ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ন্ত্রণ করে বাই সাইকেলবান্ধব যাতায়াত নিশ্চিত করার দাবিতে রাজধানীতে সাইকেল র‌্যালি করেছে বেশ কয়েকটি সংগঠন।

শনিবার (৩ সেপ্টেম্বর) ‘বিশ্ব ব্যক্তিগত গাড়িমুক্ত দিবস ২০২২’ পালন উপলক্ষে শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার পর্যন্ত সাইকেল র‌্যালির আয়োজন করা হয়। 

‘ব্যক্তিগত গাড়ির ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করি, পরিকল্পিত সাইকেল নেটওয়ার্ক গড়ে তুলি’ শিরোনামে সাইকেল র‌্যালিটির আয়োজন করে ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট, ঢাকা আইডিয়াল ক্যাডেট স্কুল, লিও ক্লাব অফ ঢাকা ওয়েসিস, ফিমেল সাইকেলার্স অব বাংলাদেশ, ইনস্টিটিউট অব ওয়েলবিইং বাংলাদেশের পলিসি ও বাংলাদেশ সাইকেল লেন বাস্তবায়ন পরিষদ।

ররর‌্যালি থেকে বলা জানানো হয়, ঢাকা বিষদ অঞ্চল পরিকল্পনা (২০১৬-২০৩৫) অনুযায়ী, ঢাকা শহরে প্রতিদিন প্রায় ২ লাখ মানুষ সাইকেলে যাতায়াত করে। নগরে সাইকেলবান্ধব যাতায়াত ব্যবস্থা নিশ্চিত হলে এ সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পাবে।

বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, মূল সড়কে সাইকেলের গতি ১৩.৪ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টায়। অর্থাৎ, ঢাকার যাতায়াত ব্যবস্থায় সাইকেলকে প্রাধান্য দিয়ে পরিকল্পনা গ্রহণ করা হলে দ্রুত ও নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছানো সম্ভব হবে। সেই সঙ্গে জ্বালানি ব্যয় হ্রাস, জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশের উন্নয়নসহ বিভিন্ন উপকার পাওয়া যাবে। তাই সাইকেলবান্ধব নগর যাতায়াত নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছেন তারা।

র‌্যালিপূর্ব আলোচনায় বক্তারা বলেন, ঢাকা শহরে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষ সাইকেলে যাতায়াত করে এবং তরুণ প্রজন্মের অনেকেই সাইকেল চালিয়ে যাতায়াতে আগ্রহী। কিন্তু সাইকেলবান্ধব অবকাঠামো না থাকায় তাদের ঝুঁকি নিয়ে সাইকেল চালাতে হচ্ছে অথবা সাইকেল চালাতে তারা নিরুৎসাহিত হচ্ছে। বর্তমানে যানজট ও  জ্বালানি সংকট আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সাইকেলে যাতায়াত সবার জন্য সহজ ও জনপ্রিয় করে তোলা প্রয়োজন।

বক্তারা আরও বলেন, স্ক্যান্ডিনেভিয়া এবং ইউরোপের অনেক ধনী ও আধুনিক শহরে সাইকেল অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি যাতায়াত মাধ্যম। ডেনমার্কের কোপেনহেগেন শহরে মূল যাতায়াতের ৪১ শতাংশ সংঘটিত হয় সাইকেলে। পৃথিবীর অনেক শহরে করোনাভাইরাস মহামারি মোকাবিলার অংশ হিসেবে শহরে সাইকেলে যাতায়াতের সুযোগ বৃদ্ধি করা হয়েছে। তার মধ্যে বোগোতা, ভ্যানকুভার, সিডনিসহ বিভিন্ন শহরে অস্থায়ী সাইকেল লেন তৈরির পাশাপাশি কিছু রাস্তা ব্যক্তিগত গাড়ির জন্য বন্ধ করে দিয়ে মানুষের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে, যাতে তারা শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে চলাচল করতে পারে।

র‌্যালি থেকে সাইকেলবান্ধব ঢাকা গড়ে তুলতে বিভিন্ন সুপারিশ তুলে ধরা হয়। এরমধ্যে রয়েছে- সাইকেলবান্ধব অবকাঠামো ও সাইকেল নেটওয়ার্ক তৈরি, যানবাহনের গতিসীমা নিয়ন্ত্রণ-যানবাহনের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ, সড়ক বিভাজিকার মধ্যে শুধুমাত্র পথচারী ও সাইক্লিস্টদের জন্য ফাঁকা জায়গা থাকা; সাইক্লিস্টদের জন্য নিরাপদ সড়ক পারাপারের ব্যবস্থা থাকার সুপারিশ করা হয়।

ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্টের পরিচালক গাউস পিয়ারীর সভাপতিত্বে এবং সহকারী প্রকল্প কর্মকর্তা মিঠুনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা আইডিয়াল ক্যাডেট স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা এম এ মান্নান মনির, লিও ক্লাব অফ ঢাকা ওয়েসিস পরিচালক আকিব দীপু, ফিমেল সাইকেলার্স অব বাংলাদেশের সিফাত হারুন, ইনস্টিটিউট অব ওয়েলবিইং বাংলাদেশের পলিসি অফিসার আ ন ম মাছুম বিল্লাহ ভুঁইয়া, বাংলাদেশ সাইকেল লেন বাস্তবায়ন পরিষদ আমিনুল ইসলাম টুব্বুস প্রমুখ।

এএসএস/এসএম