‘জলবায়ুর কারণে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে প্রতিক্রিয়া জানাতে হবে’
জলবায়ু পরিবর্তন এবং পরিবেশগত অবনতির গভীর প্রভাবগুলো বিশ্বে মানবাধিকারের জন্য সবচেয়ে বড় ঝুঁকি বলে মন্তব্য করেছেন জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচেলেট।
তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের এ অবস্থানে যাওয়ার পেছনে কিছু দেশ অন্যদের তুলনায় বেশি দায়ী। আমি মনে করি এ বিষয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে প্রতিক্রিয়া জানানোর প্রয়োজন রয়েছে।
বিজ্ঞাপন
বুধবার (১৭ আগস্ট) বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের (বিআইআইএসএস) আয়োজনে মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের সঙ্গে ‘ইয়ং স্কলারস মিট’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
ব্যাচেলেট বলেন, জলবায়ু প্রভাবের কারণে যেসব দেশ বেশি দায়ী তারা ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে সাহায্য করতে পারে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবশ্যই বাংলাদেশের মতো বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত দেশের কথা শুনতে হবে।
আরও পড়ুন : সুইস ব্যাংক নিয়ে রাষ্ট্রদূতের বক্তব্য মিথ্যা : পররাষ্ট্রমন্ত্রী
মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার বলেন, আমাদের রাজনৈতিক নেতাদের চ্যালেঞ্জ অনেক বেশি। আমরা জানি এই বিষয়ে অগ্রগতির জন্য আমাদের রাজনৈতিক স্বদিচ্ছা দরকার।
ব্যাচেলেট বলেন, বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে এবং এই ধারা অব্যাহত রাখতে হলে অন্তর্ভুক্তিমূলক ও বহুমুখী সমাজব্যবস্থা গড়ে তোলার বিকল্প নেই। বাংলাদেশের উন্নয়ন প্রচেষ্টায় এসডিজি ১৬ অর্থাৎ অন্তর্ভুক্তিমূলক ও বহুমুখী সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। সবার জন্য ন্যায়বিচারের নিশ্চয়তা প্রদান এবং কার্যকর ও অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রতিষ্ঠান যেমন, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন, নির্বাচন কমিশন, বিচার বিভাগকে শক্তিশালী করা। অনলাইন এবং অফলাইনে জনসাধারণের বিতর্ক এবং অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন পরিকল্পনার নকশা ও বাস্তবায়নে সুশীল সমাজের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে খরা, বন্যা, লবণাক্ততা ইত্যাদি দেখা দিচ্ছে। কৃষকরা অনেক সময় বৃষ্টির জন্য প্রার্থনাও করেন। তবে সরকার জলবায়ু ঝুঁকি মোকাবিলায় নানা উদ্যোগ নিয়েছে। বিশেষ করে ২০০১ সালে ৪০০ কোটি টাকার ক্লাইমেট ট্রাস্ট ফান্ড গঠন করে। পরে এই ফান্ডের অর্থ আরও বাড়ানো হয়। জলবায়ু পরিবর্তন ঝুঁকি ইস্যুগুলো জাতিসংঘে নিরাপত্তা পরিষদে গুরুত্ব দেওয়া হবে বলে আমি মনে করি।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে বিআইআইএসএস-এর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ মাকসুদুর রহমান বলেন, জলবায়ু ন্যায়বিচার একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সামাজিক বৈষম্য এবং সহিংসতার উপর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব রয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশ হিসেবে বাংলাদেশের অবস্থান এবং ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামে (সিভিএফ) বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
বিআইআইএসএস-এর সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ড. সুফিয়া খানম বলেন, গত কয়েক দশকে বাংলাদেশ প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ১৫ বিলিয়ন ডলারের ক্ষতির শিকার হয়েছে এবং সর্বশেষ বন্যায় ১.১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও বেশি ক্ষতি হয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ২০০৮ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশে ৪ লাখ ২৬ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
এনআই/এসকেডি