গার্মেন্টস থেকে দুপুর বেলা বাসায় খাওয়ার জন্য আসি। সে সময় বন্ধুর কাছ থেকে ২ হাজার টাকা ধার নেওয়ার পর ফেরত না দেওয়া নিয়ে আমার স্ত্রীর সঙ্গে সামান্য কথা কাটাকাটি হয়। পরে আমি খাওয়া-দাওয়া শেষ করে আবার গার্মেন্টেসে চলে যাই। কিছুক্ষণ পরে পাশের বাসা থেকে একজন ফোন দিয়ে বলে আপনার স্ত্রী ও দুই সন্তান বিষ খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। পরে বাসায় গিয়ে জানতে পারি ভাতের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে আমার স্ত্রী নিজেও খেয়েছে এবং আমার সন্তানদেরও খাইয়েছে। ছোট ছোট বাচ্চা দুটির কী দোষ ছিল আমার স্ত্রী কেন তাদের বিষ খাইয়ে মারার চেষ্টা করল।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে দুই সন্তান স্বপ্না (৯), ইব্রাহিম (৫) ও স্ত্রী এলমার পাশে দাঁড়িয়ে কান্না জড়িত কণ্ঠে এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন সোহরাব হোসেন।

তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, গার্মেন্টস থেকে এসে প্রথমে তাদের আহসানুল্লাহ মাস্টার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখান থেকে তাদের আবার ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আসি। পরে তাদের তিন জনের পাকস্থলী পরিষ্কারের পর ওয়ার্ডে ভর্তি দিয়েছেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। বর্তমানে আমার স্ত্রী ঢামেক হাসপাতালের ৮০১ নম্বর ওয়ার্ডে আর দুই সন্তান ২০৮ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি আছে।

আরও পড়ুন : ‘উপজেলা হাসপাতাল থেকে ওয়াশ দিলে মা মারা যেত না’ 

কান্না জড়িত কণ্ঠে সোহরাব হোসেন বলেন, স্ত্রীর সঙ্গে আমার সামান্য ঝগড়া হয়েছিল। সন্তানদের তো কোনো দোষ ছিল না। তাদের কেন বিষ খাইয়ে মেরে ফেলতে হবে। আমি ছোট চাকরি করলেও আমার সংসারে তেমন কোনো অভাব নেই। তাদের সুখের জন্য আমি সবকিছু করতে রাজি ছিলাম।

আল্লাহর অশেষ রহমতে এ যাত্রায় সবায় বেঁচে গেছে এ কথা জানিয়ে সোহরাব হোসেন বলেন, অবুঝ শিশুরা মায়ের কথায় ভাত খেয়েছে। তারা কী জানত তাদের মা ভাতের সঙ্গে বিষ মিশিয়েছে? 

তিনি বলেন, আমরা বর্তমানে টঙ্গীর বিসিক ফকির মার্কেট এলাকায় একটি বাসা নিয়ে একসঙ্গে থাকি। আমার স্ত্রী গৃহিণী।

এ বিষয়ে ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক ঢাকা পোস্টকে বলেন, টঙ্গী থেকে দুই শিশু ও এক নারীকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আসা হয়েছে। বর্তমানে তারা হাসপাতালে ভর্তি আছেন। চিকিৎসক জানিয়েছেন তাদের অবস্থা আশঙ্কা মুক্ত।

এসএএ/আইএসএইচ