ট্রেনে ঈদযাত্রার তৃতীয় দিন চলছে আজ। সকাল থেকে মোটামুটি নির্ধারিত সময়ে ট্রেনগুলো কমলাপুর স্টেশন ছাড়লেও দুটি ট্রেন ভুগিয়েছে যাত্রীদের। উত্তরাঞ্চলের নীলসাগর ও ধূমকেতু এক্সপ্রেস ট্রেন দুটি নির্ধারিত সময়ের ২-৩ ঘণ্টা দেরিতে স্টেশন ছেড়েছে।   

তবে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন কর্তৃপক্ষ বলছে এর জন্য তারা দায়ী নয়।  

চিলাহাটি-ঢাকা পথে চলাচলকারী নীলসাগর এক্সপ্রেস ৬টা ৪০ মিনিটে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে যাত্রা শুরু করার কথা থাকলেও প্রায় ৩ ঘণ্টা দেরিতে ৯টা ২০ মিনিটে যাত্রা শুরু করে এ ট্রেন।

নীলসাগর এক্সপ্রেস কমলাপুর স্টেশনেই পৌঁছায় সকাল ৮টা ১০ মিনিটে। ট্রেনটি প্লাটফর্মে পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গে মানুষজন হুমড়ি খেয়ে পড়েন ট্রেনে উঠতে। ট্রেনের ছাদেও উঠে পড়েন প্রচুর মানুষ। ছাদ থেকে যাত্রীদের নামাতে রেলওয়ে পুলিশের প্রায় ১ ঘণ্টা লাগে। যার কারণে ট্রেনের যাত্রা আরও বিলম্বিত হয়।

নীলসাগর এক্সপ্রেসের যাত্রী ইয়ামিন হোসেন বলেন, উত্তরাঞ্চলের ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় প্রতি বছর হয়। এবারও তাই হয়েছে। ট্রেনের ভিতরে এতো মানুষ যে টিকিট কেটেও ভিতরে প্রবেশ করা যাচ্ছে না।  

এছাড়া রাজশাহীগামী ধূমকেতু এক্সপ্রেসও কমলাপুর ছেড়েছে দু’ঘণ্টা দেরিতে। সকাল ৬টায় ছাড়ার কথা থাকলেও ট্রেন সকাল ৮টা ১০ মিনিটে ছাড়ে। এই দুই ঘণ্টা যাত্রীদের প্লাটফর্মে অপেক্ষা করতে হয়। এতে করে যাত্রীদের অনেকটা ভোগান্তিতে পড়তে হয়।

এছাড়া আরও কয়েকটি ট্রেনের যাত্রা কিছুটা বিলম্বিত হয়। তবে সেগুলো সহনীয় পর্যায়ে ছিল। 

খুলনাগামী সুন্দরবন এক্সপ্রেস ৮টা ১৫ মিনিটে ছাড়ার কথা থাকলেও ছেড়েছে ৮ টা ৪৫ মিনিটে, জামালপুর এক্সপ্রেস সাড়ে ১০টায় ছাড়ার কথা থাকলেও ১১টা ১৫ মিনিটে ছেড়েছে। এ ছাড়া সাড়ে ৮টায় মহুয়া কমিউটার, ৮টা ৪৫ মিনিটে কর্ণফুলী, ৯টা ১০ মিনিটে রংপুর এক্সপ্রেস এবং ৯টা ৪৫ মিনিটের তিতাস কমিউটার ১৫ মিনিট দেরি করে গেছে।

কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশন ম্যানেজার মো.মাসুদ সারওয়ার বলেন, আজ ৩৯ জোড়া ট্রেন কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে থেকে বিভিন্ন গন্তব্যের উদ্দেশে ছেড়ে যাবে। এর মধ্যে দুই জোড়া বিশেষ ট্রেন রয়েছে। আজ ধূমকেতু ও নীলসাগর এক্সপ্রেস ছাড়া বাকি কোনো ট্রেন দেরিতে ছাড়েনি।

ধূমকেতু ও নীলসাগর এক্সপ্রেসের বিষয়ে তিনি বলেন, উত্তরাঞ্চলের ট্রেনগুলোর যাত্রার সময় নির্ভর করে আসার ওপর। দ্রুত সময়ে এলে সঠিক সময়ে চলে যায়। আবার আসতে দেরি করলে নির্ধারিত সময়ে যাত্রা শুরু করতে পারে না। এছাড়া ট্রেনগুলো আসার পর সকল টেকনিক্যাল বিষয় চেক করা হলে যাত্রার জন্য রেডি করা হয়, যেন যাত্রীরা নিরাপদে যেতে পারেন। এই দুইটি ট্রেন আসতে বিলম্ব করায় নির্ধারিত সময়ে যেতে পারেনি। এছাড়া নীলসাগর এক্সপ্রেস প্লাটফর্মে আসার পর যাত্রীরা হুমড়ি খেয়ে ট্রেনের ছাদে উঠতে শুরু করেন। পরে পুলিশ এসে যাত্রীদের ছাদ থেকে নামাতে প্রায় ১ ঘণ্টা সময় নেয়। এতে ট্রেনটির যাত্রা আরও বিলম্ব হয়।

ট্রেনের ছাদে ওঠা বন্ধ করতে আগে থেকে স্টেশন কর্তৃপক্ষ কেন ব্যবস্থা নেয়নি এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, উত্তরাঞ্চলের এই ট্রেনগুলোতে ছাদে ওঠা বন্ধ করতে বিমানবন্দর ও জয়দেবপুরে স্টেশনে যাত্রা বিরতি বন্ধ করেছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। তারপরেও যদি যাত্রীরা না মানেন তাহলে দুঃখজনক। একসঙ্গে এতো লোককে নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে রেলওয়ে পুলিশেরও একটি সক্ষমতার বিষয় রয়েছে। আমাদের এখানে ২০-২৫ জন পুলিশ সদস্য আছেন। তাদের দিয়ে এত লোককে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়, যদি সবাই আইন না মানে।

এমএসি/এনএফ