চাঁদা দাবির অভিযোগে মিরসরাইয়ের ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে মামলা
চাঁদা দাবিসহ একাধিক অভিযোগ এনে চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক মো. মাসুদ রানাসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন সাবিনা ইয়াসমিন নামে এক নারী। মামলার বাদী নারী বড়তাকিয়া চক্ষু হাসপাতালের মালিক মো. জসিম উদ্দিনের স্ত্রী।
সোমবার (১৫ আগস্ট) মিরসরাই থানায় মামলাটি দায়ের করা হয়। তবে অভিযুক্ত মাসুদ রানা দাবি করছেন, তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ মিথ্যা। তাকে ফাঁসানোর জন্য মামলার আসামি করা হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
চট্টগ্রামের মিরসরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কবির হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, মাসুদ রানাসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে থানায় একটি অভিযোগ এসেছে। আমরা অভিযোগটি নিয়েছি। এখন তদন্ত করে দেখতে হবে, অভিযোগ ঠিক আছে কি না। আমরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি।
মামলায় অভিযুক্তরা হলেন— মো. তুরিন, ইউসুফ, মিরসরাই উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক মো. মাসুদ রানা, আবিব, সোহেল মেম্বার ও হাসান। মামলায় দুই-তিনজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, মামলার বাদী সাবিনা ইয়াসমিনের স্বামী মো. জসিম উদ্দিন মিরসরাইয়ের বড়তাকিয়া চক্ষু হাসপাতালের সত্ত্বাধিকারী। হাসপাতালটিতে চারজন নার্স, দুজন রিসিপশনিস্ট ও একজন ওষুধ বিক্রেতাসহ নয়জন চাকরি করেন। হাসপাতালটির একজন মেয়ে রিসিপশনিস্টের সঙ্গে হাসপাতালের ওষুধ বিক্রেতা মো. হাসান এক রুমে গিয়ে একান্তে কথা বলেন। ঘটনাটি জসিম উদ্দিন দেখে তাদের সতর্ক করেন।
১৩ আগস্ট স্বামীসহ তার দুই মেয়েকে নিয়ে সাবিনা ইয়াসমিন বড়তাকিয়া হাসপাতালে যান। সাবিনা ইয়াসমিন মেয়েকে নিয়ে হাসপাতালের দ্বিতীয় তলায় অবস্থান করেছিলেন। এমন সময় নিচে চিৎকার শুনে নিচে এসে দেখেন তার স্বামী জসিম উদ্দিনকে নিচে আটকে রাখা হয়েছে।
এক পর্যায়ে জসিম উদ্দিনকে মারধর করেন অভিযুক্ত তুরিন। সাবিনা বাধা দিতে গেলে তাকে গালিগালাজ ও মারধর করতে আসেন অভিযুক্তরা। তারা জসিমকে ৩ ঘণ্টা মারধর করেন। অভিযুক্তরা অভিযোগ করেন, হাসপাতালের রিসিপশনিস্টকে জসিম ধর্ষণের চেষ্টা করেছেন। রিসিপশনিস্টকে ৩০ লাখ টাকা দেনমোহরে বিয়ে করার জন্য জসিমকে চাপ দেন তারা ।
এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, জসিম বিয়ের বিষয়টি অস্বীকার করলে ১৫ লাখ টাকা দিয়ে মীমাংসার কথা বলেন অভিযুক্তরা। একপর্যায়ে তারা তাকে জোর করে রিসিপশনিস্টকে বিয়ের কথা স্বীকার করিয়ে তা মোবাইলে রেকর্ড করেন এবং স্ট্যাম্পে সই নেন। এরপর ১৪ আগস্ট এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সাত লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদার টাকা না দিলে হাসপাতাল ভাঙচুর করাসহ বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখান।
এ বিষয়ে উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক মাসুদ রানা ঢাকা পোস্টকে বলেন, বড়তাকিয়া চক্ষু হাসপাতালের মালিক আমার এলাকার একটি মেয়েকে ধর্ষণের চেষ্টা করেছেন। মেয়েটি আমার এক বন্ধুর ছোট বোন। মেয়েটি আমাকে জানানোর পর আমি আমার এলাকার মেম্বারসহ হাসপাতালে গিয়ে তাকে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করি। এরপর জসিম উদ্দিন কিছু বলতে পারেননি।
তিনি বলেন, মেয়েটিকে আমি সাহায্য করেছি। শুনেছি মেয়েটি জসিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেছে। ওই মামলা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে মামলাটি দায়ের করেছে। আমি কেন চাঁদা চাইব? মিথ্যা অভিযোগে আমাকে ফাঁসানোর জন্য মামলাটি দায়ের করা হয়েছে।
কেএম/আরএইচ