বনানীর বিআরটিএ কার্যালয়

• ১৭ মাস ধরে বন্ধ স্মার্ট ড্রাইভিং লাইসেন্স কার্ড সরবরাহ
• বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় আটকা ১০ লাখ আবেদনকারীর লাইসেন্স
• সংকট মোকাবিলায় কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বিআরটিএ
• ফাইল আটকে রেখেছে বিআরটিএ’র অপারেটর ও দালালরা

প্রায় ১৭ মাস ধরে বন্ধ বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) স্মার্ট ড্রাইভিং লাইসেন্স কার্ডের স্বাভাবিক সরবরাহ। ভবিষ্যতে চাহিদার সমীক্ষা না থাকা, দরপত্র জটিলতা এবং নিজেদের প্রযুক্তিগত দক্ষতা না থাকায় বিআরটিএ’র লাইসেন্স বিতরণের কার্যক্রম একরকম থমকে আছে। 

বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় আটকে আছে অন্তত ১০ লাখ আবেদনকারীর স্মার্ট ড্রাইভিং লাইসেন্স। এমন অবস্থায় কেন্দ্র থেকে শুরু করে সবপর্যায়ে ঘুষ-বাণিজ্য সচল রেখেছে দালালচক্র। এ চক্রের তদবিরে দিনে এখন গুটিকয়েক ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়া হচ্ছে।

স্মার্ট ড্রাইভিং লাইসেন্স দিতে দুটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে বিআরটিএ। এর মধ্যে নতুন চুক্তিবদ্ধ মাদ্রাজ সিকিউরিটিজ প্রিন্টার্স লিমিটেডের গত ৩১ ডিসেম্বর থেকে লাইসেন্স সরবরাহের কথা ছিল। প্রতিষ্ঠানটি দুই দফায় তিন মাস সময় বাড়িয়েও কার্যক্রম শুরু করতে পারেনি। 

চুক্তি অনুযায়ী, আগামী পাঁচ বছরে প্রতিষ্ঠানটি ৪০ লাখ স্মার্ট ড্রাইভিং লাইসেন্স সরবরাহ করবে। অথচ প্রতিষ্ঠানটি ২০২০ সালের জুলাইয়ে কাজ পেলেও এখন পর্যন্ত সেন্ট্রাল এনরোলমেন্ট স্টেশন স্থাপনের কাজই শেষ করতে পারেনি। রাজধানীর মিরপুর পল্লবীর মোল্লা টাওয়ারে এ কেন্দ্র স্থাপনের কাজেও মানা হচ্ছে না শর্ত। শেষ হয়নি বিভিন্ন জেলায় জনবল নিয়োগের প্রক্রিয়াও।

বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় আটকে আছে অন্তত ১০ লাখ আবেদনকারীর স্মার্ট ড্রাইভিং লাইসেন্স। এমন অবস্থায় কেন্দ্র থেকে শুরু করে সবপর্যায়ে ঘুষ-বাণিজ্য সচল রেখেছে দালালচক্র। এ চক্রের তদবিরে দিনে এখন গুটিকয়েক ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়া হচ্ছে

আগে থেকেই বিআরটিএ টাইগার আইটি বাংলাদেশ লিমিটেডের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ। ওই চুক্তি ২০২২ সালের জুনে শেষ হবে। চুক্তি অনুযায়ী, প্রতিষ্ঠানটির প্রতিদিন চার হাজার লাইসেন্স সরবরাহের কথা ছিল। বিশ্ব ব্যাংকের তালিকায় কালো চিহ্নিত প্রতিষ্ঠানটির কাছে ৪০ হাজার স্মার্ট ড্রাইভিং লাইসেন্স এখনও আছে। তদবিরের চাপে বিআরটিএ এসব কার্ড মুদ্রণের নির্দেশ দেওয়ায় টাইগার আইটি থেকে তা সরবরাহ করা হচ্ছে।

সব প্রক্রিয়া শেষ করেও ১০ লাখ আবেদনকারীর যথাসময়ে স্মার্ট ড্রাইভিং লাইসেন্স না পাওয়ার কথা স্বীকার করেছেন বিআরটিএ’র কর্মকর্তারা। এ অবস্থায় নতুন করে চুক্তিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান কত দিনে জমে থাকা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে লাইসেন্স সরবরাহ করতে পারবে, তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।

