বাংলাদেশে আর গোলা পড়বে না, মিয়ানমারের প্রতিশ্রুতি
মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশের ভেতরে আর কোনো গোলা এসে পড়বে না বলে নিশ্চয়তা দিয়েছে দেশটি। পাশাপাশি মিয়ানমারের কোনো নাগরিকও আর বাংলাদেশে ঢুকবে না বলে নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এ তথ্য জানিয়েছেন। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৭তম অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যোগদান নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানান মন্ত্রী।
বিজ্ঞাপন
ড. মোমেন বলেন, মিয়ানমারে কিছুটা সংঘাত হচ্ছে। এটা জানার পর থেকে আমাদের দিক থেকে যেসব ব্যবস্থা নেওয়ার আমরা সেটা নিয়েছি। প্রথমত আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, কোনো রোহিঙ্গাকে আর বাংলাদেশে ঢুকতে দেব না। আমাদের বর্ডার গার্ডসহ অন্যান্য ফোর্সকে ইতোমধ্যে সতর্ক করে রেখেছি এবং তারা পুরোপুরি অ্যালার্ট।
• আরও পড়ুন : ফের বাংলাদেশ সীমান্তে মিয়ানমারের যুদ্ধবিমান থেকে গোলা নিক্ষেপ
মোমেন বলেন, আমরা মিয়ানমার সরকারকে বারবার অনুরোধ করেছি, তোমাদের গোলা যেন আমাদের দিকে না আসে। আমাদের এখানে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। তারা (মিয়ানমার) বক্তব্য শুনেছে। আমরা তাদের সরকারকে জানিয়েছি। শুনেছি ওখানে (মিয়ানমার) আরাকান আর্মি এবং মিয়ানমার আর্মির মধ্যে সংঘাত হচ্ছে এবং এরা অনেকে বর্ডারের খুব কাছে থাকে। ফলে এদের আক্রমণ করতে গিয়ে মিয়ানমার আর্মির বুলেট আমাদের দিকে আসছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা এ ব্যাপারে তাদের বলেছি, তোমরা এ ব্যাপারে সতর্ক হবে। তারা তাদের নিশ্চয়তা দিয়েছে। আমরা আশা করি, মিয়ানমার থেকে আর লোক আসবে না, আমরা বর্ডার সিল করে দিয়েছি।
প্রসঙ্গত, আগস্টের শেষ সপ্তাহে এবং সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম এলাকায় কয়েক দফায় মিয়ানমার থেকে মর্টার শেল ও গোলা এসে পড়ে। এ নিয়ে সীমান্তের বাসিন্দারা আতঙ্কে আছেন।
এদিকে, জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের বাইরে রোহিঙ্গা সমস্যা এবং টেকসই আবাসন বিষয়ে বাংলাদেশ পৃথক দুটি সাইড ইভেন্ট আয়োজন করবে বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
রোহিঙ্গা বিষয়ক উচ্চ পর্যায়ের সাইড ইভেন্ট ২২ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হবে। প্রধানমন্ত্রী ওই সাইড ইভেন্টে অংশগ্রহণ করবেন। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ওআইসি সেক্রেটারিয়েট, কানাডা, সৌদি আরব, তুরস্ক, গাম্বিয়া, মালদ্বীপ, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়া রোহিঙ্গা বিষয়ক সাইড ইভেন্ট কো-স্পন্সর করবে। জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাই কমিশনার, জাতিসংঘ মহাসচিবের মিয়ানমার বিষয়ক বিশেষ দূত এবং আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার মহাপরিচালক রোহিঙ্গা বিষয়ে সেখানে ব্রিফ করবেন।
• আরও পড়ুন : মিয়ানমার থেকে ফের বাংলাদেশে ঢুকছে রোহিঙ্গারা
রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশসহ মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংঘাতের কারণে বাংলাদেশের উদ্বেগের কথা বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরা হবে কি না জানতে চাইলে ড. মোমেন বলেন, আমরা এ ইস্যুটা তুলে ধরব। মিয়ানমার সরকার রাজি হওয়ার পরও রোহিঙ্গারা ফেরত যায়নি। আমরা এটাও তুলে ধরব। বিশ্ব সম্প্রদায়ের এ ব্যাপারে আরও জোর দেওয়া উচিত। কারণ এটার সমাধান তো হচ্ছে না। আমরা আরও বড় করে এটা তুলে ধরব।
মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংঘাত প্রত্যাবাসনকে অনিশ্চয়তায় ফেলছে কি না? এ প্রশ্নের জবাবে মোমেন বলেন, সেটা অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে বোঝা যাবে। হয়তো এটা আমাদের প্রত্যাবাসনে সাহায্য করতে পারে, আবার উল্টোটাও হতে পারে। উই ডোন্ট নো, আমরা সবসময় আশাবাদী।
এনআই/এনএফ