টেকনাফের ইউএনওকে ওএসডি করার নির্দেশ
ঢাকা পোস্টের প্রতিবেদককে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করার ঘটনায় টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ কায়সার খসরুকে ওএসডি (বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।
সোমবার (২৫ জুলাই) দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ তথ্য জানান।
বিজ্ঞাপন
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘প্রায় ৫০০টি উপজেলার ৫০০ জন লোকের মধ্যে সবাই ভালো হবে, সেটা আপনি কীভাবে আশা করেন? আমাদের প্রতি নির্দেশনা আছে তাকে ওএসডি করে নিয়ে এসে তার বিরুদ্ধে আদালত কী ইনস্ট্রাকশন দেন সে অনুযায়ী অ্যাকশন নেওয়ার জন্য।’
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা বলে দিয়েছি, ইমিডিয়েটলি ওএসডি করে নিয়ে আস। যেহেতু বিষয়টি কোর্টে গেছে, কোর্ট থেকে যেভাবে ইনস্ট্রাকশন আসবে সেভাবে ব্যবস্থা।'
তিনি বলেন, ‘গতকাল কমিশনার কনফারেন্সে আমরা বিষয়টা খুব স্ট্রংলি কমিশনারদের বলে দিয়েছি, কমিশনাররা যে যে জেলাতে যাবেন, সব অফিসারদের সঙ্গে নিয়ে বসবেন।’
‘চালচলন, আচার-আচরণ, ব্যবহার এটা তো সাংবাদিকের বিষয় নয়। কারো সঙ্গে আপনি এভাবে কথা বলতে পারেন না। আপনি যত উপরের দিকে থাকবেন তত মাথা ঠান্ডা রেখে কথা বলতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি যদি বলি আপনি একজন অসভ্য লোক। দ্যাট ইজ এনাফ। এর পরে কি আজেবাজে কথা বলার দরকার আছে? একটা লোককে যদি আমি খারাপ বলতে চাই, এই লেভেলে দিস ওয়ার্ড ইজ এনাফ। ওই ল্যাঙ্গুয়েজ কেন ইউজ করতে হবে?’
গত ২১ জুলাই ‘নিচু জায়গায় নির্মাণ করা উপহারের ঘর পানিতে ভাসছে’ শিরোনামে ঢাকা পোস্টে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা হোয়াব্রাং এলাকার সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্পের সবগুলো নতুন ঘর পানিতে ভাসছে। ফলে সেখানে থাকা ২৭টি পরিবার দুর্ভোগে পড়েছেন।
এ খবর প্রকাশিত হওয়ায় ক্ষিপ্ত হন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। তিনি তার অফিসিয়াল নম্বর থেকে ঢাকা পোস্টের কক্সবাজার প্রতিনিধি সাইদুল ফরহাদকে ফোন করে ধমক দেন এবং গালিগালাজ করেন।
এই ফোনালাপের অডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সারা দেশে তীব্র সমালোচনা হয়।
পরদিন শুক্রবার (২২ জুলাই) কক্সবাজারের হিলডাউন সার্কিট হাউসে জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদের উদ্যোগে কক্সবাজার প্রেসক্লাব ও সাংবাদিক ইউনিয়নের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এসময় টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কায়সার খসরু ঢাকা পোস্টের কক্সবাজার জেলা প্রতিনিধির কাছে দুঃখ প্রকাশ করে ক্ষমা চান।
এ ঘটনায় গতকাল রোববার উষ্মা প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট। আদালত বলেছেন, একজন প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা যে ভাষা ব্যবহার করেছেন তা একেবারেই অগ্রহণযোগ্য ও আপত্তিকর। কোনো রং হেডেড ব্যক্তি ছাড়া এ ধরনের ভাষা কেউ ব্যবহার করতে পারেন না।
তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে আদালতকে তা জানাতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
এসএইচআর/জেডএস/জেএস