দেশে ১১১টি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল আছে : স্বাস্থ্যমন্ত্রী
দেশে বর্তমানে ১১১টি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও ৩৫০টি নার্সিং ইনস্টিটিউট আছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
সোমবার (২৯ আগস্ট) জাতীয় সংসদে বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদের সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ তথ্য জানান। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশনের শুরুতে প্রশ্নোত্তর পর্ব অনুষ্ঠিত হয়।
বিজ্ঞাপন
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, বিএনপির সময় দেশে কয়টা হাসপাতাল ছিল? এখন কয়টা হাসপাতাল আছে সেটা জানেন? দুই একটা বলতে হয়। দেশে বর্তমানে ১১১টি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল আছে। আপনাদের সময় ১০টাও ছিল না। এখন নার্সিং ইনস্টিটিউট আছে ৩৫০টি। আপনাদের সময় সিট ছিল ৬৫০টি। এখন ৩৪ হাজার নার্সিং আসন রয়েছে।
হারুনুর রশীদ বলেন, বিগত সরকারের দোহাই দিয়ে আর কোন লাভ নেই। কারণ ১৫ বছর টানা আপনারা ক্ষমতায়। দেশে স্বাস্থ্য সেবা পাচ্ছে না বলেই মানুষ প্রতিবেশী ভারতে চিকিৎসার চলে যাচ্ছে। এতে দেশ থেকে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার পাচার হচ্ছে। সেই সুযোগ সৃষ্টি করার জন্য আপনারা স্বাস্থ্যখাত দুর্বল করে রাখছেন কি না জানি না।
জবাবে বিএনপির আমলে স্বাস্থ্য সেবা খাতে কোন উন্নয়ন হয়নি দাবি করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আপনারা (বিএনপি) কিছুই তৈরি করেননি। গত ১৫ বছরে এ খাতে যে উন্নয়ন হয়েছে তাতে দেশের গড় আয়ু ৭৩ বছর, এমডিজি অর্জন হয়েছে। ভ্যাকসিন হিরো হয়েছেন। আপনাদের সময় একটা পুরস্কারের মুখও কেউ দেখেনি। সেটা ভুলে গেলে চলবে না।
২০২১ সালের জুনে ভারতীয় গণমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার একটি প্রতিবেদন বলেছে, ভারতে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীর ৫৪ দশমিক ৩ শতাংশ বাংলাদেশি।
বাংলাদেশে একই রোগের ওষুধে কোম্পানি ভেদে দামের তারতম্য আছে। এটার সমন্বয় করতে সরকার কোন উদ্যোগ নেবে কি না জাতীয় পার্টির পীর ফজলুর রহমানের এমন এক প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ওষুধের দাম নির্ধারণ পদ্ধতি অনুযায়ী ওষুধ প্রশাসন দাম নির্ধারণ করে দেয়। তার মধ্যে এর কাঁচামাল যেগুলো আমদানি করা হয় এবং অন্যান্য উৎপাদন খরচ ধরে ভ্যাট যোগ করে একটা মূল্য ঠিক করে দেওয়া হয়। কিন্তু ওষুধের তার পরের দামটা (ভোক্তা পর্যায়ে) ওষুধ প্রশাসন দেখে না। ভ্যাট নির্ণয়টা সঠিক আছে কি না, সেটা তার এখতিয়ার। এসেনশিয়াল ড্রাগের ১৩০টির মতো ওষুধের দাম আমরা নিয়ন্ত্রণ করে থাকি। বাকি শত শত ওষুধের দাম আমরা নিয়ন্ত্রণ করি না।
তিনি বলেন, আসলে দামের এতো তারতম্য হওয়া উচিত নয়। অনেকেই কাঁচামাল ইউরোপ থেকে আনে। তাদের দাম বেশি। কেউ ভারত ও চীন থেকে আনে, তাদের আবার দাম একটু কম থাকে। এটারও একটা তারতম্য হয়। তারপরও দামের এত তারতম্য হওয়া উচিত নয়। আমরা বিষয়টি দেখব।
জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য পনির উদ্দিন আহমেদের প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের প্রতি ১০ হাজার জনগণের জন্য চিকিৎসা সেবায় ১০জন জনবল রয়েছে। ডাক্তার, নার্স ও অন্যান্য মিলে। কিন্তু বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা অনুযায়ী এটা দ্বিগুণের বেশি থাকা উচিত। আমরা চেষ্টা করছি এই জনবল পূরণ করতে।
জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য সৈয়দ আবু হোসেন বাবলার সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, দেশে হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার মিলে ১০ হাজারের মতো রয়েছে। এখানে কিছু কিছু জায়গায় ভালো চিকিৎসা আছে, কিছু জায়গায় দিচ্ছে না। আর অনুমোদনহীনও আছে। সেগুলোর বিরুদ্ধে দেশব্যাপী চলা অভিযানে প্রায় ১ হাজার ৭০০ লাইন্সেসবিহীন প্রতিষ্ঠান বন্ধ করা হয়েছে। পাশাপাশি একটা আইন পাস করেছি। যার মাধ্যমে বেসরকারি হাসপাতালের অনিয়মের বিরুদ্ধে শাস্তির বিধান রয়েছে।
পরে সম্পূরক প্রশ্নে জাপার আরেক সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, স্বাস্থ্যমন্ত্রী প্রশ্নের জবাবে যে কথা বলেছেন, তাতে বলতে হয় সাপ হয়ে দংশন করেন, ওঝা হয়ে ঝাড়েন। অর্থাৎ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সামনেই সারাদেশে ভুয়া, ভেজাল ক্লিনিকগুলো গড়ে উঠছে। যখন গড়ে উঠে তখন কেউ দেখার থাকে না, শত শত হাজারে। যখন কেউ মারা যায় কিংবা গণমাধ্যমে যাদের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ হয়, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
সরকার দলীয় সংসদ সদস্য মোসলেম উদ্দিনের প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, কমিউনিটি ক্লিনিক এখন থেকে চার কক্ষের হবে। প্রথমিকভাবে জরাজীর্ণগুলো নতুনভাবে নির্মাণ করা হবে। পর্যায়ক্রমে ১৪ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিকই এ ডিজাইনে হবে।
এসআর/এসকেডি