৪১তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার ফল চলতি সপ্তাহে দেওয়ার সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যান মো. সোহরাব হোসাইন।

তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, ফল প্রকাশের দিনক্ষণ বলা যাবে না। তবে এই সপ্তাহেই হবে ইনশাআল্লাহ, চেষ্টা করছি আমরা। পিএসসি ফল প্রকাশের জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা গ্রহণ করেছে।

শনিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে পিএসসি চেয়ারম্যান মো. সোহরাব হোসাইন ঢাকা পোস্টকে এসব কথা বলেন।

চেয়ারম্যান বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত আমার কাছে নির্ভুলভাবে ফল না আসে, ততক্ষণ পর্যন্ত প্রকাশ করা হবে না। এটা এমন একটা সেনসিটিভ ইস্যু, কোনো ভুল রেখে ফল প্রকাশ করা হয় না। আগে আমরা নিশ্চিত হব যে এখন নির্ভুল আছে। অটোমেটেড ও ম্যানুয়ালি দুইভাবে পরীক্ষা করে আমাকে জানানো হয়েছে, এটা (ফল প্রস্তুত) শেষ পর্যায়ে আছে। রোববার থেকে বৃহস্পতিবারের মধ্যে আমরা ফল প্রকাশের আশা করছি।

জানা গেছে, ৪১তম বিসিএসে মোট ৪ লাখ ৭৫ হাজার প্রার্থী আবেদন করেন, যা এ যাবৎকালের মধ্যে সর্বোচ্চ। গত বছরের ১৯ মার্চ ৮টি বিভাগীয় শহরে ৪১তম বিসিএস পরীক্ষার প্রিলিমিনারি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। করোনার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় ঠিক সময়ে ফলাফল প্রকাশ করতে পারেনি পিএসসি।

এরপর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় গত বছরের ১ আগস্ট প্রিলির ফল প্রকাশ করা হয়। প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন ২১ হাজার ৫৬ শিক্ষার্থী। এরপর আবশ্যিক বিষয়গুলোর লিখিত পরীক্ষা শুরু হয় গত বছরের ২৯ নভেম্বর, শেষ হয় ৭ ডিসেম্বর।

সে হিসেবে ৯ মাস আগে শেষ হয়েছে ৪১তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা। তবে এখনো ফল পাননি চাকরিপ্রার্থীরা। পিএসসি বলছে, তিন শতাধিক পরীক্ষকের অবহেলার জন্য লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশে দেরি হচ্ছে।

পিএসসির একাধিক সূত্র জানায়, ফল প্রকাশে দেরির কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে ৩১৮ পরীক্ষকের দায়িত্বে অবহেলার প্রমাণ পাওয়া গেছে। এর মধ্যে গুরুতর অবহেলাকারী পরীক্ষকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।

ফল প্রকাশের দুই-তিন সপ্তাহের মধ্যেই মৌখিক পরীক্ষা
লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশের দুই থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যেই মৌখিক পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)।

২০১৯ সালের ২৭ নভেম্বর ৪১তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে পিএসসি। এতে উল্লেখ করা হয়, বিভিন্ন পদে ২ হাজার ১৩৫ জন কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হবে। বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী সবচেয়ে বেশি নেওয়া হবে শিক্ষা ক্যাডারে। এই ক্যাডারে ৯১৫ জনকে নিয়োগ দেওয়া হবে। এর মধ্যে বিসিএস শিক্ষায় ৯০৫ জন এবং কারিগরি শিক্ষা বিভাগে ১০ জন প্রভাষক নেওয়া হবে। শিক্ষার পর বেশি নিয়োগ হবে প্রশাসন ক্যাডারে। প্রশাসনে ৩২৩ জনকে নিয়োগ দেওয়া হবে।

পুলিশে ১০০ জন, বিসিএস স্বাস্থ্যে সহকারী সার্জন ১১০ জন ও সহকারী ডেন্টাল সার্জন ৩০ জন নেওয়া হবে। পররাষ্ট্রে ২৫ জন, আনসারে ২৩ জন, অর্থ মন্ত্রণালয়ে সহকারী মহাহিসাবরক্ষক (নিরীক্ষা ও হিসাব) ২৫ জন, সহকারী কর কমিশনার (কর) ৬০ জন, সহকারী কমিশনার (শুল্ক ও আবগারি) ২৩ জন ও সহকারী নিবন্ধক হিসেবে ৮ জন নেওয়া হবে। পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগে পরিসংখ্যান কর্মকর্তা ১২ জন, রেলপথ মন্ত্রণালয়ে সহকারী যন্ত্র প্রকৌশলী ৪ জন, সহকারী ট্রাফিক সুপারিনটেনডেন্ট ১ জন, সহকারী সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রক ১ জন, সহকারী প্রকৌশলী (সিভিল) ২০ জন, সহকারী প্রকৌশলী (যান্ত্রিক) হিসেবে ৩ জনকে নেওয়া হবে।

তথ্য মন্ত্রণালয়ে সহকারী পরিচালক বা তথ্য কর্মকর্তা বা গবেষণা কর্মকর্তা ২২ জন, সহকারী পরিচালক (অনুষ্ঠান) ১১ জন, সহকারী বার্তা নিয়ন্ত্রক ৫ জন, সহকারী বেতার প্রকৌশলী ৯ জন, স্থানীয় সরকার বিভাগে বিসিএস জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলে সহকারী প্রকৌশলী ৩৬ জন, সহকারী বন সংরক্ষক ২০ জন। সহকারী পোস্ট মাস্টার জেনারেল পদে ২ জন, বিসিএস মৎস্য কর্মকর্তা ১৫ জন, পশুসম্পদে ৭৬ জন, কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ১৮৩ জন ও বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ৬ জন, বিসিএস বাণিজ্যে সহকারী নিয়ন্ত্রক ৪ জন নেওয়া হবে। পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ৪ জন, সহকারী খাদ্য নিয়ন্ত্রক ৬ জন ও সহকারী রক্ষণ প্রকৌশলী ২ জন, বিসিএস গণপূর্তে সহকারী প্রকৌশলী (সিভিল) ৩৬ জন ও সহকারী প্রকৌশলী (ই/এম) হিসেবে ১৫ জন কর্মকর্তাকে নিয়োগ দেওয়া হবে।

এএজে/এসএম