সংসদীয় কমিটিতে ২৫০৪ রাজাকারের তালিকা
স্বাধীনতা বিরোধী রাজাকার, আলবদর ও আলশামসের দুই হাজার ৫০৪ জনের তালিকা মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে জমা দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ তথ্য জানানো হয়।
বৈঠকের কার্যপত্র থেকে জানা যায়, তালিকা চেয়ে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সকল জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও যুদ্ধকালীন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারদের চিঠি দেওয়া হয়। ওই চিঠির উত্তরের প্রেক্ষিতে মন্ত্রণালয়ের কাছে দুই হাজার ৫০৪ জন স্বাধীনতা বিরোধী রাজাকার, আলবদর ও আলশামস বাহিনীর সদস্যের নাম এসেছে।
বিজ্ঞাপন
আরো জানা যায়, সংসদীয় কমিটি রাজাকার ও স্বাধীনতা বিরোধীদের তালিকা এখন পর্যন্ত যতটুকু পাওয়া গেছে - তা অবিলম্বে গেজেট আকারে প্রকাশের সুপারিশ করবে। রাজাকার, আলবদর, আলশামস ও পিস কমিটির সদস্যদের সঠিক ও পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রণয়নের লক্ষ্যে একটি উপকমিটি গঠন করা হয়েছে। উপকমিটি থেকে তালিকা পাওয়া গেলে প্রাপ্ত তালিকাসহ যাচাই বাছাই করে গেজেট আকারে প্রকাশের অনুরোধ জানিয়ে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের নিকট প্রেরণ করা হবে।
এ বিষয়ে কমিটির সভাপতি শাজাহান খান সাংবাদিকদের বলেন, আমরা যাদের নাম পাচ্ছি তাদের তালিকা সংশ্লিষ্ট উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলে পাঠিয়ে দিচ্ছি। সেখান থেকে যাচাই হয়ে আসছে। তারপর তালিকা করা হচ্ছে। আইন হয়ে গেলে তালিকা প্রকাশ করা হবে।
গত বছর বিজয় দিবসের আগে আংশিক তালিকা প্রকাশ করার কথা থাকলেও আইনি বাধ্যবাধকতায় তা সম্ভব হয়নি। জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের আইনের সংশোধন ছাড়া এটি প্রকাশ করা যাবে না বিধায় সরকার আইনটি সংশোধন করার উদ্যোগ নিয়েছে। সংসদে আইন পাস হলে তারা রাজাকারদের তালিকা প্রকাশ করবে বলে বৈঠকে জানানো হয়।
এ দিকে বৈঠকে সরকারি হাসপাতালে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসা সেবা ৫০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৭৫ হাজার টাকা করতে বলেছে। এ বিষয়ে কমিটির সভাপতি মো. শাজাহান খান বলেন- উপজেলা, জেলা, বিভাগীয় ও বিশেষায়িত সরকারি হাসপাতালে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসা সহায়তা হিসেবে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত বিনামূল্যে সেবা দেওয়া হয়। আমরা এটা ৭৫ হাজার টাকা করতে বলেছি।
তিনি বলেন, ওষুধ কিনতে খুব বেশি টাকা লাগে না। চিকিৎসার মূল ব্যয় হয় স্বাস্থ্য পরীক্ষায়। সেজন্য আমরা এই টাকার পরিমাণ বাড়ানোর সুপারিশ করেছি মুক্তিযোদ্ধাদের এই চিকিৎসা সেবা দিতে।
এ দিকে মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের বরাত দিয়ে শাজাহান খান জানান, আগামী স্বাধীনতা দিবসের আগে মুক্তিযোদ্ধার তালিকা প্রকাশ করতে মন্ত্রণালয় প্রস্তুত আছে। কমিটির বৈঠকে মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। মন্ত্রী জানিয়েছেন, ২৬ মার্চের আগে তালিকা দিতে তাদের প্রস্তুতি আছে।
বৈঠকে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশের লক্ষ্যে জেলা ও উপজেলার সংশ্লিষ্ট সকলের সমন্বয়ে শিগগিরই চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের সুপারিশ করা হয়। পরবর্তী প্রজন্মকে অবহিত করার উদ্দেশ্যে বঙ্গবন্ধু কর্নার ও পাঠাগার স্থাপনের পরামর্শ দেওয়া হয়।
কমিটির সভাপতি শাজাহান খানের সভাপতিত্বে বৈঠকে অংশ নেন কমিটির সদস্য মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম, কাজী ফিরোজ রশীদ ও মোছলেম উদ্দিন আহমদ প্রমুখ।
এইউএ/ওএফ