চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরে কয়েকটি সমঝোতা স্মারক সইয়ের আভাস
দুই দিনের সফরে আগামী ৬ আগস্ট ঢাকায় আসার কথা রয়েছে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই’র। সফর হলে বেইজিংয়ের সঙ্গে ঢাকার কয়েকটি সমঝোতা স্মারক বা এমওইউ সই হওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম।
মঙ্গলবার (২ আগস্ট) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ ইঙ্গিত দেন।
বিজ্ঞাপন
চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ঢাকা সফরের বিষয়টি এখনো চূড়ান্ত নয় জানিয়ে শাহরিয়ার আলম বলেন, এই সফর নিয়ে এখনো কাজ চলছে। তিনি কবে আসবেন, কবে যাবেন, সফরের বিষয়বস্তু কী এগুলো ঠিক হয়নি। এখনো কিছু চূড়ান্ত হয়নি। কিছু এজেন্ডা আমাদের দেওয়া হয়েছে। এগুলো নিয়ে এখনো দর কষাকষি চলছে। চূড়ান্ত হলে কিছু সমাঝোতা স্মারক সই হতে পারে।
কূটনৈতিক সূত্র বলছে, আগামী ৬ আগস্ট চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ঢাকা সফর চূড়ান্ত। বেইজিংয়ের আগ্রহে চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এ সফরে দু’দেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় ছাড়াও আঞ্চলিক ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে বৈশ্বিক রাজনীতির আলোচনা গুরুত্ব পাবে।
বেইজিংয়ের পক্ষ থেকে আগস্টের ৫ ও ৬ তারিখ চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ঢাকা সফরের প্রস্তাব করা হয়েছিল। ওই সময় বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আসিয়ান আঞ্চলিক ফোরামের (এআরএফ) বৈঠকে অংশ নিতে কম্বোডিয়ায় থাকবেন। যার কারণে ঢাকার পক্ষ থেকে সফরের তারিখ দু’একদিন পেছানোর জন্য বেইজিংকে অনুরোধ করা হয়।
কূটনৈতিক সূত্রগুলো আরও জানাচ্ছে, চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরে দুই দেশের সম্পাদিত ২৭টি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক বাস্তবায়নের অগ্রগতি পর্যালোচনায় আসবে।
হঠাৎ করে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ঢাকা সফরের খবর চাউর হওয়ার পর থেকে কূটনৈতিক মহলে বিভিন্ন ধরনের আলোচনা চলছে। কেউ কেউ বলছেন, বৈশ্বিক উদ্যোগে সবসময় ঢাকাকে পাশে চায় বেইজিং। আবার কেউ কেউ বলছে, ভারত–প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে অর্থনৈতিক কাঠামো (আইপিইএফ) নামে মার্কিন নেতৃত্বাধীন নতুন অর্থনৈতিক জোট এবং নিরাপত্তা জোট কোয়াডে ঢাকা যেন যুক্ত না হয়, সে বিষয়ে বেইজিং আবার বার্তা দেবে।
চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ঢাকা সফরকে দ্বিপাক্ষিক উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী এটিকে তৃতীয় কোনো দেশের উৎকণ্ঠা বা না মেলানোর অনুরোধ করেন। তিনি বলেন, আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে এ সফরের সবকিছু চূড়ান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সফর নিয়ে কোনো কোনো দেশের উৎকণ্ঠা বা অস্বস্তি রয়েছে। দয়া করে এর মধ্যে তৃতীয় কোনো দেশ অন্তর্ভুক্ত করবেন না। বিষয়টি দ্বিপাক্ষিক। পরিষ্কার করে বলতে চাই, চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের যে সম্পর্ক তার থেকে অন্য দেশগুলোর সম্পর্ক অনেক বেশি।
চীন থেকে বাংলাদেশের ঋণ নেওয়ার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, চীন থেকে বাংলাদেশ যে ঋণ নিয়েছে, অন্য দেশগুলো চীন থেকে তার চেয়ে বেশি ঋণ নিয়েছে। আমরা চীনের সঙ্গে যে পরিমাণ আমদানি-রপ্তানি করি, অন্য দেশগুলো চীনের সঙ্গে তারচেয়ে বেশি বাণিজ্য করে। তাই দয়া করে, দ্বিপাক্ষিক এই ইস্যুতে তৃতীয় কোনো দেশকে অন্তর্ভুক্ত করবেন না।
চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরে রোহিঙ্গা সংকট গুরুত্ব পাবে বলেও জানান প্রতিমন্ত্রী।
সবশেষ, চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ২০১৭ সালের নভেম্বরে ঢাকা সফর করেছিলেন।
এনআই/ওএফ