্ষ্য। জাতির পিতা আমাদের মাঝে নেই। কিন্তু জাতির পিতার আদর্শ নিয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ দেশের উন্নয়নে কাজ করে। মানুষের মৌলিক চাহিদাগুলো বাস্তবায়নে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। অনুষ্ঠানে সেতুগুলোর বিস্তারিত তুলে ধরেন সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী। সঞ্চালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস। 

আরও পড়ুন : সাধারণ মানুষের গায়ে হাত দিলে রক্ষা নেই 

৮৭৯ কোটি ৬২ লাখ টাকা ব্যয়ে এই একশ সেতু নির্মাণ করেছে সরকার। চট্টগ্রাম বিভাগে ৪৫টি, সিলেট বিভাগে ১৭টি, বরিশাল বিভাগে ১৪টি, ময়মনসিংহ বিভাগে ৬টি সেতু নির্মিত হয়েছে। এছাড়া গোপালগঞ্জ, রাজশাহী ও রংপুরে পাঁচটি করে এবং ঢাকায় দুটি ও কুমিল্লায় একটি সেতু নির্মাণ করা হয়েছে।

এমএসআই/এনএফ