বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে সরকারি অফিসের কর্মঘণ্টা এক ঘণ্টা কমানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। এতে খুশি সরকারি কর্মকর্তারা। তবে, সকাল ৯টার পরিবর্তে ৮টায় অফিস শুরুর সিদ্ধান্তে অখুশি অনেক সরকারি কর্মকর্তা।

দিনের আলোর সর্বোচ্চ ব্যবহার এবং বিদ্যুতের ব্যবহার কমানোর জন্য সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত অফিস সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। গতকাল সোমবার সরকার এ সিদ্ধান্তের কথা জানায়। কাল বুধবার থেকে এটি কার্যকর হবে।

এতদিন সরকারি চাকরিজীবীরা সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত অফিস করতেন। সেই হিসাবে অফিস সময় এক ঘণ্টা কমছে।

মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট) বেশ কয়েকজন সরকারি চাকরিজীবী ঢাকা পোস্টকে জানান, কর্মঘণ্টা কমানোর ফলে সুবিধা হলেও সকাল ৮টায় অফিস শুরুর সিদ্ধান্তে কিছুটা অসুবিধায় পড়বেন তারা।

>> বুধবার থেকে ব্যাংক খোলা ৯টা-৪টা

শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঢাকা পোস্টকে বলেন, সকাল ৬টায় ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে নাশতা করি। এরপর ৭টায় বাচ্চাদের স্কুলে নিয়ে যাই। আমার দুই সন্তান আলাদা দুটি স্কুলে পড়ে। তাদেরকে ৮টার মধ্যে স্কুলে পৌঁছে দিয়ে তারপর অফিসে যাই। আগামীকাল (বুধবার) সকাল ৮টা থেকে অফিস। তাই বাচ্চাদের স্কুলে পৌঁছে দিতে পারব না। এটি আমার জন্য অসুবিধা হয়ে গেল। 

তবে কর্মঘণ্টা এক ঘণ্টা কমানোর ফলে দ্রুত বাসায় ফেরা যাবে, সেটা ভালো দিক বলে মনে করেন ওই কর্মকর্তা। 

নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি প্রতিদিন সকাল ৬টা থেকে সাড়ে ৬টার মধ্যে ঘুম থেকে উঠে জগিং করতে বের হই। বাসায় ফিরতে ৭টা বেজে যায়। নাশতা করে বাসার কিছু কাজ সেরে অফিসে যাই। এখন অফিসের সময় এগিয়ে আনায় ঝামেলা হয়ে গেল।

>> বুধবার থেকে অফিস সকাল ৮টা-বিকেল ৩টা

তিনি আরও বলেন, আগে ৫টার পর বাসার দিকে রওনা দিতাম, এখন ২ ঘণ্টা আগে অফিস থেকে বের হতে পারব। একদিকে একটু অসুবিধা হলেও আরেকদিকে সুবিধা হয়েছে। 

কৃষি মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, বাসার সবকিছু ম্যানেজ করে সকালে অফিসে আসি। এক ঘণ্টা এগিয়ে আনার ফলে দ্রুত অফিসে আসতে হবে। হয়তো একটু অসুবিধা হবে। তবে কর্মঘণ্টা কমানোর ফলে দ্রুত বাসায় ফিরতে পারব। পরিবারকে সময় দিতে পারব। 

একই মন্ত্রণালয়ের আরেক কর্মকর্তা ঢাকা পোস্টকে বলেন, সকাল ৮টায় আমার বাচ্চার স্কুল। অন্যদিকে একই সময়ে আমার অফিসও শুরু। তাই সিদ্ধান্তটি আমার জন্য ইতিবাচক হয়নি। যেহেতু সরকারি সিদ্ধান্ত, মেনে নিতেই হবে।

তবে কেউ কেউ সরকারের দুই সিদ্ধান্তেই খুশি। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও গণসংযোগ কর্মকর্তা মো. কামাল হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে এই মতামতের বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই। সিদ্ধান্ত কেমন হয়েছে, এটার ফলাফল পরে বোঝা যাবে। তবে আমি মনে করি, এটা ভালো সিদ্ধান্ত।

>> শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সাপ্তাহিক ছুটি শুক্র-শনিবার

তিনি বলেন, এখন সাড়ে ৫টায় সকাল হয়। আমরা ৯টার জন্য বসে থাকি। প্রায় সাড়ে ৩ ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয় অফিস করার জন্য। এখন ৮টায় যদি অফিসে যাই, ভালোই হবে। আগেভাগে বাসায় চলে যেতে পারব।

কামাল হোসেন বলেন, এখন মার্কেটগুলো রাত ৮টায় বন্ধ হয়। বাজার করতে গিয়ে ঝামেলায় পড়তে হতো। এখন ৩টা পর্যন্ত অফিস হওয়ায় বাজার করা বা পারিবারিক অন্য কাজের সুযোগ পাওয়া যাবে।

তিনি আরও বলেন, দিনের আলো ব্যবহারে সরকারের যে পদক্ষেপ, সেটাও কাজে লাগবে। ৯টার দিকে গরম পড়তে শুরু করে। যদি ৮টা থেকে অফিস শুরু করি তাহলে এসি না চালিয়েও আমরা এক ঘণ্টা অফিস করতে পারি। সবমিলিয়ে এটা ভালো সিদ্ধান্ত।

>> গ্রামে মধ্যরাত থেকে ভোর পর্যন্ত টানা বিদ্যুৎ সরবরাহের নির্দেশ

এসএইচআর/ওএফ