ঢাকা শহরের ১ হাজার ৫২৮ বর্গকিলোমিটার এলাকা নিয়ে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা বা ডিটেইল এরিয়া প্ল্যান (ড্যাপ) চূড়ান্ত করা হয়েছে। আর বাসযোগ্য ঢাকা গড়ে তুলতে দ্রুত ড্যাপ বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছেন বক্তারা।

শনিবার (১৫ অক্টোবর) ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্টের আয়োজনে ‘বাসযোগ্য ঢাকার জন্য নীতি ও পরিকল্পনা' বিষয়ক পর্যালোচনায় এ দাবি জানানো হয়েছে।

বক্তারা বলেন, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় প্রকাশ করা এক প্রজ্ঞাপনে এ রূপরেখা চূড়ান্ত করা হয়েছে। ঢাকা শহরকে বাসযোগ্য করার জন্য ড্যাপ গৃহীত নীতিমালা ও পরিকল্পনার দ্রুত বাস্তবায়ন অন্যতম একটি সমাধান। ঢাকা শহরের বিভিন্ন এলাকার জনসংখ্যার ঘনত্বকে নাগরিক সুবিধার সঙ্গে আনুপাতিক রেখে এবং আগামী ২০৩৫ সালের মধ্যে পরিকল্পিত অবকাঠামো গড়ে তুলে আরও ৬০ লাখ মানুষকে বসবাসের সুবিধা দেওয়া, পথচারীবান্ধব অবকাঠামো গড়ে তুলে ব্যক্তিগত গাড়ির ব্যবহার কমিয়ে আনা, গ্রিন নেটওয়ার্ক-ব্লু নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা, নগরবাসীর জন্য মাঠ-পার্ক তৈরি, সড়ককে গণপরিসরে পরিণত করাসহ বিভিন্ন প্রস্তাবনা এই পরিকল্পনায় দেওয়া হয়েছে।

আলোচনা সভায় নগর পরিকল্পনাবিদ হিসাম উদ্দিন চিশতি বলেন, ড্যাপে নাগরিক সব ধরনের সুবিধা যেমন ঢাকার উভয় সিটি করপোরেশন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, খাল পুনরুদ্ধার, মাঠ-পার্কসহ বিভিন্ন উন্মুক্ত স্থান তৈরি ও পুনরুদ্ধার ভূমির ব্যবহার, যাতায়াত ব্যবস্থা, ঐতিহ্যবাহী স্থান রক্ষা ইত্যাদি বিষয়ে জোর দেওয়া হয়েছে।

ড্যাপের ডেপুটি টিম লিডার খন্দকার নিয়াজ রহমান বলেন, একই এলাকায় ব্লক ভিত্তিক আবাসন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বাজার ব্যবস্থা, স্বাস্থ্য সেবা ও বিনোদন কেন্দ্রসহ সব সুবিধার পরিকল্পনা ড্যাপে রয়েছে। ফলে হাঁটা দূরত্বে সব ধরনের প্রয়োজনীয় পরিষেবা যেন মানুষের নাগালের মধ্যে থাকে তা নিশ্চিত করা সম্ভব। এতে নগরে হেঁটে যাতায়াতের ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটবে ও দূষণ অনেকাংশে হ্রাস পাবে।

ড্যাপের প্রকল্প পরিচালক মো. আশরাফুল ইসলাম বলেন, ঢাকার ভেতরে ৫৬৬ কিলোমিটার নদীসহ, পুকুরগুলোকে পুনরুদ্ধার করে জলাবদ্ধতা নিরসন ঢাকার আশপাশে বয়ে চলা নদীর তীরে ওয়াকওয়ে নির্মাণ প্রস্থ সড়ক, প্রস্থ ফুটপাত নির্মাণ ও বৃক্ষরোপণ বিষয়ে ড্যাপে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। প্রস্তাবনায় গণপরিবহন ব্যবস্থা সড়ক, নৌ ও রেলপথকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে।

ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্টের পরিচালক গাউস পিয়ারী বলেন, বর্তমানে আমাদের নগরকে একটি বসবাসযোগ্য নগরে রুপান্তর করা অত্যন্ত প্রয়োজন। মানুষের শারীরিক ও মানসিক সুস্থতায় নগরীর মাঠ-পার্ক, জলাশয়, উন্মুক্ত স্থানসহ সব সুবিধা দরকার। এমনকি কোভিড-১৯ এর সময় আমরা বুঝতে পেরেছি যে, বিভিন্ন ধরনের রোগ থেকে পরিত্রাণ পেতেও একটি নিরাপদ ও বসবাস যোগ্য নগরী কতটা জরুরি।

এএসএস/জেডএস