ডেপুটি স্পিকার মো. শামসুল হক টুকু বলেছেন, সমৃদ্ধ জাতি হিসেবে গড়ে তুলতে নদী-সমুদ্রের প্রয়োজনীয়তা অক্ষুণ্ন কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং জীবন-জীবিকাকে সামনে রেখে দেশ গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শুধু স্বপ্ন দেখেননি, স্বাধীনতার পরে বাংলাদেশের সমুদ্রের তলদেশে সম্পদ আহরণ, সমুদ্র অধিকার প্রতিষ্ঠা, নদী কমিশনের চিন্তা ও নীতি প্রণয়ন করে গেছেন।

বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) জাতীয় সংসদের এলডি হলে বিশ্ব নদী দিবস উদযাপন উপলক্ষে বাংলাদেশ নদী বাঁচাও আন্দোলনের আয়োজনে ‘জলবায়ু সংকট মোকাবেলায় নদী’ শীর্ষক সেমিনারের প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ডেপুটি স্পিকার বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার জন্য দায়ী উন্নত দেশগুলো। কিন্তু এই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াটি বহন করতে হচ্ছে বাংলাদেশের মতো অনুন্নত দেশগুলোর। তারাই বিশ্ব উষ্ণতা বৃদ্ধি, জলবায়ু পরিবর্তনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার জন্য দায়ী।

জলবায়ু পরিবর্তনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয় এ ধরনের উন্নয়ন বন্ধ করা, নৈতিক শিক্ষা, স্বাস্থ্য পরিবেশগত বাসস্থান দিকে অর্থ বিনিয়োগ করার জন্য উন্নত বিশ্বের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

আরও পড়ুন: সিস্টেম লস শূন্যে নামাতে দ্রুত প্রিপেইড মিটার স্থাপনের সুপারিশ

শামসুল হক টুকু বলেন, বঙ্গবন্ধুকে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট যদি হত্যা না করা হতো তবে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক বিশ্বের নেতা হিসেবে বিশ্বে নেতৃত্ব দিতেন। আর যদি নেতৃত্ব দিতে পারতেন, সময় পেতেন, তাহলে বাংলার মানুষকে নদী বাঁচাও আন্দোলনের প্রয়োজনীয়তা নাও হতে পারত।

তিনি আরও বলেন, ৭৫ থেকে ৯৬ পর্যন্ত সময়ে বঙ্গবন্ধুর রেখে যাওয়া সংবিধান ক্ষত-বিক্ষত করা হয়েছে। বাঙালি জাতিকে ধ্বংসের শেষ প্রান্তে নিয়ে যাওয়ার জন্য ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছিল। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা যদি জীবিত না থাকতেন, শেখ রেহানা যদি জীবিত না থাকতেন, তারা যদি দায়িত্ব না নিতেন আজ নদী বাঁচানোর আন্দোলন হতো না। নদী বাঁচানোর জন্য আইন হতো না। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর যারা ক্ষমতায় এসেছিল একদিনও এক মুহূর্তেও চিন্তা করেনি। নদী বাঁচলে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে এই চিন্তা ছিলও না তাদের, থাকবেও না। ভারতের সঙ্গে পানি চুক্তি সেটাও বঙ্গবন্ধু ৪৪ হাজার কিউসেক করে গিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে যারা ক্ষমতায় এসেছিল তারা পানি চুক্তি করতে ব্যর্থ হয়েছিল। ধীরে ধীরে আমাদের নদী নালা ক্ষয়িষ্ণু হয়েছে। নদী দখল করে বড় বড় অট্টালিকা গড়ে উঠেছে।

তিনি বলেন, গোটা জাতির কাছে আন্দোলনটা নিয়ে যেতে হবে। যেসব নদ-নদী দখল হয়ে গেছে তা পুনরুদ্ধার করতে কত শ্রম কত অর্থ কত শক্তি প্রয়োগ করতে হচ্ছে। দখলদারদের চিহ্নিত করতে হবে। এসময় তিনি সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের পাশাপাশি জনগণকেও সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান।

বাংলাদেশ নদী বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি অধ্যাপক মো. আনোয়ার সাদতের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. শাহ আজম ও জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য শেখ মনোয়ার হোসেন। অনুষ্ঠানটি ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করেন পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কবির বিন আনোয়ার।

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন নদী গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক মহাপরিচালক ও নদী বাঁচাও আন্দোলনের সহ-সভাপতি ড. লুৎফুর রহমান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোবটিক অ্যান্ড মেকাট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চেয়ারম্যান ও নদী বাঁচাও আন্দোলনের আন্তর্জাতিক সম্পাদক ড. শামীম আহম্মেদ দেওয়ান।

এসএসএইচ