ডিজিটাল বাংলাদেশ রূপকল্পকে আরেক ধাপ এগিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ ২০৪১’ রূপকল্প ঘোষণা করেছে সরকার। এজন্য জনগণের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহারের সুযোগ ও দক্ষতা দুটোই ব্যাপক মাত্রায় বাড়াতে হবে। এর পাশাপাশি অনলাইনে প্রতারণা ও হয়রানির ঝুঁকিগুলোকেও কার্যকরভাবে মোকাবিলা করতে হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। এ অবস্থায় শিশুদের অনলাইনে নিরাপদ থাকা নিয়ে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাক।

বুধবার (৬ জুলাই) রাজধানীর লেকশোর হোটেলে ব্র্যাক আয়োজিত ‘অনলাইনে নিরাপদ থাকি’ শীর্ষক প্রকল্পের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন।

তারা বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে ১২ কোটি ৮০ লাখ মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করছে। শিশুদের মধ্যে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা দ্রুত বেড়ে চলছে। তবে অনলাইনে হয়রানি ও প্রতারণা প্রতিরোধের উপায় সম্পর্কে পর্যাপ্ত জ্ঞান ও সচেতনতার অভাবে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী শিশু-কিশোর ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষ অন্যদের চেয়ে বেশি মাত্রায় অনলাইন হয়রানির ঝুঁকির মধ্যে থাকেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ ওয়েবভিত্তিক প্ল্যাটফর্মগুলো শিশু-কিশোররা যাতে নিরাপদে ব্যবহার করতে পারে সেজন্য এই প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়েছে।

এ প্রকল্পের আওতায় তৃতীয় থেকে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের নিরাপদে ইন্টারনেট ব্যবহারের ওপর প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। বিশ্বখ্যাত গুগল এ প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়নে ব্র্যাককে সহযোগিতা করছে। প্রকল্পের আওতায় ১২৫টি স্কুলের ১৬,৪০০ শিক্ষার্থী ও ৬৪০ জন শিক্ষক অংশগ্রহণ করবেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পিইডিপি৪) ও অতিরিক্ত সচিব দিলীপ কুমার বণিক। উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর পরিচালক এবং যুগ্ম সচিব (প্রশাসন, আর্থিক, বাস্তবায়ন) মো. নুরুজ্জামান শরিফ এনডিসি, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের সদস্য অধ্যাপক ড. রিয়াজুল হাসান বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানটি সভাপতিত্ব করেন ব্র্যাকের শিক্ষা, দক্ষতা উন্নয়ন ও অভিবাসন বিষয়ক পরিচালক সাফি রহমান খান। অনলাইনে অন্যান্যদের মধ্যে দক্ষিণ এশিয়া যুক্ত হন এনসিটিবি-এর চেয়ারম্যান অধ্যাপক মুহাম্মদ ফরহাদুল ইসলাম, গুগলের পাবলিক পলিসি বিষয়ক প্রধান কাইল গার্ডনার, এবং কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) নাজমা আশরাফি।

পিইডিপি৪ অতিরিক্ত মহাপরিচালক দিলীপ কুমার বণিক বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা নিশ্চিত করা খুব সহজ কাজ নয়। শিশুদের নিরাপদ অনলাইন ব্যবহারের দিকে নিয়ে যাওয়া অভিভাবকদের দায়িত্ব। তাই এ বিষয়ে তাদের সচেতন থাকা অত্যন্ত জরুরি।

এনসিটিবি চেয়ারম্যান অধ্যাপক মুহাম্মদ ফরহাদুল ইসলাম বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের ফলে আগামী দিনে সেবার ক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তন আসবে। শিশুদের এর বাইরে রাখা যাবে না। ইন্টারনেটের নেতিবাচক দিক এর নিরাপত্তা ঝুঁকি। এসব বিবেচনায় নিয়ে এনসিটিবি সম্পূর্ণ আলাদা একটি পাঠ্যক্রম যুক্ত করতে যাচ্ছে। ব্র্যাকের এই উদ্যোগে গুগল যুক্ত হয়েছে দেখে আমি আনন্দিত।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) নাজমা আশরাফি বলেন, বাচ্চারা অনলাইন প্রযুক্তিতে বাবা-মায়ের থেকে অগ্রসর হয়ে থাকে। এ বিষয়টি মাথায় রেখে শিশুদের অনলাইন নিরাপত্তা বিষয়ক শিক্ষার ওপর কাজ করতে হবে।

টিআই/এসকেডি