মুক্তিযোদ্ধা সন্তানরা চাকরিতে থাকলে অসাধুরা দুর্নীতি করতে ভয় পায় তাই দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা পুনর্বহাল ও সংরক্ষণ, বয়সসীমা ৩৫ বছর করাসহ সাত দফা দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদ।

বৃহস্পতিবার (২৮ জুলাই) বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলে সংগঠনটির পক্ষ থেকে এ দাবি জানানো হয়।

বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান মো. সোলায়মান মিয়া বলেন, মুক্তিযোদ্ধারা দেশ স্বাধীন করেছে অথচ তাদের সন্তানেরা আজ অবহেলিত। চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা ছিল, সেটা তুলে দিয়েছে। মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে সুরক্ষা দেওয়ার কোনো আইন নেই। আমরা চাই, সরকার মুক্তিযোদ্ধাদের সব ধরনের সুবিধার পাশাপাশি সুরক্ষার ব্যবস্থা করবে।

তিনি বলেন, সাত দফার পাশাপাশি মেডিকেল কলেজ, কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে ছাত্রদের ভর্তির ক্ষেত্রে বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও নাতি-নাতনিদের জন্য ১০ শতাংশ আসন দিতে হবে।

আরও পড়ুন: দুপুর ১২টা থে‌কে রাত ৯টা পর্যন্ত দোকানপাট খোলা রাখার দা‌বি

বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান মো. সোলায়মান মিয়া বলেন, আমরা সাত দফা দাবি দিয়েছি। এ দাবিগুলো দ্রুত বাস্তবায়নের আহ্বান জানাই সরকারকে। আগামী এক মাসের মধ্যে দাবি বাস্তবায়ন না হলে কিংবা আমাদের সাত দফা দাবি না মানলে আগামী ১ সেপ্টেম্বর সারা দেশে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচি পালন করব। সারা দেশ থেকে ৫০ হাজার মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের সন্তানদের নিয়ে শাহবাগ অবরোধ করব।

সংগঠনটির সাত দফা দাবি হলো—

১. দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা পুনর্বহাল ও সংরক্ষণ, আলাদা নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিসহ বয়সসীমা ৩৫ বছর করতে হবে।

২. বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সুরক্ষা আইন পাশ করাসহ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের শ্রেণি ও মর্যাদা নির্ধারণ করতে
হবে।

৩. বঙ্গবন্ধু কর্তৃক উপহার মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের সম্পত্তি বিক্রি না করে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরিত করতে হবে।

৪. মুক্তিযোদ্ধা সংসদ নির্বাচনে সব মৃত বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের অন্তত একজন সদস্যকে ভোটাধিকার প্রয়োগের ক্ষমতা প্রদান করতে হবে।

৫. বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের সন্তানদের জন্য জাতীয় সংসদে কমপক্ষে ৫০টি সংরক্ষিত আসন সৃষ্টি করতে হবে। জেলা-উপজেলা-ইউনিয়ন পরিষদে ২ জন করে বীর মুক্তিযোদ্ধা বা তাদের সন্তানদের জন্য সংরক্ষিত সদস্য পদ সৃষ্টি করতে হবে।

৬. সব প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং কমিটি ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষা কমিটিতে দুই জন বীর মুক্তিযোদ্ধা বা তাদের সন্তানদের বাধ্যতামূলক সদস্য করতে হবে।

৭. সারা দেশে বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের ওপর হামালা, নির্যাতন ও তাদের জমি দখলের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে। দুর্নীতি-মাদক-ধর্ষণের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রাখাসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।

মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম বাবুসহ সংগঠনটির নেতারা। মানববন্ধন কর্মসূচিতে ঢাকা বিভাগ, জেলা, মহানগর, উপজেলা, পৌরসভা, ইউনিয়ন, রেলওয়ে, সিভিল এভিয়েশন ইউনিটসহ সব অঙ্গ সংগঠন ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা অংশ নেন।

আইবি/এসএসএইচ