শনিবার টিকিট পেতে ২০ ঘণ্টা আগেই লাইন, অপেক্ষা ৩৭ ঘণ্টার
ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে ট্রেনের টিকিট বিক্রি দ্বিতীয় দিনের মতো শুরু হবে শনিবার (২ জুলাই) সকাল ৮টায়। এদিন মিলবে ৬ জুলাইয়ের টিকিট। শনিবার কাউন্টার থেকে টিকিট বিক্রি শুরুর ২০ ঘণ্টা আগেই শুক্রবার দুপুর ১২টা থেকে লাইন ধরেছেন টিকিট প্রত্যাশীরা।
আবার তাদের অনেকে লাইনে আছেন বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টা থেকে। মূলত তারা শুক্রবার টিকিট পেতে লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন। কিন্তু তাদের আগে কাউন্টারের সামনে লাইনে ২০/২৫ জন বাকি থাকতে শুক্রবার দুপুর ১২টার আগেই টিকিট শেষ হয়ে যায়।
বিজ্ঞাপন
এ কারণে বৃহস্পতিবার এসে দীর্ঘ অপেক্ষা শেষে শুক্রবার টিকিট না পেয়ে, বাসায় না ফিরে শনিবারের লাইনে অপেক্ষা করছেন তারা। সব মিলিয়ে তাদের অপেক্ষা ৩৭ ঘণ্টার।
শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর কমলাপুর প্রধান স্টেশনের কাউন্টারের সামনে লাইনে অপেক্ষারত টিকিট প্রত্যাশীদের সঙ্গে কথা বলে এসব জানা গেছে।
১৬ নম্বর কাউন্টারের সামনে গিয়ে দেখা যায় কয়েকজন বসে আছেন। তাদের মধ্য থেকে মোহাম্মদ পলাশ নামে এক টিকিট প্রত্যাশী ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি দ্রুতযান এক্সপ্রেসে দিনাজপুর যাব। গতকাল সন্ধ্যা ৭টায় আমি এখানে এসেছি। আজ যখন টিকিট শেষ হয়ে গেছে, তখনও লাইনে ২০-২৫ জন ছিলেন। যখন রাতে এসে সিরিয়ালে ছিলাম তখন প্রায় ১৫০ জন আমার সামনে ছিলেন। ৫ তারিখের টিকিট তো পাইনি, এখন ৬ তারিখের টিকিটের জন্য বসছি। বাকিটা আল্লাহর ইচ্ছা।
আরেক টিকিট প্রত্যাশী শোয়েব ঢাকা পোস্টকে বলেন, দিনাজপুরের বিরামপুর যাব দ্রুতযান এক্সপ্রেসে। আমি ভোর ৪টায় এসেছি। অনেক পেছনে ছিলাম। কাউন্টার পর্যন্ত আসতে আসতে টিকিট শেষ হয়ে গেছে। এখন বাকিদের সঙ্গে আগামীকালের টিকিটের জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে আছি। এখন কাউন্টারের কাছাকাছি আছি।
তিনি আরও বলেন, এখানে খাওয়া-দাওয়া ও ঘুম অল্টারনেটিভভাবে করতে হবে। আমার সামনে পেছনের ভাই খেতে গেলে আমি লাইনে থাকব। আবার আমি খেতে গেলে তারা আমার লাইনটা রাখবেন, এভাবেই চলবে।
শুধু পলাশ ও শোয়েব নয়, কাউন্টারগুলোর সামনে কয়েকশ টিকিট প্রত্যাশী ৬ জুলাইয়ের টিকিটের জন্য অপেক্ষা করছেন। তাদের একটাই সংকল্প- যে করেই হোক, বাড়ি যাওয়ার জন্য ট্রেনের টিকিট লাগবেই লাগবে।
৩ জুলাই দেওয়া হবে ৭ জুলাইয়ের টিকিট, ৪ জুলাই দেওয়া হবে ৮ জুলাইয়ের টিকিট এবং ৫ জুলাই দেওয়া হবে ৯ জুলাইয়ের ট্রেনের টিকিট। ফিরতি টিকিট বিক্রি শুরু হবে ৭ জুলাই থেকে। সেদিন ১১ জুলাইয়ের টিকিট বিক্রি হবে।
৮ জুলাই ১২ জুলাইয়ের টিকিট, ৯ জুলাই দেওয়া হবে ১৩ জুলাইয়ের টিকিট, ১১ জুলাই ১৪ এবং ১৫ জুলাইয়ের ফিরতি টিকিট বিক্রি হবে। এর মধ্যে ঈদের পর দিন ১১ জুলাই সীমিত কয়েকটি আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল করবে। তবে ১২ জুলাই থেকে সব ট্রেন চলবে।
কমলাপুরের প্রধান স্টেশন থেকে শুধুমাত্র উত্তরাঞ্চলগামী আন্তঃনগর ও বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম (পঞ্চগড়) ঈদ স্পেশাল ট্রেনের টিকিট বিক্রি হচ্ছে এবং কমলাপুর শহরতলী প্লাটফর্ম থেকে রাজশাহী ও খুলনাগামী সব আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট হচ্ছে।
তেজগাঁও স্টেশন থেকে ময়মনসিংহ, জামালপুর, দেওয়ানগঞ্জগামী সব আন্তঃনগর ট্রেন এবং দেওয়ানগঞ্জ ঈদ স্পেশাল ট্রেনের টিকিট, ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন থেকে মোহনগঞ্জগামী মোহন ও হাওর এক্সপ্রেস ট্রেনের টিকিট, বিমানবন্দর স্টেশন থেকে চট্টগ্রাম ও নোয়াখালীগামী সব আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট, ফুলবাড়িয়া (পুরাতন রেলওয়ে স্টেশন) থেকে সিলেট ও কিশোরগঞ্জগামী সব আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট এবং জয়দেবপুর রেল স্টেশন থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম (পঞ্চগড়) ঈদ স্পেশাল ট্রেনের টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে।
এমএইচএন/আরএইচ