রাজধানীর কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে পেছন থেকে লাইনে ঢোকা নিয়ে নারী টিকিটপ্রত্যাশীদের মধ্যে ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার (৫ জুলাই) সকালে এ ঘটনা ঘটে। তবে সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে পাওয়া গেল ভিন্ন তথ্য।

জানা গেছে, রাজধানীর বেসরকারি একটি হাসপাতালে চাকরি করেন ফারহানা আফরোজ। করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় রাতে ডিউটি থাকে তার। গত দুই দিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দিনাজপুরগামী দ্রুতযান এক্সপ্রেসের টিকিটের জন্য লাইনে দাঁড়ালেও ডিউটির কারণে রাতে থাকতে পারেননি তিনি। তাই তিনি সিরিয়াল নিয়ে চলে যান অফিসে। সকালে টিকিট বিক্রি শুরুর আগে সিরিয়াল অনুযায়ী তিনি লাইনে দাঁড়াতে আসেন। এসময় সামনের নারীরা কিছু না বললেও পেছন থেকে তাকে লাইনে কেউ ঢুকতে দেয়নি। এ নিয়ে টিকিটপ্রত্যাশী এই নারীর সঙ্গে অন্য যাত্রীদের ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়।

কমলাপুরে ঈদযাত্রায় ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রির ১০টি কাউন্টারের মধ্যে একটিতে নারী ও প্রতিবন্ধীরা টিকিট কাটতে পারেন। টিকিট বিক্রি শুরুর দিন থেকেই এ কাউন্টারে দীর্ঘ লাইন দেখা যায়। সিরিয়াল দিতে গিয়ে টিকিটপ্রত্যাশী নারীদের মধ্যে প্রায়ই হাতাহাতি, ধাক্কাধাক্কি লেগে যায়। গতকালও (সোমবার) এমন ঘটনা ঘটেছে বলে জানা যায়।

এ বিষয়ে ফারহানা আফরোজ বলেন, আমি গতকাল (সোমবার) সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত লাইনে ছিলাম। কিন্তু ৮ তারিখের টিকিট পেলাম না। আমার ওয়ার্ডে করোনা রোগী বেড়ে যাওয়ায় রাতে ডিউটি করতে হচ্ছে। এ অবস্থায় গতকাল এক সহকর্মীকে দায়িত্ব দিয়ে আমি রাতে ডিউটিতে চলে যাই। ছুটি নিয়ে আজ সকাল ৬টায় টিকিট ছাড়ার আগেই কাউন্টারে চলে আসি। আমার সিরিয়াল ছিল, সামনে যারা ছিল তারা দিতে চাইলেও পেছন থেকে কেউই সিরিয়াল দিতে চাইছিল না। এখানে পুলিশ ও আনসার ভিডিপির যারা দায়িত্বে ছিল তারা বিষয়টি জানে। সামনে যিনি ছিলেন তিনি আমাকে ঢোকানোর চেষ্টা করছিলেন কিন্তু পেছন থেকে না দেওয়ায় এখানে ধাক্কাধাক্কি শুরু হয় এবং আমি বের হয়ে আসি।

ফারহানা বলেন, আমি স্বাস্থ্য খাতে কাজ করছি। জনগণের জন্যই এই করোনা পরিস্থিতিতে কাজ করছি। অনেকেই মনে করবে সিরিয়াল ভঙ্গ করে প্রবেশ করছি। অথচ সিরিয়ালে থেকেও ঢুকতে পারছি না। আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে আহ্বান জানাই তিনি যেন আমাদের এই বিষয়টি সুষ্ঠুভাবে বিবেচনা করার জন্য রেল যোগাযোগটা আরেকটু উন্নত করেন।

ওই লাইনে দাঁড়ানো মেঘ নামের এক নারী বলেন, আমরা সারারাত লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলাম। সে (ফারহানা) এখন বলছে গতকাল থেকেই লাইনে ছিল। টিকিট পাওয়া নিয়ে সবাই অনিশ্চয়তায়। তাই তাকে লাইনে ঢুকতে দেইনি।

এ বিষয়ে কথা হয় যুথী আক্তার নামের এক পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে। তিনি বলেন, গতকাল (সোমবার) সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ওই নারী লাইনে দাঁড়িয়ে ছিল। পরে যারা সিরিয়াল মেনটেইন করে তাদের সঙ্গে কথা বলেই সে রাতে ডিউটিতে চলে যায়। আজ সকালে টিকিট ছাড়ার আগে যখন সিরিয়ালে দাঁড়াতে এসেছিল কেউ তাকে পেছন থেকে ঢুকতে দিচ্ছিল না। আমরা কিছু বলতে গিয়েও বলতে পারিনি। কারণ যাত্রীরা পাশ থেকে হট্টগোল শুরু করে দিয়েছে।

এএজে/এসএসএইচ