সুইস ব্যাংকের তথ্য আদান-প্রদানে ‘মেকানিজম’ চায় সুইজারল্যান্ড
বাংলাদেশিদের অর্থ রাখা নিয়ে তথ্য আদান-প্রদান সংক্রান্ত একটি মেকানিজম তৈরির প্রস্তাব দিয়েছে সুইজারল্যান্ড। এ নিয়ে আলোচনাও করেছে ঢাকা ও বার্ন।
মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকের সঙ্গে আলাপকালে পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন এসব তথ্য জানান।
বিজ্ঞাপন
পররাষ্ট্রসচিব বলেন, দুই দেশের সরকারের মধ্যে একটি মেকানিজম তৈরি করা দরকার, যাতে সুইস ব্যাংকে রক্ষিত অর্থ সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যায়। তাদের (সুইস) পক্ষ থেকে মেকানিজম তৈরির বিষয়ে গত সপ্তাহে একটা প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এটা আমরা আলোচনা করব। আমরা অবশ্যই চুক্তি চাই। এই প্রস্তাব পারস্পরিক তথ্য বিনিময় সংক্রান্ত, যাতে ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি না হয়।
মাসুদ বিন মোমেন বলেন, আমাদের সঙ্গে বার্নের যোগাযোগ আছে। ঢাকায় তাদের দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে এবং এই ইস্যুতে আমাদের যেসব সংস্থা আছে, যারা দায়িত্বপ্রাপ্ত তাদের সঙ্গে বসে আমরা এমন একটা মেকানিজম করব সরকারগুলোর মধ্যে যাতে ভবিষ্যতে এমন ভুল বোঝাবুঝির অবকাশ না থাকে।
তিনি বলেন, কেউ যদি অন্যায়ভাবে দেশ থেকে অর্থ সরিয়ে থাকে, তাহলে রাষ্ট্রের একটি দায়িত্ব আছে সেগুলো ফিরিয়ে আনার। আমরা চেষ্টা করব যে বাংলাদেশ থেকে যাতে কেউ অবৈধ উপায়ে অর্থ পাঠাতে না পারে।
পররাষ্ট্রসচিব বলেন, আমাদের বাংলাদেশ ব্যাংকের এফআইইউ (ফাইনান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট) এবং ওদের যে ইন্ডিপেন্ডেন্ট বডি আছে তাদের মধ্যে হয়ত যোগাযোগ আছে বা সংযোগ আছে, যা সম্পর্কে সুইস রাষ্ট্রদূত হয়ত অবহিত নন। সেক্ষেত্রে এই ভুল বোঝাবুঝি আরও বাড়ছে।
সরকার সুইস রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে হওয়া ভুল বোঝাবুঝির অবসান চান জানিয়ে মাসুদ বিন মোমেন বলেন, সুইস রাষ্ট্রদূতের কূটনৈতিক সুরক্ষা পাওয়ার অধিকার আছে। আমরা আমাদের সংশ্লিষ্টদের নিয়ে এই বিষয়ে সামনের সপ্তাহে বসব। ভুল বোঝাবুঝি যেটা হয়েছে তা অবসানের জন্য চেষ্টা করব। কারণ রাষ্ট্রদূতের কাছে হয়ত সম্পূর্ণ তথ্য নেই বা আমাদের কাছেও সম্পূর্ণ তথ্য নেই।
তিনি বলেন, সুইজারল্যান্ড আমাদের ভালো বন্ধু রাষ্ট্র এবং উন্নয়ন অংশীদার। তাই আমরা তাদের সঙ্গে এমন কোনো ইমপ্রেশন সৃষ্টি করতে চাই না যেটা সত্য নয়।
সুইস ব্যাংকের অর্থ নিয়ে রাষ্ট্রদূত বক্তব্য, সরকারের মন্ত্রীদের পাল্টা বক্তব্য এবং হাইকোর্টে বিষয়টি নিয়ে যে আলোচনার জন্ম হয়েছে এ নিয়ে সুইস সরকারের প্রতিক্রিয়া বা দুই দেশের সম্পর্ক অবনতি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রসচিব বলেন, আমরা এমনটা চাই না। আমরা তাদের বলেছি যে আমাদের কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে তাদের কিছু পরামর্শ আছে সেগুলো যদি সবার জন্য একসপ্টেবল হয় তাহলে আমরা নতুন মেকানিজম তৈরি করব এবং যার মাধ্যমে এমন ধরনের তথ্য যতটুকু জানা সম্ভব সেটা যাতে আমরা জানতে পারি। এখানে আমাদের মনে রাখতে হবে যে সে দেশের আইন দ্বারাও বিষয়টা নিয়ন্ত্রিত অর্থাৎ সকল তথ্য পাবলিকলি প্রকাশ করা যাবে না।
তিনি বলেন, সুইস কর্তৃপক্ষ বলতে আমরা যেটা বোঝাচ্ছি, একটা হল সরকার, আরেকটা হল এই বিষয়ে সেখানে সাংবিধানিক যে সংস্থাগুলো রয়েছে, যাদের অবস্থান সরকারের মধ্যে না, সরকারের বাইরে এবং যাদের স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ রয়েছে, এসব কারণে ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়েছে।
মাসুদ বিন মোমেন বলেন, তাই আমরা যদি একটা মেকানিজম তৈরি করতে পারি যেখানেও দুই সরকারের মধ্যেও পাশাপাশি একটা যোগাযোগ রক্ষা করা যায়, যাতে করে আগামীতে এমন ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি না হয়, সেটাই আমাদের লক্ষ্য।
এনআই/এসকেডি