অল্প নয়, অধিকসংখ্যক রোহিঙ্গা নেওয়ার আহ্বান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর
মিয়ানমারে নির্যাতনের শিকার হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, যদি প্রস্তাব আসে তাহলে অল্পসংখ্যক নয়, অধিকসংখ্যক রোহিঙ্গাকে নেওয়ার জন্য বলব। এতে আমাদের সুবিধা হবে।
রোববার সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত ‘বলপ্রয়োগে বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকদের সমন্বয় ব্যবস্থাপনা ও আইনশৃঙ্খলা–সংক্রান্ত জাতীয় কমিটি’র পঞ্চম সভা শেষে এ কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
বিজ্ঞাপন
মন্ত্রী বলেন, ‘আজ সিদ্ধান্ত হয়েছে যে যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্য কোনো দেশ যদি রোহিঙ্গাদের নিতে আগ্রহ প্রকাশ করে, তারা কী পরিমাণ নেবে তা খতিয়ে দেখতে হবে। আমরা সেগুলোই খতিয়ে দেখছি। এখনো কোনো প্রস্তাব আমাদের কাছে আসেনি। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এটা নিয়ে কাজ করছে। এ রকম যদি কেউ আগ্রহ প্রকাশ করে, তাদের আমরা বলব অধিক সংখ্যক নেওয়ার জন্য। অধিক সংখ্যক নিলে এ সমস্যা দ্রুত শেষ হবে, সেটাই ভালো।’
তিনি বলেন, ‘মিয়ানমারের সঙ্গে আমরা ডে ওয়ান থেকেই আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি। তখনকার সরকার প্রধান অং সান সুচির সঙ্গে আমিও ব্যক্তিগতভাবে আলোচনা করেছি, আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রীও করেছেন। এগুলো দ্রুত শেষ করতে আমরা আলোচনার টেবিলে যাচ্ছি, প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। আমরা আশা করি, এ সমস্যা আমরা শেষ করতে পারব।’
আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, ‘রোহিঙ্গারা দীর্ঘদিন বাংলাদেশে অবস্থান করার কারণে আমরা একটি অস্বস্তিকর পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছি। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মাঝে মধ্যেই আমরা রক্তপাত দেখছি, সন্ত্রাস দেখছি। মিয়ানমার থেকে মাদকের আনাগোনাও আমরা লক্ষ্য করছি। এটার জন্য গোয়েন্দা তৎপরতা এবং অভ্যন্তরীণ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বন্ধে আমরা তথ্যভিত্তিক অভিযান পরিচালনার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
‘অভিযানে পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, আনসার তো আছেই- প্রয়োজনে আমাদের সেনাসদস্যরাও এতে অংশ নেবেন। বাস্তবতার নিরিখে এবং সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে যৌথভাবে ক্যাম্পের ভেতর এবং বাইরে টহল ও অভিযান চালানো হবে’- বলেন তিনি।
ক্যাম্পের ভেতরে বারবার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘এগুলো কেন হচ্ছে আমরা তা খতিয়ে দেখছি। পাশাপাশি আরও সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য যা প্রয়োজন সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। সশস্ত্র বাহিনী কর্তৃক ক্যাম্পের চতুর্দিকে নিরাপত্তা বেষ্টনী স্থাপনের কাজ প্রায় শেষের দিকে। টহল রাস্তাও কিছুটা বাকি আছে, শেষের দিকে। ওয়াচ টাওয়ার সেখানে হবে। তারা যেন সার্বক্ষণিক নজরদারিতে থাকে সে ব্যবস্থা আমরা করছি।’
তিনি বলেন, ‘ক্যাম্পের ভেতরে জন্মনিরোধের জন্য একটি এসওপি তৈরির কাজ চলছে। স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়, ইসলামিক ফাউন্ডেশন এ নিয়ে কাজ করছে। ঘরে ঘরে স্বেচ্ছাসেবকরা কাজ করছেন এবং সচেতন করছেন। মসজিদের ইমামরাও এ বিষয়ে উপদেশ দিচ্ছেন।’
সীমান্ত এলাকার নদীতে চলাচল করা ট্রলারের নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘নাফ নদী মাদক আনা-নেওয়ার রুট। সেখানে মাছ ধরার ট্রলারের নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করতে সিদ্ধান্ত হয়েছে। ক্যাম্পের ভেতরে এবং বাইরে মাদক চোরাচালান বন্ধে অভিযান আরও জোরদার করা হবে।’
এসএইচআর/এমএইচএস