রেডিও ঝিনুক-এ কর্মরত জুয়েল রানা ঢাকা পোস্টকে বলেন, গত বছরের ১৮ নভেম্বর হালকা থেকে ভারী শ্রেণির লাইসেন্স করতে আবেদন করেছিলাম। ১ জানুয়ারি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছি। কিন্তু বিআরটিএ থেকে আমার নামে কোনো ফাইল জমা হচ্ছে না। এখন কী করব তাও বুঝতে পারছি না।

এ বিষয়ে বিআরটিএ’র পরিচালক (প্রকৌশল) শীতাংশু শেখর বিশ্বাস সোমবার (১ মার্চ) রাতে ঢাকা পোস্টকে বলেন, নয় লাখের বেশি আবেদনকারীর স্মার্ট ড্রাইভিং লাইসেন্স সরবরাহ করতে হবে। এজন্য প্রস্তুতিপর্ব চলছে। চারটি জেলা থেকে লাইসেন্স দেওয়া শুরু হবে।

নয় লাখের বেশি আবেদনকারীর স্মার্ট ড্রাইভিং লাইসেন্স সরবরাহ করতে হবে। এজন্য প্রস্তুতিপর্ব চলছে। চারটি জেলা থেকে লাইসেন্স দেওয়া শুরু হবে

শীতাংশু শেখর বিশ্বাস, পরিচালক (প্রকৌশল), বিআরটিএ

স্মার্ট ড্রাইভিং লাইসেন্স সরবরাহের বিষয়ে বিআরটিএ'র চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদার মঙ্গলবার সকালে ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘আইনি প্রক্রিয়া ও দরপত্রের প্রক্রিয়াসহ বিভিন্ন কারণে ড্রাইভিং লাইসেন্স সরবরাহে বাধা তৈরি হয়েছে। এই বাধা আমরা সহসাই দূর করতে যাচ্ছি।’

“আমরা জমে থাকা সব ড্রাইভিং লাইসেন্স মুদ্রণ করতে পারব সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে। নতুন প্রতিষ্ঠানটি এই প্রক্রিয়া শুরু করেছে। আমরা বিআরটিএ’র সব কার্যালয় দালালমুক্ত করতে অভিযান চালাচ্ছি। আমি নিজে দায়িত্ব নেওয়ার পর এসব বিষয়ে খুব গুরুত্ব দিচ্ছি। বিভিন্ন সেবা যেভাবে আমরা গতিশীল করেছি তেমনি ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়ার ক্ষেত্রেও গতি বাড়িয়ে দেব। এজন্য একটু সময় লাগবে।”

বিআরটিএ’র লাইসেন্স সরবরাহ সংক্রান্ত সক্ষমতা বাড়াতে হবে বলে মনে করেন প্রতিষ্ঠানটির সাবেক চেয়ারম্যান কামরুল আহসান। তিনি বলেন, বিআরটিএ’র চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে লাইসেন্সের জন্য চাহিদার যে চাপ সামাল দিতে হয়েছে, তা আমার মনে থাকবে।

সব প্রক্রিয়া শেষ করেও ১০ লাখ আবেদনকারীর যথাসময়ে স্মার্ট ড্রাইভিং লাইসেন্স না পাওয়ার কথা স্বীকার করেছেন বিআরটিএ’র কর্মকর্তারা। এ অবস্থায় নতুন করে চুক্তিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান কত দিনে জমে থাকা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে লাইসেন্স সরবরাহ করতে পারবে, তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে

এদিকে, সময়মতো ড্রাইভিং লাইসেন্স না পাওয়ায় দেশে-বিদেশে অনেকে চাকরি হারাচ্ছেন। কেউ কেউ গাড়ি চালাতে ভুয়া লাইসেন্স করছেন। কারও আবার পেশা পাল্টাতে হচ্ছে। অনেককে চলতে হচ্ছে মামলার স্লিপ নিয়েই। যদিও বিআরটিএ লাইসেন্সের পরিবর্তে সাময়িক অনুমতিপত্র দিচ্ছে। লাইসেন্সের আবেদনকারীরা তা দেখালেও পুলিশ আমলে না নিয়ে বিভিন্ন স্থানে চালকদের বিরুদ্ধে মামলা দিচ্ছে।

