বেশি দামে মেডিকেল যন্ত্রপাতি কেনার মাধ্যমে ৯ কোটি ১৫ লাখ ৩০ হাজার ৪২৫ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা একটি মামলায় চট্টগ্রামের সাবেক সিভিল সার্জন ডা. সরফরাজ খান চৌধুরীকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে মামলার অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।

রোববার (২৮ আগস্ট) চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ ও স্পেশাল জজ ডা. বেগম জেবুননেছার আদালত এই আদেশ দেন। এর আগে আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন ডা. সরফরাজ। 

বিষয়টি ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেছেন দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) কাজী ছানোয়ার আহমেদ (লাভলু)। তিনি বলেন, আদালতে আত্মসমর্পন করে জামিন আবেদন করেন সাবেক সিভিল সার্জন ডা. সরফরাজ। আদালত উভয়পক্ষের শুনানি শেষে জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন। এছাড়া বাকি ছয় আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। 

মামলার অন্য আসামিরা হলেন- জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র কনসালট্যান্ট (মেডিসিন) ডা. মো. আব্দুর রব, জুনিয়র কনসালট্যান্ট (অর্থোপেডিক সার্জারি) ডা. মো. মইন উদ্দিন মজুমদার, সিনিয়র কনসালট্যান্ট (সার্জারি) ডা. বিজন কুমার নাথ।

ঠিকাদাররা হলেন- যন্ত্রপাতি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান বেঙ্গল সায়েন্টিফিক অ্যান্ড সার্জিক্যাল কোম্পানির স্বত্বাধিকারী মো. জাহের উদ্দিন সরকার, মেসার্স আহম্মদ এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মুন্সী ফারুক হোসেন ও এএসএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও আফতাব আহমেদ।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০১৪ সালের ২৯ মে থেকে ২০১৬ সালের ৩০ জুনের মধ্যে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে বিভিন্ন যন্ত্রপাতি সরবরাহের নামে ৯ কোটি ১৫ লাখ ৩০ হাজার ৪২৫ টাকা আত্মসাৎ হয়। আসামিরা প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে মেসার্স ওয়ার্সি সার্জিক্যাল, জেনেটিক ট্রেডিং ও রিলায়েন্স সলিউশন লিমিটেডের ভুয়া প্যাডে ভুয়া স্বাক্ষর করে বেশি দামে জাল বাজারদরের কাগজপত্র তৈরি করেন।

এগুলো ব্যবহার করে আসামিরা ২০১৪-১৫ অর্থবছরে বাজেট বরাদ্দ ও বার্ষিক ক্রয় পরিকল্পনা ছাড়াই তিনটি পৃথক দরপত্র দেখিয়ে বাজার দরের অধিক মূল্যে এমএসআর (ভারি যন্ত্রপাতি) সরবরাহের মাধ্যমে ১ কোটি ৬৮ লাখ ৯৫ হাজার ৪২৫ টাকা, ১ কোটি ৩০ লাখ ৪০ হাজার টাকা ও ৬ কোটি ১৫ লাখ ৯৫ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেন। সব মিলিয়ে ৯ কোটি ১৫ লাখ ৩০ হাজার ৪২৫ টাকা আত্মসাৎ হয়েছে বলে দুদকের তদন্তে বেরিয়ে এসেছে।

এই ঘটনায় ২০১৯ সালের ২৫ নভেম্বর দুদকের চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ মামলা দায়ের করা হয়েছিল। আসামিদের মধ্যে সাবেক সিভিল সার্জনসহ চার জন চিকিৎসক ও তিন জন ঠিকাদার রয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি ৪০৯/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১/১০৯ ধারা এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় অভিযোগ আনা হয়। দুদকের তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিচালক মোহাম্মদ সিরাজুল হক চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতে সম্প্রতি চার্জশিটটি দাখিল করেন। 

কেএম/জেডএস