আবাসিক ভবনেই তৈরি হচ্ছে নকল প্যারাসুট-কুমারিকা তেল
পুরান ঢাকার সাতরওজার আবাসিক একটি ভবনে গড়ে তোলা হয়েছে নকল প্রসাধনী তৈরির কারখানা। সেখানে বসেই মোড়ক লাগিয়ে নকল প্যারাসুট, কুমারিকা, ডাবর আমলা, কিউট নারিকেল তেল এবং মেরিল গ্লিসারিন বাজারজাত করে আসছিল নুরুজ্জামান কসমেটিকস।
প্রতিষ্ঠানটি শুধু ঢাকায় নয়, চট্টগ্রাম ও উত্তরাঞ্চলেও নিজস্ব শক্তিশালী একটি ডিস্ট্রিবিউশন চ্যানেলের মাধ্যমে এসব নকল প্রসাধনী বাজারজাত করত। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে বিএসটিআই-এর অনুমোদনহীন ওই নকল প্রসাধনী কারখানায় বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত অভিযান চালায় র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
বিজ্ঞাপন
প্রতিষ্ঠানটিতে র্যাব-৩ ও বিএসটিআই-এর সহযোগিতায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার বসু। এ সময় নকল প্রসাধনী সামগ্রী তৈরি ও অনুমোদন না নিয়ে বাজারজাতকরণের অভিযোগে বাড়ির মালিকসহ দুজনকে ছয় লাখ টাকা জরিমানা করে ভ্রাম্যমাণ আদালত। তবে অভিযানের খবর পেয়ে প্রতিষ্ঠানটির মূল মালিক নুরুজ্জামান পালিয়ে যান।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার বসু ঢাকা পোস্টকে বলেন, নিয়ম মোতাবেক আবাসিক ভবনে কোনো ধরনের কারখানা পরিচালনা করা যায় না। প্রতিষ্ঠানটি বিএসটিআই কিংবা ফায়ার সার্ভিসের অনুমতি না নিয়ে বংশাল থানাধীন আবুল হাসনাত রোডের জেলখানার ঢাল সংলগ্ন সাতরওজার ১৩৫/১আবাসিক ভবনে কারখানা পরিচালনা করছিল।
তিনি আরও বলেন, সেখান থেকে প্রতারণামূলকভাবে বিভিন্ন ব্রান্ডের নারিকেল তেল যেমন- প্যারাসুট, কুমারিকা, ডাবর আমলা, কিউট নারিকেল তেলসহ মেরিল গ্লিসারিন নকল মোড়কে ভেজাল পণ্য বাজারজাত করে আসছিল। পলাশ বসু বলেন, অভিযানকালে ৩০ থেকে ৩৫ লাখ টাকা মূল্যের ভেজাল পণ্য জব্দ করার পর বিএসটিআই কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে সেগুলো ধ্বংস করা হয়।
বিএসটিআই ও ভোক্তা অধিকার আইনে প্রতিষ্ঠানটির কারিগর মো. আকতার হোসেনকে (২১) তিন লাখ টাকা অনাদায়ে তিন মাসের কারাদণ্ড এবং ব্যবসায়িক অংশীদার মো. আরমান হোসেনকে (৩৮) তিন লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। পাশাপাশি কারখানাটি সিলগালা করা হয়েছে।
চক্রটি প্রায় আড়াই বছর ধরে এভাবেই নকল ও ভেজাল তেল-গ্লিসারিন বাজারজাত করে আসছিল। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ এড়াতে তারা ঘনঘন নিজেদের অবস্থান পরিবর্তন করত। প্রতারণামূলক এ ব্যবসা পরিচালনার জন্য তারা শক্তিশালী ডিস্ট্রিবিউটর সিন্ডিকেট মেইনটেইন করত বলেও জানান তিনি।
জেইউ/এমএইচএস