কর্মচারীদের কল্যাণের বিষয়ে সরকার সর্বদাই আন্তরিক : প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকার সরকারি কর্মচারীদের কল্যাণের বিষয়ে সর্বদাই আন্তরিক। সরকারি কর্মচারীদের বেতন-ভাতা বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির বিষয়টি সরকার অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে।
শনিবার (২৩ জুলাই) ‘বঙ্গবন্ধু জনপ্রশাসন পদক-২০২২’ প্রদান উপলক্ষে শুক্রবার দেওয়া এক বাণীতে এসব কথা বলেন তিনি।
বিজ্ঞাপন
প্রতি বছরের মতো এবারও সরকারি কর্মচারীদের সৃজনশীল ও প্রশংসনীয় কাজের জন্য ‘বঙ্গবন্ধু জনপ্রশাসন পদক’ প্রদানের উদ্যোগকে স্বাগত জানান প্রধানমন্ত্রী। পদকপ্রাপ্ত সবাইকে আন্তরিক অভিনন্দন জানিয়ে তিনি বলেন, আমি মনে করি, পদকপ্রাপ্তির এই আনন্দ তাদের উদ্যম, মেধা ও সৃজনশীলতাকে আরও শাণিত করবে এবং অন্যদের উৎসাহিত করবে।
শেখ হাসিনা বলেন, সরকারি কর্মচারীরা সাধারণত কর্তৃপক্ষের নির্দেশে দায়িত্ব পালন করে থাকেন। কিন্তু এর মধ্যে কোনো কোনো কর্মচারী প্রচলিত ধ্যান-ধারণার বাইরে গিয়ে নতুন পদ্ধতি, প্রযুক্তি ও পন্থা ব্যবহার করে চলমান কাজ ও সেবা প্রদান প্রক্রিয়ায় ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সক্ষম হন। এরূপ উদ্ভাবন-মানসিকতা সম্পন্ন ও উদ্যোগী কর্মচারীদের জন্যই এ পদকের আয়োজন। বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের অধিক সংখ্যক কর্মচারীকে পদকের আওতায় নিয়ে আসার জন্য সম্প্রতি জনপ্রশাসন পদকের ক্ষেত্র ও কলেবর সম্প্রসারণ করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি খাদ্য সহায়তা বিতরণ, সরবরাহ ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ এবং সরকারি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সরকারি কর্মচারীদের মানবিক দায়িত্ব পালনের বিষয়টি ছিল প্রশংসনীয়। বৈশ্বিক মহামারি আর রাজনৈতিক সংঘাতের কারণে বিশ্বের অনেক দেশেই যখন অর্থনীতি স্থবির হয়ে পড়েছে, তখন আমাদের অর্থনীতি গতিশীল রয়েছে।
তিনি বলেন, ২০২০-২১ অর্থবছরে আমাদের ৬ দশমিক ৯৪ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে এবং মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি পেয়ে বর্তমানে ২ হাজার ৮২৪ মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে জাতিসংঘ বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশ হতে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীতকরণের জন্য সুপারিশ করেছে।
শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতা অর্জনের পর মাত্র নয় মাসেই একটি সংবিধান প্রণয়ন করেছিলেন। সংবিধানের রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি অংশে ২১ (২) অনুচ্ছেদে উল্লেখ রয়েছে- সকল সময়ে জনগণের সেবা করিবার চেষ্টা করা প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিযুক্ত প্রত্যেক ব্যক্তির কর্তব্য। তিনি সব সময় সরকারি কর্মচারীদের প্রতি সহানুভূতিশীল ছিলেন। তিনি নিয়মিত সরকারি কর্মচারীদের খোঁজ-খবর রাখতেন এবং তাদের ব্যক্তিগত ও পারিবারিক কল্যাণ নিশ্চিত করার বিষয়ে আন্তরিক ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু চাইতেন, প্রত্যেক সরকারি কর্মচারী দক্ষ ও সৎ হবেন এবং দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে সঠিক পথে পরিচালিত হবেন। জনপ্রশাসন পদকের সঙ্গে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের নাম সংযুক্ত করায় আমি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে ধন্যবাদ জানাই। আমার প্রত্যাশা, এর মাধ্যমে জাতির পিতার আদর্শ, দেশপ্রেম, মানবিকতা ও দায়িত্বশীলতা সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে সঞ্চারিত হবে।
শেখ হাসিনা সরকারি কর্মচারীদের চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণের জন্য আহ্বান জানিয়ে বলেন, সরকার সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধি করে শক্তিশালী, কার্যকর ও গতিশীল জনপ্রশাসন গড়ে তুলতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।
তিনি আশা প্রকাশ করেন, আগামী দিনের জনপ্রশাসন উদ্ভাবন-মনস্ক, মানবিক এবং নাগরিকবান্ধব হবে। প্রধানমন্ত্রী ‘বঙ্গবন্ধু জনপ্রশাসন পদক-২০২২’ প্রদান উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানের সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।
আরএইচ