অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে নিউমার্কেটের অভ্যন্তরে উচ্ছেদ অভিযান চালিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি)। তবে অভিযানের শুরুতেই তড়িঘড়ি করে দোকান বন্ধ করে দেন ব্যবসায়ীরা। 

বৃহস্পতিবার (৮ সেপ্টেম্বর) দুপুর ২টা থেকে ৪টা পর্যন্ত এ অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযানে নেতৃত্ব দেন ডিএসসিসির সম্পত্তি কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মুনিরুজ্জামান।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, দুপুরে অভিযান শুরুর পরপরই ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতি টের পেয়ে দোকান বন্ধ করে দেন টং দোকানিরা। অনেক দোকানিই তড়িঘড়ি করে টং দোকান গুছিয়ে বড় দোকানের ভেতরে রেখে সটকে পড়েন। একপর্যায়ে টং দোকান না পেয়ে বড় দোকানগুলোতে নজরদারি করা হলে তারাও দোকান বন্ধ করে ব্যবসায়ী কার্যক্রম বন্ধ করে দেন। এ সময় পুরো নিউমার্কেট মুহূর্তেই ক্রেতা শূন্য হয়ে পড়ে। এমনকি ব্যবসায়ী ও দোকান কর্মচারীরা অনেকেই আশেপাশে অবস্থান করলেও কেউ দোকানি বা ব্যবসায়ী হিসেবে নিজেদের পরিচয় দেননি।

এরপর অভিযান শেষ হওয়ার পর ম্যাজিস্ট্রেট ও সিটি কর্পোরেশনের গাড়ি নিউমার্কেট ত্যাগ করলে সাড়ে ৪টার দিকে আবারও কিছু কিছু দোকান খুলতে দেখা যায়। এসময় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলতে চাইলেও কেউ রাজি হননি।

যা বলছে মালিক সমিতি

নিউমার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ডা. দেওয়ান আমিনুল ইসলাম শাহীন বলেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র নিউ মার্কেট পরিদর্শন করে স্পষ্ট বলে দিয়েছেন যেন আশির দশকের ঐতিহ্যবাহী এই মার্কেটের পরিবেশ  পরিচ্ছন্ন ও সুন্দর রাখা হয়। সেজন্যই আজকের এই অভিযান পরিচালিত হয়েছে। তবে অনেক সময় বিভিন্ন প্রভাবশালী মানুষ জোর জুলুম করে দোকানের সামনের এই খালি জায়গায় হকার বসিয়ে একটি অবৈধ ব্যবসা পরিচালনার চেষ্টা করেছেন। সেজন্যই দোকানের সামনের খালি জায়গা দখলে রাখতে ব্যবসায়ীরা বাড়তি দোকান বসিয়েছেন। তবে এটিও সম্পূর্ণ বেআইনি। সবশেষ এসব দোকান গুটিয়ে নিতে আমরা সমিতি থেকে চিঠিও দিয়েছি। এরপরও যারা দোকান সরিয়ে নেননি তারাই আজ উচ্ছেদ অভিযানে শাস্তির মুখোমুখি হয়েছেন।

অভিযান শুরুর পরপরই দোকান বন্ধ করে দেওয়ার ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, আমরা কাউকেই দোকান বন্ধ করার কথা বলিনি। আমি নিজেই মাইকে ঘোষণা দিয়েছি সর্বাত্মক সহযোগিতার জন্য। তাছাড়া অভিযানের সময় বহিরাগত অনেক মানুষ মার্কেটের ভেতরে অবস্থান করছিল। যাদের আমরা চিনি না। ফলে ব্যবসায়ীরাই বলেছেন, এরা যদি ভেতর থেকে না যান তবে আমরা দোকান খুলব না। এটি সম্পূর্ণ নিরাপত্তার কারণে হয়েছে। তাছাড়া যারা দোকানগুলো বন্ধ করেছেন সেটি তাদের ব্যক্তিগত বিষয়। সার্বিকভাবে মার্কেটের পরিবেশ সুন্দর রাখার দায়িত্বটা সবার।

অভিযানে ৯ মামলা ও ৭৯ হাজার টাকা জরিমানা

নিউমার্কেট ডিএসসিসির অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের অভিযানে ৯টি মামলা ও ৭৯ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সম্পত্তি কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মুনিরুজ্জামান। ঢাকা পোস্টকে তিনি বলেন, নিউ মার্কেটে আসা ক্রেতা সাধারণের চলাচল নির্বিঘ্ন করতে ও পরিবেশ সুন্দর রাখতেই এই অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। নকশা বহির্ভূতভাবে এবং সিটি কর্পোরেশনের অনুমতি ছাড়া এখানে বাড়তি দোকান বসানোর সুযোগ নেই। আমরা অভিযানের কয়েকদিন আগে অবৈধ দোকান সরিয়ে নেওয়ার জন্য মাইকে প্রচারণা চালিয়েছি। এরপরও যেসব দোকান সরানো হয়নি আজকের অভিযানে সেগুলো উচ্ছেদ করেছি ৷এ সময় ৯টি মামলা ও ৭৯ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

আরএইচটি/এসকেডি