বিআরটিএ’র বিভিন্ন সার্কেলের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রাজধানীসহ দেশজুড়ে স্মার্ট ড্রাইভিং লাইসেন্সের স্বাভাবিক সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায় ২০১৯ সালের আগস্টে। ভবিষ্যতের চাহিদা নির্ধারণ সম্পর্কে বিআরটিএ’র আগাম ধারণা ও ব্যবস্থা না থাকায় এ বিপর্যয় নেমে আসে। গত ১৭ মাসে এ সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। 

বিআরটিএ’র বিভিন্ন সার্কেল ও স্মার্টকার্ড সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দেশে কমপক্ষে ১০ লাখ আবেদনকারী স্মার্ট ড্রাইভিং লাইসেন্সের অপেক্ষায় আছেন। তাদের আবেদন বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় আটকে আছে। নতুন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে লাইসেন্স পেতে চুক্তির ১৭ মাস পার হয়ে গেছে। এ সময়ে সংকট মোকাবিলায় কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বিআরটিএ। 

গত আগস্টে মুদ্রণ না হওয়ায় কেন্দ্রীয়ভাবে এক লাখ ৭৯ হাজার ৩৯৪টি লাইসেন্স দেওয়া সম্ভব হয়নি। ধীরে ধীরে এ সংখ্যা আরও বাড়তে থাকে। এর বাইরে বিভিন্ন জেলায়ও আবেদন জমা হতে থাকে। পরীক্ষার জন্য বারবার তারিখ চেয়েও আবেদনকারীরা পাননি, পেলেও তা পরিবর্তন করা হয়েছে।

২০১৮ সালে নিরাপদ সড়কের দাবিতে দেশজুড়ে আন্দোলন হয়। তখন শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নেমে আসেন। পুলিশও আইন প্রয়োগের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। মামলার চাপের মধ্যে বিআরটিএতে ড্রাইভিং লাইসেন্স নিতে আবেদনকারীদের ভিড় বাড়ে। আবেদনের সংখ্যা বেড়ে হয় দ্বিগুণ। এছাড়া পরিস্থিতি সামাল দিতে টাইগার আইটিকে দিনে নির্ধারণ করে দেওয়া সংখ্যার চেয়ে অতিরিক্ত লাইসেন্স সরবরাহ করতে হয়।

টাইগার আইটি বাংলাদেশ লিমিটেডের সঙ্গে বিআরটিএ’র চুক্তি আছে ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত। চুক্তির মেয়াদ থাকলেও চুক্তিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স সরবরাহ শেষ হয় ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে। মধ্যবর্তী সংকট মোকাবিলায় প্রায় এক বছর আগে চিঠি দিয়ে বিআরটিএকে আগাম সতর্ক করেছিল টাইগার আইটি। 

প্রতিষ্ঠানটির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, ৬৪টি জেলার ৭২টি এনরোলমেন্ট স্টেশনের স্থানীয় আবেদনকারীর তথ্য বিআরটিএ’র স্থানীয় কার্যালয় থেকে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পাঠানো হচ্ছে না। দালালদের মাধ্যমে যেসব লাইসেন্সের জন্য ঘুষ নেওয়া হয় তাদের তথ্যই শুধু অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পাঠানো হয়। বিআরটিএ’র অপারেটর ও দালালরা জেলায় জেলায় ফাইল আটকে রেখেছেন। ছবি তোলার পর তিন কর্মদিবসের মধ্যে কেন্দ্রীয় সার্ভারে সব তথ্য পাঠানোর কথা, কিন্তু তা পাঠানো হচ্ছে না। 

আমরা জমে থাকা সব ড্রাইভিং লাইসেন্স মুদ্রণ করতে পারব সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে। নতুন প্রতিষ্ঠানটি এই প্রক্রিয়া শুরু করেছে। আমরা বিআরটিএ’র সব কার্যালয় দালালমুক্ত করতে অভিযান চালাচ্ছি। আমি নিজে দায়িত্ব নেওয়ার পর এসব বিষয়ে খুব গুরুত্ব দিচ্ছি। বিভিন্ন সেবা যেভাবে আমরা গতিশীল করেছি তেমনি ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়ার ক্ষেত্রেও গতি বাড়িয়ে দেব। এজন্য একটু সময় লাগবে

