পরকীয়ায় জড়ানো, মানুষকে তুলে নিয়ে ছিনতাই, ঘুষ নেওয়াসহ নানা অনিয়মের শাস্তি পেয়েছেন পুলিশের ঊর্ধ্বতন ৪ কর্মকর্তা। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পৃথক ৪টি প্রজ্ঞাপনে তাদের শাস্তি দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার পুলিশ সদরদপ্তর সূত্রে বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছে ঢাকা পোস্ট।

শাস্তির প্রজ্ঞাপনগুলোতে স্বাক্ষর করেছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. আখতার হোসেন।

শাস্তি পাওয়া পুলিশ কর্মকর্তারা হলেন, চট্টগ্রাম রেঞ্জের সাবেক ডিআইজি মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেন, ডিএমপির উপ-কমিশনার (ডিসি) মো. সালাউদ্দিন শিকদার, গাজীপুরের ডিসি মো. মিজানুর রহমান ও পুলিশ সুপার (এসপি) কাজী মো. ফজলুল করিম। 

প্রজ্ঞাপন থেকে জানা গেছে, মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেনের বিরুদ্ধে তার অধীনস্থ এসআই মো. সাফায়েত হোসেনের স্ত্রীসহ বিভিন্ন নারীর সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়া, রাতে মদ্যপান করে বাসায় ফেরা, অভিযোগকারীকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা ও যৌতুক দাবি করার ৪টি বিভাগীয় মামলা হয়। মামলার তদন্তে অভিযোগগুলো সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়। তাই মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেনকে ‘তিরস্কার’ দণ্ড প্রদান করা হয়।

২০২১ সালে যশোর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সাদা পোশাকে ৩ পুলিশ সদস্যের সঙ্গে এক নারীর আপত্তিকর মেলামেশার কারণে স্থানীয় যুবকদের সঙ্গে পুলিশের হাতাহাতি ও ধস্তাধস্তি হয়। এ ঘটনার সূত্র ধরে সেখানে যান বর্তমানে ডিএমপির ডিসি মো. সালাউদ্দিন শিকদার। সেখানে তিনি যশোর পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ হাসান বিপুকে আটক করে পরবর্তীতে তাকে ডিবি কার্যালয়ে ১৫-১৬ ঘণ্টা আটক রেখে নির্যাতন করেন। নির্যাতনের ঘটনাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়। পরে এসব অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় সরকারি চাকরির বিধিমালা, ২০১৮ এর ৩(খ) বিধি অনুযায়ী ‘অসদাচরণ' এর দায়ে তাকে ‘তিরস্কার’ দণ্ড প্রদান করা হয়।

জুয়াড়িদের কাছ থেকে প্রায় ২০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে ডিএমপির ডিসি মো. মিজানুর রহমানের (তৎকালীন দিনাজপুরে কর্মরত)  বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করা হয়। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তার 'বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি স্থগিতকরণ' এর দণ্ড প্রদান করা হয়। একই সঙ্গে তার স্থগিতকৃত বেতন বৃদ্ধি ভবিষ্যতে বেতন থেকে সমন্বয় করা হবে না বলেও জানায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

পুলিশ সুপার কাজী মো. ফজলুল করিম ২০০৮ সালে মহাখালী টার্মিনাল ফাঁড়ির সামনের মোড় থেকে রিপন নামে একজনকে ধরে গাড়িতে তুলে হ্যান্ডকাপ পরিয়ে চোখ বেঁধে ফেলেন এবং তার কাছে থাকা ৮৬ হাজার সৌদি রিয়াল, মোবাইল ফোন ও পাসপোর্ট ছিনিয়ে নেন বলে অভিযোগ ওঠে। অভিযোগে তার লিখিত জবাব, ব্যক্তিগত শুনানিতে উভয়পক্ষের বক্তব্য, প্রাসঙ্গিক দলিলপত্রাদি এবং অপরাধের প্রকৃতি ও মাত্রা বিবেচনায় সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর ৩(খ) বিধি অনুযায়ী ‘অসদাচরণ' এর অভিযোগ প্রমাণিত হয়। তাই তাকে ‘তিরস্কার’ দণ্ড দেওয়া হয়েছে।

এআর/এসকেডি