আজিমপুর কবরস্থানে দাফন করা হয় লেখক মুশতাক আহমেদকে/ ছবি: ঢাকা পোস্ট

রাজধানীর আজিমপুর কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়েছে লেখক মুশতাক আহমেদকে। এর আগে, এশার নামাজের পর রাজধানীর লালমাটিয়ার মিনার মসজিদে তার নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।

শুক্রবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) রাত ৯টার দিকে মুশতাক আহমেদের দাফন সম্পন্ন হয়েছে বলে ঢাকা পোস্ট-কে নিশ্চিত করেছেন রাষ্ট্রচিন্তা মঞ্চের সদস্য দিদারুল ভূঁইয়া। তিনি বলেন, ‘রাজধানীর আজিমপুর কবরস্থানে মুশতাক আহমেদকে দাফন করা হয়েছে। এর আগে, এশারের নামাজের পর লালমাটিয়ার মিনার মসজিদে তার নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় তার পরিবারের সদস্যরাসহ বিশিষ্টজনরা উপস্থিত ছিলেন।

বিকেলে দিদারুল ভূঁইয়া বলেন, দুপুর সাড়ে ১২টায় শহীদ তাজউদ্দিন হাসপাতাল থেকে ময়নাতদন্ত শেষে মুশতাক আহমেদের মরদেহ তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এরপর মরদেহ মোহাম্মদপুরের বাবর রোডের আল মারকাজুল ইসলাম বাংলাদেশে রাখা হয়।

কারাবন্দি লেখক মুশতাক আহমেদ বৃহস্পতিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ৮টার দিকে মৃত্যুবরণ করেন। তিনি রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্রের অভিযোগে র‌্যাবের করা মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কাশিমপুর কারাগারে ছিলেন।

কবরে নামানো হচ্ছে মুশতাকের মরদেহ/ ছবি: ঢাকা পোস্ট

মুশতাকের দেহে মেলেনি আঘাতের চিহ্ন

কারাগারে মৃত্যুবরণ করা লেখক মুশতাক আহমেদের ময়নাতদন্ত শুক্রবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুর সাড়ে ১২টায় শেষ হয়েছে। তার শরীরে আঘাতের কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি। গাজীপুরে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করা হয়। মৃত্যুর ঘটনায় কারাগারের পক্ষ থেকে গাজীপুর মেট্রোপলিটন সদর থানায় অপমৃত্যু মামলা করা হয়েছে।

গাজীপুরে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. শাফী মোহাইমেন বলেন, ‘মৃত অবস্থায় তাকে হাসপাতালে আনা হয়। গায়ে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন তৈরির পর বিস্তারিত বলা যাবে।’

সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুতকারী গাজীপুর মেট্রোপলিটন সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সৈয়দ বায়েজীদ বলেন, ‘সাড়ে ১০টার দিকে লেখক মুশতাক আহমেদের সুরতহাল করা হয়েছে। তার পিঠে যেকোনো সময় ‘ঘা’ হয়েছে এমন দাগ পাওয়া গেছে। ডান হাতে লালচে কালো ছোট দাগ রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, হাসপাতালে আনা বা গাড়িতে উঠানোর সময় এ দাগ হয়ে থাকতে পারে।’

হাসপাতাল মর্গে মরদেহের জন্য অপেক্ষমাণ লেখক মুশতাক আহমেদের আত্মীয় ডা. নাফিছুর রহমান বলেন, ‌‘তার মরদেহ আমি নিজে দেখেছি। কোনো সমস্যা চোখে পড়েনি। ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। প্রতিবেদন ছাড়া আমি এ ব্যাপারে কী বলব? আমাদের কোনো অভিযোগ নেই। আমরা কোনো মামলাও করব না।’

এদিকে, কারাগারে মুশতাক আহমেদের মৃত্যুর বিষয়টিকে ‘রাষ্ট্রীয় হত্যাকাণ্ড’ বলে উল্লেখ করেছে প্রগতিশীল ছাত্রজোট। এ লেখকের মৃত্যু তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও শাহবাগে আন্দোলনও করেছেন। আন্দোলনে পুলিশের লাঠিচার্জে প্রগতিশীল ছাত্রজোটের অন্তত ১৫ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। এছাড়া তিন জনকে আটক করা হয়েছে।

এমএসি/এফআর