অভিজাত এলাকাতেও ভরসা জেনারেটর ও চার্জিং ফ্যান
বিদ্যুৎ ঘাটতি কমাতে মঙ্গলবার (১৯ জুলাই) থেকে এলাকাভিত্তিক লোডশেডিং শুরু হয়েছে। আর লোডশেডিংয়ে বিদ্যুৎ সংকট মোকাবিলায় নানামুখী পণ্যের দিকে ঝুঁকছেন মানুষ। এ ক্ষেত্রে রাজধানীর অভিজাত এলাকার বাসিন্দারা জেনারেটর এবং চার্জিং ফ্যান-লাইট কিনছেন।
অভিজাত এলাকার বাসিন্দাদের ভাষ্য, সাধারণত লোডশেডিং মোকাবিলায় প্রস্তুতি নেওয়ার তেমন কিছু নেই। কারণ বিদ্যুৎ চলে গেলে সাধারণ নিয়ম অনুযায়ী বাড়ির নিচে থাকা জেনারেটের চালু করা হয়। তবে জেনারেটর দিয়ে পুরো ঘরের লাইট-ফ্যান, এসি চলে না। নির্দিষ্ট দুই-তিনটি কক্ষের লাইট-ফ্যান অথবা লাইট-এসি চলে। আর বাকি ঘরে তখন চার্জিং লাইট-ফ্যান চলে। এর বাইরে আইপিএস, ইউপিএস থাকে। যেগুলো সাধারণত ফ্রিজ ও ল্যাপটপের ব্যাকআপ হিসেবে কাজ করে।
বিজ্ঞাপন
রাজধানীর গুলশান-২ এর ৮৮ নম্বর বাড়ির দারোয়ার আলী রহমত জেনারেটর-ঘর দেখিয়ে বলেন, বিদ্যুৎ চলে গেলে লিফটসহ প্রতিটি ফ্ল্যাটে দুটি লাইট-ফ্যান ও এসি চালানোর সক্ষমতা রয়েছে এই জেনারেটরের। তাই বিদ্যুৎ চলে গেলে তেমন সমস্যা হয় না।
এই বাড়িতে থাকেন একটি ট্রাভেল এজেন্সির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মুন্সি ওমর ফারুক আহমেদ। তিনি বলেন, মঙ্গলবার রাত ৮টা থেকে ৯টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ ছিল না। এসময় আগের নিয়ম অনুযায়ী জেনারেটর চালু ছিল। বাসার দুটি রুমের লাইট-ফ্যান চলেছে। তারপরও লোডশেডিং ঘোষণার পর একটি চার্জিং ফ্যান ও লাইট কিনেছি। ফ্যান সাধারণত ১-২ ঘণ্টা চলে। লাইট অনেক সময় জ্বলে।
গুলশান লেক সংলগ্ন নিজ বাড়িতে থাকেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, মঙ্গলবার ও বুধবার কয়েকবার বিদ্যুৎ গেছে। বিদ্যুৎ গেলে আমার বাড়িতে সবসময় জেনারেটর চলে। এখনও আগের মতো বিদ্যুৎ গেলে জেনারেটর দিয়ে বাড়িতে সার্ভিস দেওয়া হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, আশঙ্কার বিষয় হচ্ছে জেনারেটর তো চলে ডিজেলে। কিছুদিন পরে ডিজেলের সংকট বাড়তে পারে। তখন কীভাবে লোডশেডিং মোকাবিলা করব সেটা নিয়ে চিন্তায় আছি।
রাজধানীর ধানমন্ডির লেক সংলগ্ন এলাকার একটি বাড়ির অ্যাপার্টমেন্ট থাকেন আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন। লোডশেডিংয়ের সময়টা কীভাবে মোকাবিলা করেন— জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি একটি পুরোনো অ্যাপার্টমেন্ট ক্রয় করেছি। এই বাড়ির নিচে আগে থেকেই নিচে জেনারেটর রয়েছে। যেটি পুরো বাড়ি কাভার করে। আগে তো বিদ্যুৎ যেতই না। ফলে জেনারেটর তেমন একটা লাগত না। এখন যে সময়টায় লোডশেডিং হয় তখন জেনারেটর চলে। সেটি দিয়ে বাসার একটি রুমের লাইট-ফ্যান চলে।
তিনি আরও বলেন, এমনিতে আমি ও আমার মেয়েরা সবসময় বাসার যেসব রুমে লোক থাকে না সেসব রুমের ফ্যান বন্ধ রাখি। তাছাড়া আমার অ্যাপার্টমেন্টের ড্রয়িং রুম ও ডাইনিং রুমের জানালা খুলে দিলে আলো-বাতাস আসে। তাই রুমের লাইট-ফ্যান দরকার হয় কম। এখনও লোডশেডিং মোকাবিলা বাড়তি কোনো কিছু করতে হয়নি, আগের মতো জেনারেটর দিয়ে হয়ে যায়।
গুলশান-১ ডিএনসিসি মার্কেটের ইলেকট্রিক ব্যবসায়ী বলছেন, লোডশেডিং ঘোষণার পর খুব বেশি বিক্রি বেড়েছে তা কিন্তু নয়। তবে আগের তুলনায় বিক্রি কিছুটা বেড়েছে। মানুষ বেশি চার্জিং লাইট-ফ্যান কিনছেন। কেউ-কেউ ইউপিএস কিনছেন। এমনিতে গত কয়েক দিনের গরমের কারণে সব ধরনের ফ্যান বিক্রি বেড়েছে।
শাহরাস্তি ইলেকট্রিকের কর্মচারী সাইফুল ইসলাম জানান, তাদের বিক্রি খুব বেশি বাড়েনি। তবে মঙ্গলবার থেকে চার্জিং লাইট-ফ্যান ও ইউপিএসের চাহিদা কিছুটা বেড়েছে। আর গরম বাড়ার পর থেকে ফ্যান বিক্রি বেড়েছে। কেউ কেউ আবার হিটারও কিনেছেন।
এএইচআর/এসএসএইচ