ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং

ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং নিজেকে ভারতের একজন বড় ভক্ত বলে পরিচয় দিয়েছেন। তার মতো অনেক শিক্ষিত চীনা নাগরিক ভারত নিয়ে ইতিবাচক ধারণা পোষণ করেন বলেও জানান তিনি। বুধবার (২৬ অক্টোবর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘ডিকাব টক’ অনুষ্ঠানে এ কথা জানান তিনি।

চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, চীন মনে করে দুই দেশ একসঙ্গে কাজ করতে পারলে পৃথিবীর অনেক সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। আমরা একযোগে উন্নয়ন ও ভূ-রাজনৈতিকভাবে একে অপরকে সহযোগিতা করতে চাই। আমরা একযোগে উন্নয়ন ও ভূ-রাজনৈতিকভাবে একে অপরকে সহযোগিতা করতে পারি।

লি জিমিং বলেন, আমি ভারতের একজন বড় ফ্যান। চীনের শিক্ষিত জনগোষ্ঠীর বড় অংশ ভারত বিষয়ে ইতিবাচক ধারনা পোষণ করে। ভারতে আমার অনেক বন্ধু রয়েছেন। ভারতের সঙ্গে আমাদের কোনো কৌশলগত প্রতিদ্বন্দ্বিতা নেই।

রোহিঙ্গা সমস্যা আন্তর্জাতিকীকরণের পক্ষে নয় চীন

রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে চীন নীরবে কাজ করছে। তবে কোনোভাবেই এই সমস্যার আন্তর্জাতিকীকরণ করা ঠিক হবে না বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি। তিনি বলেন, এ সমস্যার সমাধান দ্বিপাক্ষিকভাবে হওয়া উচিত। যত দ্রুত সম্ভব রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তন শুরু হোক, এটিই চীনের চাওয়া।

লি জিমিং বলেন, এই সমস্যা নিয়ে চীন আন্তরিক। চীন এ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকার এবং মিয়ানমারের সঙ্গে কাজ করছে। চীন চায় না এ বিষয়ে গণমাধ্যমে তথ্য প্রকাশ হোক। চীন নীরবে কাজ করে যাচ্ছে। আমরা চাইব, রোহিঙ্গারা যেন নিরাপদ এবং স্বেচ্ছায় তাদের নিজ ভূমে ফিরে যায়। তবে বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় রাখাইনের পরিবেশ কিন্তু সহায়ক নয়।

চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, সীমান্তের ঘটনা নিয়ে আমি মিয়ানমারে চীনা রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে আলাপ করেছি। তিনি মিয়ানমারের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন। মিয়ানমার ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে। তারা এখন সীমান্তের সংঘাত নিয়ে উদ্বেগের মধ্যে আছে।

কবে নাগাদ রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবর্তন শুরু করা যাবে— এমন প্রশ্নের জবাবে রাষ্ট্রদূত বলেন, এ বিষয়ে নির্দিষ্ট করে কোনো তারিখ বলা যাবে না। তবে আমি নিশ্চিত করে বলতে চাই যে, চীন প্রত্যাবাসনের ক্ষেত্রে আন্তরিক।

উইঘুর মুসলিমদের নিয়ে যা বললেন চীনা রাষ্ট্রদূত

চীন মুসলিমবিরোধী দেশ নয় জানিয়ে দেশটির রাষ্ট্রদূত লি জিমিং উইঘুর মুসলিমদের নিপীড়নের বৈশ্বিক প্রচারণার জন্য পশ্চিমা গণমাধ্যমকে অভিযুক্ত করেছেন। রাষ্ট্রদূত বলেন, চীন মুসলিমবিরোধী কোনো দেশ নয়। মুসলিমদের নিয়ে চীনের কোনো নেতিবাচক অবস্থান বা মনোভাব নেই। উইঘুরে মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে যাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ আছে।

লি জিমিং বলেন, চীনে প্রায় ২৫ লাখ মুসলিমের বাস। এর মধ্যে অল্প সংখ্যক লোক সন্ত্রাসের দায়ে অভিযুক্ত। ৫ উইঘুর কুনমিংয়ের রেলস্টেশনে হামলা করেছিল। সেই হামলায় ৩১ জন নিহত হন। যারা এমন ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, তাদের নিয়ে পশ্চিমারা অপপ্রচার চালাচ্ছে। পশ্চিমা মিডিয়া মিথ্যা সংবাদ ছড়াচ্ছে। বাংলাদেশ যেমন সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতিতে রয়েছে, চীনও একই অবস্থানে রয়েছে।

এনআই/আরএইচ