নুর মোহাম্মদ মজুমদার, চেয়ারম্যান, বিআরটিএ

কী পরিমাণ আবেদন বিভিন্ন কেন্দ্রে জমা আছে তা আগে চিঠি দিয়ে জানতে চাওয়া হতো বিআরটিএ’র সদরদপ্তর থেকে। একপর্যায়ে কেন্দ্রের এ বিষয়ে জানার আগ্রহও বন্ধ হয়ে যায়। প্রকৃত আবেদনকারীর অবস্থা না জানায় এবং ব্যবস্থা না নেওয়ায় ড্রাইভিং লাইসেন্স নিয়ে গভীর সংকটের মুখে বিআরটিএ’র চেয়ারম্যান মশিয়ার রহমানকে সরিয়ে দেওয়া হয়। চেয়ারম্যান করা হয় ড. কামরুল আহসানকে। তিনি অবসরে গেলে নতুন চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পান নুর মোহাম্মদ মজুমদার। 

কামরুল আহসান বিআরটিএ’র দায়িত্বে থাকায় পাঁচ বছরে ৪০ লাখ লাইসেন্স সরবরাহ করতে ২০১৯ সালের ২১ জুলাই দরপত্র আহ্বান করেন। সেই দরপত্রের সময় দুবার বাড়ানো হয়। এভাবে চলে যায় এক বছরের বেশি সময়।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনসহ বিভিন্ন সংগঠন সূত্রে জানা গেছে, ৩৯ শতাংশ ভারী গাড়ির চালকের বৈধ লাইসেন্স নেই। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারী যানবাহনের ক্ষেত্রে গাড়ির তুলনায় আড়াই থেকে তিনগুণ বেশি চালক থাকা জরুরি। 

২০১১ সালের নভেম্বর থেকে স্মার্ট ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়া শুরু হয়। এজন্য বিআরটিএ চুক্তিবদ্ধ হয় টাইগার আইটি বাংলাদেশ লিমিটেডের সঙ্গে। প্রথম দফা চুক্তির আওতায় প্রতিষ্ঠানটির পাঁচ বছরে ১১ লাখ ৫০ হাজার ড্রাইভিং লাইসেন্স সরবরাহের কথা ছিল। নির্দিষ্ট সময়ে ওই সংখ্যক লাইসেন্স ছাড়াও অতিরিক্ত এক লাখ ৭২ হাজার লাইসেন্স সরবরাহ করে প্রতিষ্ঠানটি। এরপর দ্বিতীয় দফা চুক্তিতে ১৫ লাখ লাইসেন্স সরবরাহের জন্য চুক্তিবদ্ধ হয় তারা।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক কাজী সাইফুন নেওয়াজ বলেন, একটি গাড়ির বিপরীতে দেড়জন চালক থাকতে হয়। দেশে গাড়ির সমসংখ্যক চালকের চেয়ে অনেক কম চালক আছেন।

প্রসঙ্গত, ২০১১ সালের নভেম্বর থেকে স্মার্ট ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়া শুরু হয়। এজন্য বিআরটিএ চুক্তিবদ্ধ হয় টাইগার আইটি বাংলাদেশ লিমিটেডের সঙ্গে। প্রথম দফা চুক্তির আওতায় প্রতিষ্ঠানটির পাঁচ বছরে ১১ লাখ ৫০ হাজার ড্রাইভিং লাইসেন্স সরবরাহের কথা ছিল। নির্দিষ্ট সময়ে ওই সংখ্যক লাইসেন্স ছাড়াও অতিরিক্ত এক লাখ ৭২ হাজার লাইসেন্স সরবরাহ করে প্রতিষ্ঠানটি। এরপর দ্বিতীয় দফা চুক্তিতে ১৫ লাখ লাইসেন্স সরবরাহের জন্য চুক্তিবদ্ধ হয় প্রতিষ্ঠানটি।

পিএসডি/এসএসএইচ/এমএআর