৩০০ টাকা মজুরির দাবি না মানলে আন্দোলন চলবে
দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতির এই সময়ে দৈনিক ১২০ টাকা মজুরি দিয়ে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন চা শ্রমিকরা। তাই শ্রমের ন্যায্য মূল্য চান তারা। বেশ কিছুদিন ধরে দৈনিক মজুরি ৩০০ টাকার দাবি জানিয়ে আন্দোলন করছেন শ্রমিকরা। এ দাবির বিষয়ে এখন বৈঠক চলছে রাজধানীর শ্রম অধিদপ্তরে। বৈঠকের বিরতিতে এসে শ্রমিক নেতারা বলেছেন, দাবি না মানলে আন্দোলন চলবে।
বুধবার (১৭ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর বিজয়নগরে শ্রম অধিদপ্তরে চা বাগানের মালিক ও শ্রমিক এবং সরকারি কর্তৃপক্ষের মধ্যে বৈঠক শুরু হয়। বাংলাদেশ শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খালেদ মামুন চৌধুরী এতে সভাপতিত্ব করছেন।
বিজ্ঞাপন
বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল ঢাকা পোস্টকে বলেন, চা-শ্রমিকেরা কোনোরকম খেয়ে না খেয়ে সংসার চালাচ্ছেন। এখন দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে শ্রমিকদের তিন বেলা খাবারও জুটছে না। তাই আমরা ৩০০ টাকা মজুরির ন্যায্য দাবিতে আন্দোলন করছি। এ দাবি না মানা পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে।
শ্রমিক নেতারা জানান, চা শ্রমিকদের সঙ্গে সর্বশেষ দ্বি-বার্ষিক চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়েছে ২০২০ সালের ডিসেম্বরে। এরপর চা শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা ২০২১ সালের ১৯ জানুয়ারি বাংলাদেশ চা সংসদের কাছে ২০ দফা দাবি নামায় ৩০০ টাকা দৈনিক মজুরি দাবি করেন। এ নিয়ে দফায় দফায় এ পর্যন্ত ১৪টি বৈঠক করেছে শ্রম অধিদপ্তর। কিন্তু কোনো সমাধান দিতে পারেনি।
এ সময় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করে চা শ্রমিকরা বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমাদের দাবি, ন্যায্য মজুরি নির্ধারণ করে দেবেন। আপনি যে সিদ্ধান্ত নেবেন আমরা তা মেনে নেব।
জানা গেছে, গত ৯ আগস্ট থেকে চার দিন দুই ঘণ্টা করে কর্মবিরতির পর শনিবার পূর্ণদিবস কর্মবিরতি বা ধর্মঘট পালন করেছেন মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ ও সিলেটসহ দেশের ২৪১টি চা বাগানের শ্রমিকরা। রোববার সাপ্তাহিক ছুটি ও সোমবার জাতীয় শোক দিবসের জন্য দুদিন কর্মসূচি শিথিল করে চা শ্রমিক ইউনিয়ন। মঙ্গলবার থেকে ফের ধর্মঘটে যান শ্রমিকরা।
নিজেদের দাবি আদায়ে শ্রমিকরা শক্ত অবস্থানে থাকায় এর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে চা বাগানগুলোতে। বন্ধ হয়ে গেছে দেশের সব চা বাগান ও কারখানার কার্যক্রম। এ সংকট কাটাতে উদ্যোগ নিয়েছে শ্রম অধিদপ্তর। গতকাল মঙ্গলবার মৌলভীবাজারে শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের সঙ্গে আলোচনা হলেও কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। আজ বুধবার সন্ধ্যায় রাজধানীতেই বৈঠকে বসেছে শ্রমিক-মালিক-সরকার তিনপক্ষ। কিন্তু রাত ৯টা পর্যন্ত বৈঠকে সমঝোতামূলক কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
বৈঠকে অংশ নেওয়া চা বাগানের মালিক পক্ষ দাবি করেন, দৈনিক মজুরি ১২০ টাকা হলেও চা বাগানের শ্রমিকরা অন্যান্য অনেক সুবিধা পান। প্রতি সপ্তাহে দুই টাকা কেজি করে আটা দেওয়া হয়, চা বাগানের জায়গায় থাকাসহ অন্যান্য সুবিধা পান তারা। সব মিলিয়ে তাদের দৈনিক মজুরি ৩০০ টাকার বেশি পড়ে।
এসআই/ওএফ