পুলিশ বলছে, যৌনকাজে অতিষ্ঠ হয়ে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন লাদেন

যাত্রাবাড়ীর গোলাপবাগের একটি বাসায় মাকসুদুর রহমান ওরফে ডায়না হত্যাকাণ্ডে শোয়েব আক্তার লাদেন নামে একজনকে গ্রেপ্তারের পর পুলিশ জানিয়েছে, যৌনকাজে অতিষ্ঠ হয়ে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন লাদেন। 

ডায়না তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ ছিলেন। তার ছয় ভাই-বোন এবং সবাই যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক। ডায়নার নিজেরও যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব ছিল। তবে গত দুই বছর তিনি যাত্রাবাড়ীর গোলাপবাগে একটি ভাড়া বাসায় থাকছিলেন। 

২৮ আগস্ট রাতে ওই বাসা থেকে ডায়নার অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পুলিশ বলছে, ১১ দিন ধরে লাশটি ঘরে পড়ে ছিল, কিন্তু আশপাশের কেউ টের পাননি। 

আজ (বুধবার) ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে ওয়ারী বিভাগের উপ-কমিশনার জিয়াউল আহসান তালুকদার বলেন, ২৭ আগস্ট বিকেলে রাজধানীর ওয়ারীর গোলাপবাগের একতলা বাড়ির ভিতরে কক্ষ থেকে ডায়নার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে সোমবার শেরপুরের নালিতাবাড়ি থেকে শোয়েব আক্তার লাদেনকে গ্রেপ্তার করা হয়। মঙ্গলবার আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন লাদেন। 

আরও পড়ুন : শাসন করায় প্রধান শিক্ষককে মেরে হাসপাতালে পাঠালেন অভিভাবকরা

সংবাদ সম্মেলনে হত্যাকাণ্ডের কারণ তুলে ধরে জিয়াউল আহসান বলেন,  লাদেন ডায়নার বাসাতে কাজ করতেন। অর্থের বিনিময়ে তাদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্কও হতো। হত্যাকাণ্ডের কিছু দিন আগে লাদেন বিয়ে করেন। বিয়ের পরও তাদের মধ্যে যৌনতা চলতো। একদিকে লাদেনের বিয়ে ও নতুন জীবনকে ডায়না মেনে নিতে পারছিলেন না। অন্যদিকে লাদেন চাচ্ছিলেন সম্পর্ক শেষ করে মুক্ত জীবনে ফিরতে। কিন্তু আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী ডায়না লাদেনকে ছাড়তেন না। তিনি লাদেনের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক চালিয়ে যাচ্ছিলেন।  

সংবাদ সম্মেলনে ওয়ারী বিভাগের উপ-কমিশনার জিয়াউল আহসান তালুকদার হত্যাকাণ্ডের বিস্তারিত তুলে ধরেন

পুলিশ কর্মকর্তা জিয়াউল আহসান আরও জানান, লাদেন জানিয়েছেন- ১৬ আগস্ট শারীরিক সম্পর্কের একপর্যায়ে বাসার টেবিলে থাকা হাঁতুড়ি দিয়ে ডায়নার মাথায় আঘাত করেন তিনি। মাথায় ও হাঁটুতে উপর্যুপরি আঘাত করে দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে বের হয়ে বন্ধ মূল ফটক টপকে পালিয়ে যান লাদেন।

এরপর দেশে থাকা ডায়নার ফুপাতো ভাই তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পেরে পুলিশে খবর দিলে, পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে। 

আরও পড়ুন : প্রেমিকাকে পরিবারের কাছে ফেরত দিয়েও প্রাণ দিতে হলো তরুণকে 

জিয়াউল আহসান বলেন, ডায়না আশপাশের কারো সঙ্গে মিশতেন না, আর একতলা ওই বাড়ির দেওয়াল অনেক উঁচু ছিল। তাই এতদিন মরদেহ পড়ে থাকার পরও আশপাশের কেউ টের পায়নি।

জেইউ/এনএফ