চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেছেন,  পবিত্র ঈদুল আজহার দিন চট্টগ্রাম নগরীকে ৮ ঘণ্টার মধ্যে পরিচ্ছন্ন করার ব্যাপারে সার্বিক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

আজ (মঙ্গলবার) আন্দরকিল্লা পুরাতন নগর ভবনের কে বি আবদুচ ছাত্তার মিলনায়তনে চসিকের ৬ষ্ঠ পরিষদের ১৭তম সাধারণ সভায় সভাপতির বক্তব্য তিনি একথা বলেন।

পশুর বর্জ্য নিদিষ্ট জায়গায় রাখার সুবিধার্থে ১ লাখ পলি ব্যাগ সরবরাহ করা হবে জানিয়ে মেয়র বলেন, আমরা চাই বিগত বছর কোরবানির বর্জ্য অপসারণে চসিক সারা দেশে যে সুনাম অর্জন করেছে তা থেকে যেন আরও উত্তরণ করতে পারা যায়। 

তিনি বলেন, কোরবানির দিন থেকে আরও তিন দিন যাতে উপজেলা থেকে জবাইকৃত পশুর চামড়া নগরীতে প্রবেশ না করে সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলা হবে। এবার উপজেলা পর্যায়ে চামড়া লবণজাত করে ব্যবস্থা নিতে প্রস্তুতি নেওয়া হবে।

তিনি বলেন, নগরীতে ইমারত বা টাওয়ার নির্মাণ করতে গেলে যে প্লান অনুমোদন দেওয়া হবে তাতে সিটি করপোরেশন থেকে ছাড়পত্র নেওয়ার বাধ্যবাধকতা থাকতে হবে। তা না হলে নগরীর জলাবদ্ধতাসহ অন্যান্য যে সমস্যার সৃষ্টি হয় তা নিরসন সম্ভব হবে না। 

তিনি বলেন, নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসন ও উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বারইপাড়া খাল খনন প্রকল্পের জন্য ১৩৭০ কেটি টাকা এবং নগরীর সামগ্রীক সড়ক ও যোগাযোগ উন্নয়নে ২৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছেন, তা সঠিকভাবে কাজে লাগাতে হবে। ২৫০০ কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে কাউন্সিলরদের কাছ থেকে কাজের তালিকা সংগ্রহ করে এবং তাদের মতামতকে অগ্রাধিকার দিয়ে সততা, জবাবদিহিতা ও কাজের গুনগত মান অক্ষুন্ন রেখে প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে হবে। 

নগরীতে জলাবদ্ধতা নিরসনে মেগা প্রকল্প বহির্ভূত ২১টি খাল চিহ্নিত করে সীমানা নির্ধারণ ও সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য কনসালটেন্ট নিয়োগ প্রক্রিয়া দ্রুততার সাথে সম্পন্ন  করার জন্য প্রধান প্রকৌশলীকে নির্দেশনা দেন মেয়র।  

তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, নগরীতে জলজটের কারণে রাস্তা ও নালা একাকার হয়ে পূর্বে যে প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে তার যেন পুনরাবৃত্তি না হয় সেই জন্য নগরীতে জলাবদ্ধতা নিরসনে মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থাসহ যে সেবা সংস্থাই কাজ করুক না কেন, সে সব জায়গায় নিরাপত্তা বেষ্টনী নির্মাণের দায়িত্ব চসিক প্রকৌশল বিভাগকে নিতে হবে। ভবিষ্যতে প্রাণহানির মত দুর্ঘটনা যাতে না হয় সে ব্যাপারে সজাগ দৃষ্টি রাখতে প্রধান প্রকৌশলীকে নির্দেশ দেন মেয়র। 

রেজাউল করিম বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসনে স্বল্প মেয়াদি ব্যবস্থা হিসেবে ক্র্যাশ প্রোগ্রামের যে কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে, তার আওতায় নগরীর প্রতিটি ওয়ার্ডের নালা নর্দমার মাটি উত্তোলন, পানি প্রবাহ বৃদ্ধি করার জন্য পুরোদমে কাজ অব্যাহত রয়েছে। এই কার্যক্রমের অংশ হিসেবে আজ নগরীর ১৮টি ওয়ার্ডে একযোগে চসিকের বিশেষ দলের মাধ্যমে ক্র্যাশ প্রোগ্রাম চলেছে। 

মেয়র বলেন, চট্টগ্রাম নগরীতে টানেল চালু হলে নগরীর গুরুত্ব যেমন বেড়ে যাবে তেমনি যানবাহনের চাপও বৃদ্ধি পাবে। এই বিবেচনায় বর্জ্য ব্যবস্থপনাকে আধুনিকভাবে সাজাতে হবে। সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে যেখানে সেখানে ময়লা-আবর্জনা ফেলার যে সংস্কৃতি অভ্যাসে পরিণত হয়েছে তা দূরীকরণে কঠোর হতে হবে। সে লক্ষ্যে সরকার কর্তৃক প্রণীত ‘কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা আইন ২০২১’ এর মাধ্যমে আইনগত ব্যবস্থা নিতে চসিক বাধ্য হবে। এ জন্য গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি ও মাইকিংয়ের মাধ্যমে প্রতিটি ওয়ার্ডে প্রচার-প্রচারণা চালানো হচ্ছে।  

চসিক ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও সচিব খালেদ মাহমুদের সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন- প্যানেল মেয়র মো. গিয়াস উদ্দিন, আফরোজা কালাম, বর্জ্য ষ্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতি মোবারক আলী প্রমুখ।

কেএম/এনএফ