বিদ্যুৎ সরবরাহের জাতীয় গ্রিডে বিপর্যয়ের ঘটনা নাশকতামূলক কোনো কর্মকাণ্ডের কারণে ঘটেছে কি না তা যাচাই করে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। 

আজ (বৃহস্পতিবার) দুপুরে সচিবালয়ে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক সাংবাদিকের করা প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, এখানে দুটো জিনিস। একটা হলো রাজনৈতিক ব্যক্তিদের কাছে যেটা শুনছি- এরকম ঘটনা আরও হবে। এটা ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বললেন। আরও হবে মানে কিন্তু এখানে অন্যরকম ষড়যন্ত্রের কথা। উনি জানেন কীভাবে? যে ব্যক্তিটা তার নিজের আমলে এক মেগাওয়াট বিদ্যুৎ দিতে পারেননি.... ট্রান্সমিশনের লাইন তো বাদই দিলাম। একমাত্র খাম্বা ছাড়া কিছুই লাগাতে পারেননি। উনি কিন্তু পণ্ডিতের মতো কথা বলে দিলেন, এরকম ঘটনা আরও হবে। এখানে কোনো নাশকতা আছে কি না, সেটা যাচাই-বাছাই চলছে। এটা হচ্ছে একটা বিষয়। আর দ্বিতীয় বিষয় হচ্ছে অবশ্যই টেকনিক্যাল সাইডটাও আমরা দেখছি।

আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ২০১৪ সালের ঘটনাটা ছিল একরকম। আর এই ঘটনাটা অন্যরকম। দুইটা দুই রকম ঘটনা। পিজিসিবি এখন অনেক অ্যাডভান্স লেভেলে চলে গেছে।  

প্রতিমন্ত্রী বলেন, সকলেই একসাথে কাজ করার কারণে আমরা দ্রুততার সাথে আনতে (রিস্টোর) পেরেছি। এক ঘণ্টা পর থেকেই কিন্তু শুরু হয়ে গিয়েছিল রিস্টোর করা। এটা একটা বড় ব্যাপার। অবশ্যই টেকনিক্যাল ফল্ট এখানে আছে। একদম পিন টু পিন যদি আমরা ধরতে যাই, তাহলে একটু সময় লাগবে। এ কারণে আমি দুটি কমিটি করে দিয়েছি। একটি কমিটি হলো বিদ্যুৎ বিভাগের ভেতরের লোকদের নিয়ে, আরেকটি কমিটি হলো বিদ্যুৎ বিভাগের বাইরের লোকদের নিয়ে। 

আগামী সপ্তাহের মধ্যে তদন্ত কমিটির রিপোর্টগুলো পাওয়া যাবে বলে আশা করেন তিনি। 

এসব ঘটনা রোধ করার জন্য আপনারা কী করবেন- জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়ার ফলে আমরা ঘণ্টাখানেক পর থেকে আস্তে আস্তে বিদ্যুৎ রিস্টোর করা শুরু করি। এটা ম্যানুয়ালি করা হয়েছে। বড় বিষয় হচ্ছে আমাদের এখন অটোমেশনে যেতে হবে এবং আমরা কাজ শুরু করেছি। হয়তো আগেই করতে পারতাম কিন্তু কোভিডের কারণে দু’টি বছর পিছিয়ে গেছি। মানে এটা শেষ হতে হয়তো আরও দুই বছর লাগবে। গ্রিডকে স্মার্ট গ্রিডে পরিণত করা, এটা একটা বড় কাজ এই মুহূর্তে। ২০২৪ সালের মধ্যে আমাদের নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট চলে আসবে। আরও প্রায় এক হাজার মেগাওয়াট আমাদের সোলার প্যানেল থেকে যোগ হবে। এ কারণে আমি মনে করি খুব দ্রুততার সাথে অটোমেশনে গেলে পরে আরও স্থিতিশীল করতে পারব আমরা।

উল্লেখ্য, বিদ্যুৎ সরবরাহের জাতীয় গ্রিডে বিপর্যয়ের কারণে মঙ্গলবার দুপুর থেকে দেশের বড় একটি এলাকা বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়ে। শুরুর দিকে বিষয়টিকে লোডশেডিং ভাবা হলেও পরে বোঝা যায় আসলে বিদ্যুৎ সরবরাহের জাতীয় গ্রিডে ট্রিপ বা বিপর্যয়ের কারণে দেশের এটা হয়েছে। সন্ধ্যার দিক থেকে ধীরে ধীরে বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ আসতে শুরু করে। 

এসএইচআর/এনএফ