টার্গেট অসুস্থ-দরিদ্র মানুষ
ভুয়া ভিসা দিয়ে ৫ বছরে তিন কোটি টাকা আত্মসাৎ
রাজধানীর ভাটারা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ফরহাদ হোসেন নামে এক প্রতারককে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। ভারতসহ বিভিন্ন দেশে চিকিৎসা নিতে ইচ্ছুক গ্রাহকদের ভুয়া ভিসা তৈরির মাধ্যমে গত পাঁচ বছরে প্রায় তিন কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তিনি।
র্যাব জানায়, তার টার্গেট অসহায়, অসুস্থ, দরিদ্র শ্রেণির রোগীরা। তিনি ভুয়া ট্রাভেল এজেন্সির পরিচয়ে সরকারি চিকিৎসক ও বিভিন্ন ব্যাংক কর্মকর্তা এবং নোটারি পাবলিকের অবৈধ সিল, প্যাড ব্যবহার করে ভুয়া ভিসা তৈরি করে দিতেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শুক্রবার (৫ আগস্ট) অভিযান চালিয়ে র্যাব-১ এর একটি দল তাকে গ্রেপ্তার করে।
বিজ্ঞাপন
ভাটারার তাজুল ইসলামের ছেলে ফরহাদ। গ্রেপ্তারের সময় মনিটর, সিপিইউ, স্ক্যানার, ৩টি পাসপোর্ট, ১২টি সরকারি ডাক্তারদের বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সিল, ২টি প্যাড, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালের ভুয়া রিপোর্ট, বিভিন্ন ব্যাংকের স্টেটমেন্ট, ১টি রেজিস্টার, মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়।
র্যাব-১ এর সহকারী পরিচালক (মিডিয়া অফিসার) সহকারী পুলিশ সুপার নোমান আহমদ জানান, এক শ্রেণির স্বার্থান্বেষী সংঘবদ্ধ চক্র ভুয়া ট্রাভেল এজেন্সির পরিচয়ে সরকারি ডাক্তার ও বিভিন্ন কর্মকর্তা এবং নোটারি পাবলিকের অবৈধ সিল, প্যাড ব্যবহার করে পার্শ্ববর্তী দেশের ভুয়া ভিসা তৈরি করে অসহায়, অসুস্থ , দরিদ্র শ্রেণির রোগীদের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছিল।
চক্রটি বিভিন্ন প্রয়োজনে পার্শ্ববর্তী দেশে ভ্রমণে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের ভুয়া মেডিকেল ডকুমেন্ট তৈরি করে তাদের রোগী হিসাবে উপস্থাপন করে চিকিৎসা ভিসায় পার্শ্ববর্তী দেশে সকল প্রকার যাবতীয় কাগজপত্রাদি তৈরি করে আসছিল। র্যাব-১ এর গোয়েন্দা দল গোপন তথ্যের ভিত্তিতে প্রতারক ফরহাদকে শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার ফরহাদ জানিয়েছেন, তিনি গত ৫-৬ বছর ধরে চিকিৎসা ভিসায় যারা ভারতে যাওয়ার জন্য বৈধ উপায়ে ভিসা করতে পারেন না তাদের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালের ডাক্তারের সিল, প্যাড ব্যবহার করে ভুয়া মেডিকেল রিপোর্ট প্রস্তুত করে ভিসা প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন।
এছাড়াও তিনি বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকের সিল ব্যবহার করে ব্যাংক স্টেটমেন্ট, ডলার এনড্রোস এবং নোটারি পাবলিকের সিল ব্যবহার করে অবৈধভাবে এনওসি তৈরি করেন। এসব কার্যক্রম তিনি বাসায় নিজস্ব কম্পিউটারের মাধ্যমে প্রস্তুত করতেন। ভিসা তৈরিসহ সকল অবৈধ কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে প্রতি ব্যক্তির কাছ থেকে প্রায় ৩-৬ হাজার টাকা আদায় করতেন তিনি। ভুয়া ভিসা তৈরি করে এখন পর্যন্ত প্রায় ৩ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন তিনি। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
জেইউ/এসকেডি