মশা নিধনে ক্র্যাশ অভিযান : স্থানীয়রা বলছে লোক দেখানো
এডিস মশা নিধনে ক্র্যাশ অভিযান পরিচালনা শুরু করেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। বিভিন্ন এলাকায় অভিযানে মশা নিধনের জন্য ফগিং থেকে শুরু করে তরল ওষুধ ছিটানোর কাজ করছে সংস্থাটি। অভিযানে যেসব বাড়ির মালিকদের অবহেলার কারণে এডিসের লার্ভা পাওয়া গেছে তাদের অর্থদণ্ড করছে ডিএনসিসি।
তবে অভিযান চলা এলাকার স্থানীয়রা বলছেন, সিটি করপোরেশনের এই অভিযান মূলত আই ওয়াশ। এডিস মশা নিধনে সিটি করপোরেশনের তেমন কার্যক্রম সাধারণত সবসময় দেখা যায় না। মাঝে মধ্যে ফগিং করা হলেও বেশিরভাগে সময় তাও দেওয়া হয় না। এছাড়া তরল ওষুধ ছিটানো হয়না বলেও দাবি করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
বিজ্ঞাপন
>>ধোঁয়া উড়িয়ে চলে যায় সিটি কর্পোরেশন, কমে না মশা
বুধবার (১৯ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর মগবাজার ও দিলু রোড এলাকায় এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে বিশেষ মশক নিধন অভিযান শুরু করে ডিএনসিসি। এ সময় অভিযানে উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা ও প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগে. জেনা. মো. জোবায়দুর রহমান।
অভিযানে দিলুরোডের দুইটি বাড়ির ম্যানহোলে এডিস মশার লার্ভা পাওয়ায় মালিকদের মোট ২ লাখ ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়।
অর্থদণ্ড পাওয়া দুই মালিকের মধ্যে একজন হচ্ছেন গোলাম কবীর। তারা বাসার গেইটের সামনে ম্যানহোলে এডিস মশার লার্ভা পাওয়ায় ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড করা হয়। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, ওয়ার ড্রেনেজ সিস্টেমের কারণে তারা বাসার ম্যানহোল থেকে পানি না নেমে জমে থাকে। এতে করে জমা পানিতে মশার সৃষ্টি হয়। তার পরেও আমি একাধিকবার ব্লিচিং পাউডার ও ক্যারোসিন ছিটিয়েছি, কিন্তু মশা মরেনি। পানি ম্যানহোল থেকে না নামলে এতে আমার কি দোষ।
>>মশার উৎপাত : রোগ বিস্তারের আশঙ্কা কতখানি?
এদিকে এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা মো. মামুন বলেন, ডিএনসিসিকে কখনোই দেখি না এসে মানুষ জনকে সচেতন করতে বা মশা নিধনে ওষুধ ঠিকভাবে ছিটাতে। দিলুরোডের প্রতিটি বাসায় ঠিকভাবে অভিযান চালালে দেখা যাবে সব জায়গায় মশা রয়েছে। একদিন এসে অভিযান পরিচালনা করে গেলেতো এই সমস্যার সমাধান হবে না। বর্তমান অবস্থায় প্রতিদিন মশক নিধনের ওষুধ ছিটাতে হবে এবং বাড়ির মালিকদের সচেতন করতে হবে, তাহলে সুফল পাওয়া যাবে। আর লোক দেখানো এসব অভিযান কোনো কাজে আসবে না।
তবে সিটি করপোরেশন বলছে, তারা নিয়মিত মশক নিধনের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। এছাড়া মানুষ জনকে সচেতন করতে যা যা করার দরকার তারা তাই করছেন।
>>মশার লার্ভা বেশি, সেপ্টেম্বর পর্যন্ত থাকবে ডেঙ্গু উপদ্রব
এ সময় অভিযানে উপস্থিত থাকা ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা বলেন, যেখানেই এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যাচ্ছে সেখানেই আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করছি। এছাড়া এডিস মশার বিশেষ সতর্ক করার জন্য আমরা শাস্তিমূলক ব্যবস্থাও গ্রহণ করছি।
তিনি বলেন, এডিস মশা পরিত্যক্ত পাত্রে তথা চিপসের প্যাকেট, ডাবের খোসা, ছাদ বাগান, ফুলের টবে জমে থাকা পানিতে জন্মায়। নগরের প্রত্যেকে যদি সচেতন হয়, তাহলে এ এডিস মশা নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হবে। পাশাপাশি সিটি করপোরেশন তার নিজস্ব কার্যক্রম চালিয়ে যাবে।
এমএসি/এমএ