সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আজ সবার মুখে আনন্দের হাসি। আর বিএনপির মুখে শ্রাবণের আকাশের মেঘ। এত ষড়যন্ত্র, এত কূটচাল, তারপরও শেখ হাসিনা পদ্মা সেতু করে ফেললেন। মির্জা ফখরুলের (বিএনপি মহাসচিব) মন খারাপ, বুকে বড় ব্যথা, বড় বিষের জ্বালা। জ্বালায়-জ্বালায় মরছে তারা।

শনিবার (২৫ জুন) মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার কাঁঠালবাড়িতে আয়োজিত আওয়ামী লীগের বিশাল জনসভায় এসব কথা বলেন তিনি।

ওবায়দুল কাদের বলেন, এ পদ্মার পাড়ে কত ছেলে তার অসুস্থ মাকে নিয়ে অপেক্ষা করেছে। কিন্তু ফেরি আসেনি। পরে মায়ের মৃত লাশ নিয়ে বাড়ি ফিরেছে। পদ্মায় আটকা পড়ে কত ছেলে তার বাবার জানাজায় যেতে পারেনি। অনেকে বলে, পদ্মা সেতুর জন্য এত টাকা, এত টোল, কিন্তু এ এলাকার মানুষ জানে পদ্মা সেতু তাদের কত প্রয়োজন। যারা বিষয়টি জানে না তারা পদ্মা সেতুর গুরুত্ব অনুধাবন করতে পারবে না।

‘আজ পদ্মা সেতুর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী তার নাম যুক্ত করেননি। কিন্তু যত দিন এখানে চন্দ্র-সূর্য উদয় হবে, তত দিন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে স্মরণ করবে। বঙ্গবন্ধুর কথা স্মরণ করে, শেখ হাসিনার মুখের দিকে চেয়ে আপনারা পৈতৃক ফসলি জমি দিয়েছেন। পদ্মার পাড়ের মানুষের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ।’

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, শত বাধা আসলেও প্রধানমন্ত্রী পদ্মা সেতু বানাবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তিনি তার প্রতিশ্রুতি পূর্ণ করেছেন। সেজন্য আপনারা আজ এখানে একত্রিত হয়েছেন।

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় যোগাযোগ অবকাঠামো পদ্মা সেতুর উদ্বোধন উপলক্ষে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে কাঁঠালবাড়িতে বিশাল জনসভার আয়োজন করা হয়। এর আগে সেতুর মাওয়া প্রান্তে টোল পরিশোধ শেষে উদ্বোধনী ফলক ও ম্যুরাল-১ উন্মোচনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী পদ্মা সেতু উদ্বোধন করেন। এরপর তিনি জাজিরা প্রান্তে পৌঁছে সেতু ও ম্যুরাল-২ এর উদ্বোধনী ফলক উন্মোচন করেন।

কাঁঠালবাড়ির সভাস্থলটি ১১টি পিলারের ওপর ১০টি স্প্যানবিশিষ্ট একটি প্রতীকী অস্থায়ী পদ্মা সেতু নির্মাণের মাধ্যমে জমকালোভাবে সাজানো হয়েছে। প্রতীকী সেতুর সামনে উদ্বোধনী মঞ্চ স্থাপন করা হয়েছে। অস্থায়ী সেতুটি ২০০ ফুট লম্বা ও ৮ ফুট চওড়া। মঞ্চটি ১৫ ফুট লম্বা এবং ৪০ ফুট চওড়া। মঞ্চের সামনে একটি ৬০ ফুট লম্বা বিশালাকার নৌকা পানিতে ভাসছে। এ ছাড়া সেখানে বেশ কিছু ছোট নৌকাও রয়েছে। প্রায় ১৫ একর জায়গার ওপর ভেন্যু প্রস্তুত করা হয়েছে।

শনিবার ভোর থেকেই দেশের দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ আসতে শুরু করে সভাস্থলে। খুলনা, বাগেরহাট, যশোর, সাতক্ষীরা, নড়াইল, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাইদহ, মাগুরা, বরিশাল, পিরোজপুর, ভোলা, পটুয়াখালী, বরগুনা, ঝালকাঠি, গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর, মাদারীপুর, শরীয়তপুর ও রাজবাড়ী থেকে বাস ও লঞ্চযোগে জনসভাস্থলে আসেন লাখো মানুষ।

এমএইচএন/এসএম