নায়ক শান্তর ১৫ কোটি টাকার সম্পদের খোঁজ, ৫৮ ব্যাংককে চিঠি
চলচ্চিত্র অভিনেতা ও বিতর্কিত চেয়ারম্যান সেলিম খানের ছেলে শান্ত খানের প্রায় ১৫ কোটি টাকার সন্দেহজনক স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের খোঁজ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
এসব সম্পদের সত্যতা যাচাই করতে ৫৮টি দেশি-বিদেশি ব্যাংকের এমডি ও সিইও এর কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
বুধবার (১৭ আগস্ট) দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে সংস্থাটির সহকারী পরিচালক আতাউর রহমান সরকারের সই করা চিঠিতে বিভিন্ন তথ্য চাওয়া হয়েছে। সংস্থাটির ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গত ১ আগস্ট চাঁদপুরের ১০নং লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. সেলিম খানের বিরুদ্ধে ৩৪ কোটি ৫৩ লাখ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করে দুদক। এরপরই তার ছেলের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু হয়।
নায়ক শান্ত খানের ব্যাংক হিসাব তলব করা চিঠিতে বলা হয়, শান্ত খানের বিরুদ্ধে অবৈধ ব্যবসা ও কার্যক্রমের মাধ্যমে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে। এই অভিযোগের সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে ব্যাংকগুলোতে তার নিজের ও যৌথ নামীয় সঞ্চয়ী, চলতি হিসাব, এফডিআর, ডিপিএস ইত্যাদির হিসাব বিবরণী, হিসাব খুলার ফরম ও কেওয়াইসি পাঠাতে বলা হয়েছে। এছাড়া ঋণ হিসাব সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য, জামানত ও ঋণ পরিশোধের তথ্য, সঞ্চয়পত্র ও ক্রেডিট কার্ড সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য চাওয়া হয়েছে।
>> বিতর্কিত সেলিম চেয়ারম্যানকে ৩ সপ্তাহের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ
অভিযোগের সুষ্ঠু অনুসন্ধানের জন্য দুদক আইন-২০০৪ এর ধারা ১৯ ও দুদক বিধিমালা-২০০৭ এর বিধি ২০ অনুযায়ী ব্যাংক থেকে ওইসব তথ্য চাওয়া হয়েছে। যা আগামী ৩১ আগস্টের মধ্যে ওইসব তথ্য ও রেকর্ডপত্রের সত্যায়িত ফটোকপি অভিযোগটির অনুসন্ধান কর্মকর্তার কাছে পাঠানোর জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
দুদকের অন্য একটি সূত্রে জানা যায়, সেলিম খানের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান চলাকালীন সময়ে তার ছেলে মো. শান্ত খানের নামে ব্যবসার পুঁজি, কোম্পানির শেয়ার, জমি ও বাড়ির মূল্য, স্বর্ণালংকার ও আসবাবপত্রসহ মোট ১৪ কোটি ৮৬ লাখ টাকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ অর্জনের তথ্য পাওয়া গেছে। যে কারণে তার সম্পদের উৎসের সঠিকতা যাচাইয়ের জন্য পৃথক অনুসন্ধান শুরু করেছে দুদক।
সেলিম খানের বিরুদ্ধে মামলা বিষয়ে দুদক সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেছিলেন, সেলিম খানের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় কমিশনের অনুমোদনক্রমে তার বরাবর সম্পদ বিবরণী দাখিলের নোটিশ জারি করা হয়। এরপর সম্পদ বিবরণী দাখিল করলে তার দাখিল করা সম্পদ বিবরণী যাচাই শেষে ৬৬ লাখ ৯৯ হাজার ৪৭৭ টাকার সম্পদের তথ্য গোপনের প্রমাণ পাওয়া গেছে। এছাড়া দুদকের অনুসন্ধানে ৩৪ কোটি ৫৩ লাখ ৮১ হাজার ১১৯ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের প্রমাণ পাওয়ায় তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪ এর ২৬ (২) ও ২৭ (১) ধারায় মামলার অনুমোদন দেওয়া হয়।
অবৈধ সম্পদের প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়ায় ২০২০ সালের ২০ সেপ্টেম্বর সেলিম খান ও তার স্ত্রী শাহানারা বেগমের সম্পদের হিসাব চেয়ে নোটিশ দিয়েছিল দুদক।
আরএম/ওএফ