রাজধানীর হাতিরঝিল থানায় মারা যাওয়া সুমন শেখের মরদেহ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের মর্গে পড়ে আছে। পরিবার বলছে, পুলিশ তাদের বলেছে, মরদেহ গ্রামের বাড়িতে নিয়ে দাফন করতে হবে। এজন্য তারা মরদেহ বুঝে নিচ্ছে না। তবে পুলিশ বলছে, ওই পরিবার কারও না কারও ইন্ধনে মরদেহ নিচ্ছে না।

রোববার (২১ আগস্ট) সন্ধ্যায় এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করে পুলিশের তেজগাঁও বিভাগ। সেখানে উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) এইচ এম আজিমুল হক বলেন, শনিবার রাতে ময়নাতদন্তের পর থেকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের মর্গে লাশ রাখা হয়েছে পরিবারের সদস্যদের হাতে হস্তান্তর করার জন্য। কিন্তু পরিবারের প্রকৃত অভিভাবক না আসায় হস্তান্তর করা সম্ভব হয়নি। 

তিনি বলেন, আজ (শনিবার) ২১ আগস্ট সারাদিন সুমন শেখের স্ত্রী, তার ভাই ও শ্যালককে ফোন দেওয়া হলেও তারা কেউ আসেননি। এ ছাড়া বিভিন্ন সময় তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাদের ব্যবহৃত ফোনটি অন্যকে দিয়ে রিসিভ করিয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, প্রকৃত অভিভাবক না পাওয়া পর্যন্ত সুমন শেখের লাশ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের মর্গের হিমঘরে রাখা হবে। লাশ না নেওয়ার প্রক্রিয়াটি যদি দীর্ঘ হয় তাহলে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে এ বিষয়ে পরে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে রাখা হয়েছে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ডিসি আজিমুল হক বলেন, আজ শনিবার আমার বিভাগের পুলিশ কর্মকর্তারা সুমন শেখের পরিবারের সদস্যদের ফোন দিয়েছেন। তারা ফোন ধরে আসছি-আসব করছেন। অনেক সময় ফোনও ধরছেন না। লাশ নিতে অপারগতা প্রকাশ করছেন তারা। তাদের পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন সময় সংবাদমাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের বিভ্রান্তিমূলক তথ্য দিচ্ছেন।

পরিবারের সদস্যরা অজানা কারণে লাশ নিতে বিলম্ব করছেন জানিয়ে তিনি বলেন, এ বিষয়ে তারা রহস্য তৈরির চেষ্টা করছেন। পেছন থেকে কেউ ইন্ধন দিচ্ছে বলেও ধারণা করা হচ্ছে।

পরিবার দাবি করেছে, শনিবার সকালে থানায় গিয়ে তারা সুমনের জন্য নাশতা দিয়েছে। এরপর থানা থেকে বলা হয় আসামিকে আদালতে নিয়ে যাওয়া হবে। আপনারা আদালতে যান।

এ বিষয়ে তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার বলেন, তাদের এ দাবি সম্পূর্ণ মিথ্যা।

একটি মামলায় শুক্রবার বিকেলে গ্রেপ্তার হন সুমন শেখ। ওইদিন রাত সাড়ে ৩টার দিকে তিনি গলায় ফাঁস নেন বলে দাবি করছে পুলিশ। তবে সুমনের পরিবার তা মানতে নারাজ। তারা তদন্তপূর্বক মৃত্যুর সঠিক কারণ জানতে চান।    

এ ঘটনায় দুই পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বরখাস্ত পুলিশ সদস্যরা হলেন, হাতিরঝিল থানার ডিউটি অফিসার এসআই হেমায়েত হোসেন ও কনস্টেবল মো. জাকারিয়া।

তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল জোনের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) হাফিজ আল ফারুককে প্রধান করে এ ঘটনায় তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে পুলিশ।

এমএসি/আরএইচ